দলের নেতা-কর্মী ও ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানোর ঘটনায় আদালতে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবদুল ওয়াদুদ দারা।
সোমবার বিকেলে দারা ওই আসনের নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ লুনা ফেরদৌসের আদালতে হাজির হয়ে লিখিতভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
দারার প্রধান নির্বাচনি এজেন্ট আইনজীবী আব্দুস সামাদ মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
লিখিত জবাবে নৌকার প্রার্থী দারা বলেন, ‘রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ওবায়দুর রহমান যে অভিযোগ করেছেন তা বিদ্বেষ প্রসূত বটে। আমি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আমার দলের নেতা-কর্মী যারা দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মে লিপ্ত আছেন তাদের বিষয়ে আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে কী ধরনের নির্দেশনা আছে তা স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলাম। কোনো ভোটারকে ভয়ভীতি বা স্বতন্ত্র প্রার্থীকে অপদস্ত করার উদ্দেশ্যে কখনো কোনো অশালীন, অশোভনীয় বা উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান করিনি। তারপরেও আমার বক্তব্য নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন হলে আমি দুঃখ প্রকাশ ও নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’
দারার প্রধান নির্বাচনি এজেন্ট আব্দুস সামাদ জানিয়েছেন, আদালত দারার বক্তব্যে সন্তুষ্ট হয়ে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়। তবে আগামীতে যাতে কোনোভাবেই আচরণবিধি ভঙ্গ না হয়, সে বিষয়েও সর্তক থাকার নির্দেশ দিয়েছে।
এর আগে, ওবায়দুরের অভিযোগ আমলে নিয়ে গত ৩০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আবদুল ওয়াদুদ দারাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন ওই আসনের নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ লুনা ফেরদৌস।
ওই নোটিশে নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে কেন দোষী সাব্যস্ত করা হবে না তা জানাতে দারাকে সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
নোটিশে বলা হয়েছিল, ‘‘আবদুল ওয়াদুদ দারা নির্বাচনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তার কর্মীদের উদ্দেশে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকিমূলক বক্তব্য দিয়ে বেড়াচ্ছেন। যার একটি ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে- দারা স্বতন্ত্র প্রার্থীর ঈগল প্রতীককে ব্যঙ্গ করে কাউয়া ও বাদুড় উল্লেখ করে বলেছেন, কাউয়া ও বাদুড়কে আর মাটিতে নামতে দেয়া হবে না। যারা কাউয়া আর বাদুড়কে সমর্থন করবে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমি নিজেই জেলার সাধারণ সম্পাদক। কাজেই থানা কিংবা উপজেলা আওয়ামী লীগের পদে থাকা নেতাদের এক খোঁচাতেই পদ থেকে সরিয়ে দিতে পারব।’’
নোটিশে আরও বলা হয়েছিল, ‘ভিডিওতে দারাকে আরও বলতে শোনা যায়, দলীয় গঠনতন্ত্র মোতাবেক শৃঙ্খলাভঙ্গকারী নেতাদের বিরুদ্ধে আমি ব্যবস্থা নিতে পারব। এজন্য আমার কাউকে লাগবে না। ৩০ ডিসেম্বর তাদের শেষ দিন। এর মধ্যে নাকে খত দিয়ে নৌকার ছায়াতলে না এলে তাদের চিরতরের জন্য নৌকা থেকে নামিয়ে দেয়া হবে।’