আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন আসনের পরিবেশ বিবেচনা করে গুরুত্বপূর্ণ ও কম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র চিহ্নিত করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় পাঁচ হাজার ৪৩২টি কেন্দ্রের মধ্যে প্রায় ৫৭ শতাংশ কেন্দ্রই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বা অধিক গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় আসন রয়েছে ৩৯টি। যেখানে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন ২৪৩ জন প্রার্থী।
পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আনিসুর রহমান জানান, পাঁচ হাজার ৪৩২টি কেন্দ্রের মধ্যে অতি গুরুত্বপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে তিন হাজার ১১৯টি। রাজশাহী জেলায় ৭৭০টি কেন্দ্রের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ৩১০টি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৫১২টি কেন্দ্রের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ৩২৫টি। নওগাঁ জেলায় ৭৭৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ৪১৪টি। নাটোর জেলায় ৫৬৬টি কেন্দ্রের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ২৪৫টি। পাবনা জেলায় ৭০১টি কেন্দ্রের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ৪৯৬টি। সিরাজগঞ্জ জেলায় ৮৯২টি কেন্দ্রের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ৪৬৬টি। বগুড়া জেলায় ৯৬৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ৬৬২টি। জয়পুরহাট জেলায় ২৫৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ১৮৯টি।
ডিআইজি বলেন, ‘রাজশাহী বিভাগে ৩৯টি আসন রয়েছে। একটি সদরে বাকি ৩৮টি রেঞ্জের মধ্যে রয়েছে। এই আসনগুলোতে যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি কেউ ঘটাতে না পারে সে জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বোত্তম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। কেউ বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে কোনো ছাড় দেয়া হবে না বলে জানান তিনি।
প্রার্থীরা বলছেন, এরই মধ্যে ভোট কেন্দ্রসহ ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়টি প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণে সব প্রস্ততি নেয়া হয়েছে।
রাজশাহী সদর আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিুকর রহমান বাদশা বলেন, ‘যারা নির্বাচন বর্জন করেছে তাদের এই শক্তি নেই যে তারা ভোট বন্ধ করতে পারবে। তবে তারা ভোটের আগের দিন আতঙ্ক সৃষ্টি করতে পারে।’
রাজশাহী-৩ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘আমার নির্বাচনি এলাকার চরাঞ্চলে যে কেন্দ্রগুলো রয়েছে সেগুলো দুর্গম এলাকা। সেখানে যে ভোট কেন্দ্রগুলো আছে, সেগুলো কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ। আমি নির্বাচনি সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছি। আমাদের সবার প্রত্যাশা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ হোক। সাধারণ মানুষও এই নিশ্চয়তা চাচ্ছেন।’
রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা করতে দেয়া হবে না। এখন দিন যত যাবে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোরতা আরও বাড়বে।’
রাজশাহী সদর আসনের জাসদের প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মাসুদ সিদ্দিকী শিবলী বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত যেহেতু নির্বাচনে আসেনি। সে দিক থেকে নাশতকার শঙ্কা থেকেই যায়। একটা ঝুঁকি তো আছেই।’
রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ কোটি ৫৪ লাখ ৬০ হাজার ৩৩২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭৭ লাখ ৪৩ হাজার ৯৫ জন, নারী ভোটার ৭৭ লাখ ১২ হাজার ৭০৪ জন ।