নওগাঁয় নির্বাচনি প্রচার শেষে বাড়ি ফেরার পথে নওগাঁ-৫ (সদর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থককে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে।
শহরের বটতলী মোড় এলাকায় শনিবার রাতে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আহত রেজাউল ইসলাম ওরফে রেঞ্জা এ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান ছেকার আহমেদ শিষাণের সমর্থক ও কর্মী। তিনি নওগাঁ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পার-নওগাঁ এলাকার বাসিন্দা ও পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক।
এই আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নিজাম উদ্দিন জলিল (জন)। আর নওগাঁ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান ছেকার আহমেদ শিষাণ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ট্রাক প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর অনুসারী ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাতে দেওয়ান ছেকার আহমেদ শিষাণের ট্রাক প্রতীকের নির্বাচনি প্রচার শেষে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন রেঞ্জা। পথে রাত ৯টার দিকে বটতলী মোড় এলাকায় পৌঁছালে তার ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে অতর্কিত হামলা করা হয়।
স্থানীয়রা রেঞ্জাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে।
সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসক ফজলুল হক নয়ন বলেন, ‘গুরুতর জখম অবস্থায় রেঞ্জা নামের এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলেন কয়েকজন যুবক। তার ডান পায়ে হাটুর একটু ওপরে অস্ত্র দিয়ে কোপানোর গভীর ক্ষত ছিল। এ ছাড়া ডান হাতের কবজির নিচে এবং মাঝখানের আঙুলের ওপরে কোপ দেয়া হয়েছে। এতে তার হাতের একটু রগ কেটে গিয়েছে।’
ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও নওগাঁ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দেয়ান ছেকার আহমেদ শিষাণের অভিযোগ, নৌকার প্রার্থীর অনুসারী নেতা-কর্মীরা রেঞ্জার ওপর হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করা হবে। কয়েক দিন আগে নৌকার প্রার্থীর অনুসারী এক নেতা শিষাণের কর্মী চন্ডিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসলাম হোসেনকে প্রাণনাশের হুমকি দেন।
অভিযোগের বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিজাম উদ্দিনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত নওগাঁ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুবুল হক কমল বলেন, ‘আমাদের কোনো নেতা-কর্মী কারোর ওপর হামলা করেনি। তাদের অভিযোগের সত্যতা কতটুকু সেটা তদন্তসাপেক্ষে বলা যাবে। এ ধরনের হামলার ঘটনা নিন্দনীয়।’
নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি জাহিদুল হক বলেন, ‘হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।’
পুলিশের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রচার শুরুর পর থেকে এ নিয়ে নওগাঁয় ছয়টি সশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া প্রতিপক্ষের হাতে নওগাঁর বিভিন্ন সংসদীয় এলাকায় পক্ষ-প্রতিপক্ষের নির্বাচনি অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অন্তত ১২টি ঘটনা ঘটেছে।