ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান বলেছেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে ঘোষিত ইশতেহার একটি সামগ্রিক ইশতেহার। এই ইশতেহার নিঃসন্দেহে আমাদের উন্নয়ন পরম্পরার গল্প। এই ইশতেহার প্রমাণ করে যে, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা কোনো চ্যালেঞ্জকে ভয় পান না।’
‘সব বাধা অতিক্রম করে শেখ হাসিনার জাদুকরী নেতৃত্বের ফসল আজকের এই বিশ্ব অবাক করা বাংলাদেশ। ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে, তার নির্দেশ এবং তা সমাধানের কর্মকৌশলও রয়েছে এই ইশতেহারে। প্রযুক্তির ওপর জোর দিয়ে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এই ইশতেহার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
জাতীয় প্রেসক্লাবে শনিবার আয়োজিত ‘আওয়ামী লীগের ইশতেহার- স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সমন্বয়ে গঠিত গবেষণাভিত্তিক সংগঠন এডুকেশন, রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ইআরডিএফবি)।
সেমিনারে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামলে দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরের মূল নায়ক শেখ হাসিনা। তার দীর্ঘ ১৫ বছরের কঠোর পরিশ্রমের ফল আজকের এই ডিজিটাল বাংলাদেশ।’
ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, ‘এবারের লক্ষ্য ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। সে লক্ষ্যেই নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। আমাদের উচিত আসন্ন নির্বাচনে বিপুল ভোটে আওয়ামী লীগকে পুনরায় নির্বাচিত করে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে শেখ হাসিনাকে সহায়তা করা।’
সেমিনারের শুরুতে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য ও ইআরডিএফবির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারটি হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান এবং প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ হাফিজুর রহমান (কার্জন)।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কিউ এম মাহবুব, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম এবং চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাছিম আখতার।
অধ্যাপক ড. শেখ হাফিজুর রহমান (কার্জন) বলেন, ‘শেখ হাসিনার গত ১৫ বছরের কঠোর পরিশ্রমের ফসল আজকের এই বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক খাতে বাংলাদেশের যে অর্জন, তা অভূতপূর্ব। শেখ হাসিনার জাদুকরী নেতৃত্বে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, বাজেটের আকার বৃদ্ধি, শিক্ষার হার বৃদ্ধি, দারিদ্র্যের হার হ্রাস, গড় আয়ু বৃদ্ধি, মেয়েদের ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি, শিশু এবং মাতৃমৃত্যু হার হ্রাস ইত্যাদির মাধ্যমে দরিদ্র বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করা হয়।’
‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের এই নির্বাচনী ইশতেহার ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট নাগরিক ও স্মার্ট সমাজ- এই চারটি পিলারের সমন্বয়ে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার বাংলাদেশের তরুণ সমাজকে শিক্ষাদীক্ষা, জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ করে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে আধুনিক এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আমাদের তরুণ সমাজকে সঙ্গে নিয়ে যে নতুন যুগের, তথ্য-প্রযুক্তির যুগের, শান্তির যুগের, স্যাটেলাইট এবং পারমাণবিক শক্তির যুগের, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল এবং টানেলের যুগের শুরু করেছেন তার ধারাবাহিকতা রক্ষার মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের দায়িত্ব আমাদের এই তরুণ সমাজের।’
তিনি বলেন, ‘আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে আমাদের এই তরুণ সমাজ ভোটের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে নির্বাচিত করে ইশতেহারে ঘোষিত পরিকল্পনাসমূহ বাস্তবায়নের মাধ্যমে শেখ হাসিনার স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ তথা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’