নাটোর-৪ আসনে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দুই শতাধিক ভ্যান ভাড়া করে নৌকার প্রচার চালানো হয়। আর প্রচার শেষে ভাড়া হিসেবে ভ্যান চালকদের হাতে একশ’ টাকা ধরিয়ে দেয়া হয়। এ সময় ভাড়া কম দেয়ার উল্লেখ করে প্রতিবাদে নাটোর-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করেন ক্ষুব্ধ চালকরা।
ভ্যানচালকদের অবরোধে মহাসড়কে যানজট দেখা দেয়। দু’পাশে বিপুলসংখ্যক গাড়ি আটকা পড়ে যায়। আধ ঘণ্টা পর ভ্যানপ্রতি ৩০০ টাকা ভাড়া দেয়ার আশ্বাস পেয়ে চালকরা অবরোধ তুলে নেন। ঘটনাটি ঘটেছে নাটোরের বড়াইগ্রামের বনপাড়া কালিকাপুর এলাকায়।
অবরোধের ফলে যানজটে আটকা পড়ে ভোগান্তির শিকার হন যাত্রীরা।
জানা যায়, নৌকার প্রার্থী ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর সমর্থনে দুই শতাধিক চালক নিজ নিজ ভ্যান নিয়ে দিনব্যাপী শো-ডাউন করেন। তাদের সঙ্গে চুক্তি ছিল যে ভ্যানপ্রতি ৫০০ টাকা ভাড়া দেয়া হবে। কিন্তু দিন শেষে প্রার্থীর মালিকানাধীন এস আর পাটোয়ারী এডুকেয়ার বিদ্যালয়ে জমায়েত হলে সেখানে দায়িত্বে থাকা সমন্বয়কারী বনপাড়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর লুৎফর রহমান তাদের হাতে ১০০ টাকা করে ধরিয়ে দেন।
ভ্যানচালকরা এর প্রতিবাদ করলে এক চালককে চর-থাপ্পড় মারেন কাউন্সিলর। এতে ভ্যানচালকরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলে পরিস্থিতি সামলাতে বিদ্যালয়ের কলাপসিবল গেট আটকে দেন নৌকার নেতা-কর্মীরা। পরে বিদ্যালয় গেটে এসে জড়ো হয়ে কিছুক্ষণের জন্য মহাসড়ক অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধ ভ্যানচালকরা।
জোয়াড়ি ইউনিয়নের বাহিমালী গ্রামের জাভেদসহ বেশ কয়েকজন ভ্যানচালক বলেন, ‘শর্তমতে আমরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভ্যান নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নৌকার শো-ডাউন করি। দুপুরে কেউ খাবারও দেয়নি। সন্ধ্যায় যখন ১০০ টাকা দেয় তখন মন খারাপ হয়। এর প্রতিবাদ করলে একজনকে কাউন্সিলর লুৎফর মারধর করেন।
‘আমরা গরিব মানুষ। আমাদের সঙ্গে এমন অমানবিক আচরণ কেন করবে? আমাদের অধিকাংশই এই টাকা নিয়ে বাজার করে পরিবারকে খাওয়াবে। আমরা ওই কাউন্সিলরের বিচার চাই।’
অভিযুক্ত কাউন্সিলর লুৎফর রহমান বলেন, ‘টাকা দেয়ার সময় বাইরের একজন ছবি তুলছিল। তাকে মারতে উদ্যত হওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।’
বনপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ সিরাজুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।