বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জেলা-উপজেলা নেতাদের ঠাঁই হলো না শেখ হাসিনার জনসভায়

  • প্রতিনিধি, মাদারীপুর   
  • ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৮:১৩

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল এক নেতা বলেন, ‘নামের প্রস্তাব পাঠানো এসব নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমকে সমর্থন করায় আবদুস সোবহান গোলাপ চান না তারা কেউ প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় থাকুক। তাই তিনি (গোলাপ) বিরোধিতা করায় সবার যাওয়ার ইচ্ছে থাকার পরও তা আর হয়ে ওঠেনি।’

শনিবার বিকেলে মাদারীপুরের কালকিনিতে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত নির্বাচনি জনসভায় ভাষণ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলীয় আয়োজন হলেও মঞ্চ তো দূরের কথা, জনসভায়ই ঠাঁই হয়নি স্থানীয় উপজেলা, এমনকি জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের। মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ উল্লেখযোগ্য নেতাদের দেখা যায়নি জনসভার মঞ্চ ও এর আশপাশে।

জনসভায় অংশগ্রহণ করার কথা থাকলেও মাদারীপুর-৩ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আবদুস সোবহান গোলাপের আপত্তি থাকায় তাদের প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানেই যাওয়া হয়নি বলে অভিযোগ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের।

আক্ষেপ করে মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আমরা মাদারীপুরে স্বাগত জানাই। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও তার জনসভায় আমাদের যাওয়া হলো না। মনে দুঃখ থেকে গেল।’

তিনি জানান, ‘প্রধানমন্ত্রীর জনসভার আগে কালকিনিতে একটি বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম অংশগ্রহণ করেন। তিনি আমাদের কাছে নামের প্রস্তাব চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ১১ জন নেতার নাম উল্লেখ করে প্রস্তাব পাঠানো হয়।

কিন্তু গোলাপের অনিচ্ছায় তাদের সে আশা ভঙ্গ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মির্জা আজম আমাদের জানান, আবদুস সোবহান গোলাপ চান না যে আমরা প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যাই। তাই আমাদের ডিউটি পাসও হয়নি। আমাদের প্রসঙ্গে তার আপত্তি কেন- সেটা তিনিই ভালো জানেন। এ বিষয়ে আর কিছু বলতে চাই না।’

দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনি জনসভা উপলক্ষে গত সোমবার কালকিনি পৌরসভা মাঠে এক বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগ ছাড়াও মাদারীপুর-২ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, মাদারীপুর-৩ আসনের প্রার্থী আবদুস সোবহানসহ জেলার অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। সভায় প্রধানমন্ত্রীর জনসভা মঞ্চে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ জেলার জ্যেষ্ঠ আরও কয়েকজন নেতার নাম রাখা হয়। কিন্তু তাদের বিষয়ে আবদুস সোবহান আপত্তি জানালে জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, জেলা ছাত্রলীগসহ অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের সব নেতারই প্রধানমন্ত্রী জনসভায় যাওয়ার পথ আটকে যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল এক নেতা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী জনসভায় থাকার জন্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১১ নেতার নাম পাঠানো হয়। তারা হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা, সহ-সভাপতি সিরাজুল হক ফরাজি, সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালিদ হোসেন ইয়াদ, সাংগঠনিক সম্পাদক পাভেলুর রহমান খান, যুবলীগের সভাপতি আতাহার সরদার, সাধারণ সম্পাদক রুবেল খান, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মিরাজ হোসেন খান, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হাসান এবং সাধারণ সম্পাদক বায়েজিদ হাওলাদার।’

ওই নেতা বলেন, ‘নামের প্রস্তাব পাঠানো এসব নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমকে সমর্থন করায় আবদুস সোবহান গোলাপ চান না তারা কেউ প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় থাকুক। তাই তিনি (গোলাপ) বিরোধিতা করায় সবার যাওয়ার ইচ্ছে থাকার পরও তা আর হয়ে ওঠেনি।’

জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ ফরাজি বলেন, ‘স্থানীয় এমপি চান না যে আমরা প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যাই। তাই আমাদের যাওয়ার খুব ইচ্ছে থাকলেও সেটি হলো না। বিষয়টি নিয়ে আমাদের খারাপ লাগলেও পরিস্থিতি মেনে নিতে হচ্ছে।’

কালকিনি, ডাসার ও সদরের পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মাদারীপুর-৩ আসন। এই আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবদুস সোবহান গোলাপ। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সংরক্ষিত নারী আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তাহমিনা বেগম। তিনি আবদুস সোবহানের বিপক্ষে নির্বাচনের অংশ নেয়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, আওলাদ হোসেন, ভবতোষ দত্ত, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সরদার মো. লোকমান হোসেন বাদে বাকি সবাই তাহমিনা বেগমকে সমর্থন দিয়েছেন। এ কারণে কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসংগঠনগুলোর জ্যেষ্ঠ নেতারাও প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় থাকার সুযোগ পাননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুজ্জামান শাহীন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তা ছাড়া স্থানীয় এমপি গোলাপ চান না আমরা ওই অনুষ্ঠানে যাই। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমাকে একবার জানানো পর্যন্ত মনে করেনি তিনি। তাই আমাদের অঙ্গসংগঠনের সিনিয়র কেউ যাচ্ছেন না।’

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে মাদারীপুর-৩ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুস সোবহান গোলাপ মোবাইল ফোনে বলেন, ‘তারা যে কথা বলেছেন, এই কথা সঠিক নয়। ব্যাস, এটুকুই।’

এ বিভাগের আরো খবর