আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আদালত দণ্ড দিয়েছে। এ নিয়ে দেশ-বিদেশে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা আছে এবং সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা হচ্ছে। এখানে সরকার কোনো পক্ষ নয়, মামলাও করেনি; মামলা করেছে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীরা। সেই মামলায় শাস্তি হয়েছে।’
মঙ্গলবার চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানজী পুকুর লেনে ওয়াইএনটি সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। সূত্র: বাসস
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গ্রামীণ টেলিকমের আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে যে, লাভের ৫ শতাংশ তার কর্মচারীদের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হবে। এ যাবৎ কখনও তা দেয়া হয়নি। এটি না দেয়ায় শ্রম আইনে মামলা করেছে শ্রমিক-কর্মচারীরা।’
মন্ত্রী বলেন, ‘গ্রামীণ টেলিকমের পক্ষ থেকে দুজন শ্রমিক নেতাকে ম্যানেজ করার চেষ্টা হয়েছিল এবং তাদেরকে তিন কোটি করে ছয় কোটি টাকা ঘুষ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সাধারণ শ্রমিকরা টাকা না পাওয়ায় মামলা করেছে। সুতরাং এখানে স্পষ্টত একটি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে এবং সে কারণেই মামলা হয়েছে, শাস্তিও হয়েছে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘পৃথিবীতে বহু নোবেল লরিয়েটের বিরুদ্ধে দেশে দেশে মামলা হয়েছে, অনেকে শাস্তি ভোগ করেছেন, কারাগারেও ছিলেন। যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, পুরস্কারের অর্থ কে কত পাবেন তা নিয়েও নোবেল লরিয়েটরা একে অপরের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশে আদালত স্বাধীন, স্বাধীনভাবেই কাজ করেছে।’
তিনি বলেন, “নোবেল শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত দেশের একজন জ্যেষ্ঠ নাগরিক ড. ইউনূসের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, যদিও বা নোবেল শান্তি পুরস্কার নিয়ে বহু প্রশ্ন আছে। গাজায় ‘কবরে শান্তি স্থাপন’ করার জন্য কখন যে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দিয়ে দেয়, সেটিও অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
“প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরপর বারাক ওবামাকে যখন নোবেল শান্তি পুরস্কার দেয়া হলো, তিনি অবাক হয়ে গেলেন! বললেন, আমাকে কেন দেয়া হলো। মালালাকে ১৪ বছর বয়সে শান্তি পুরস্কার দেয়া হয়েছে। কোন সময় যে ১০ বছরের কাউকে দিয়ে দেয় তা নিয়েও অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। যাই হোক তিনি একজন জ্যেষ্ঠ নাগরিক, আমি তাকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করি।”
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ডেভিড বার্গম্যান বাংলাদেশের রাজনীতি-নির্বাচন নিয়ে একটি নিবন্ধ লিখেছেন। তিনি ড. কামাল হোসেনের মেয়ের জামাই এবং একজন ইহুদি, যে ইহুদিরা ফিলিস্তিনে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত করছে। ডেভিড বার্গম্যানকে একটু জিজ্ঞেস করেন, এ নিয়ে তার কী বক্তব্য। এ নিয়ে তিনি যদি একটি নিবন্ধ লিখতেন তাহলে আমরা তার অবস্থানটা জানতে পারতাম।’
‘ড. ইউনূসকে কখনও শহীদ মিনার কিংবা স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে দেখা যায় না। তিনি কার প্রতিনিধিত্ব করেন?- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি এককভাবে কারও নাম বলছি না। আমাদের দেশে কিছু লোক আছে যারা দেশের প্রতিনিধিত্ব করে না, বিদেশিদের প্রতিনিধিত্ব করে। তারা মিশনে মিশনে পার্টিতে যায়, আবার বিভিন্ন দেশের সংস্থা থেকে অর্থ পায়। তারা তাদের প্রতিনিধিত্ব করে।
‘দুর্ভাগ্য হচ্ছে, আমরা তাদের বক্তব্যগুলো ভালো করে প্রচার করি। এটা না দিলে কিন্তু তাদের বাজার মূল্যটা কমে যেত। আমরাই বাজার মূল্যটা বাড়িয়ে দেই।’