বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভরা মৌসুমে পর্যটকখরা শেরপুরে

অবকাশের গেটের ইজারাদার রানা বলেন, ‘৬০ লাখ টাকায় গেট ইজারা নিছি। এ টাকা মনে হয় এবার লস যাবে।’

প্রতি বছর শীতের আগমনের সঙ্গে পর্যটকের আনাগোনাও বাড়তে থাকে শেরপুরের জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য গারো পাহাড়ের গজনী অবকাশ ও মধুটিলা ইকোপার্কে, কিন্তু প্রতিকূল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে এবার এসব জায়গায় পর্যটকখরা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।

বছরের এ সময়ে দর্শনার্থীরা এসে থাকেন শেরপুরের সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের নৈসর্গিক দৃশ্য অবলোকন করতে। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রাণচাঞ্চল্য থাকে এসব জায়গায়।

ডিসেম্বরের শুরু থেকে সরকারি ও বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানে ছুটি থাকায় মানুষের ঢল নামে গারো পাহাড়ের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে। আর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা ভিড় জমায়, কিন্তু এ বছর ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকেও পর্যটকশূন্য গারো পাহাড়ের পর্যটন কেন্দ্রগুলো।

বিপাকে ব্যবসায়ীরা

দুটি পর্যটন কেন্দ্রের বিভিন্ন রাইড প্রায় দুই কোটি টাকায় ইজারা নিয়েছন অন্তত ৩০ ব্যবসায়ী, যার পুরো টাকা উঠিয়ে লাভের মুখ দেখেন তারা। এ অবস্থা চলতে থাকলে আসল টাকাই উঠবে না বলে শঙ্কায় রয়েছেন তারা।

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে পর্যটন খাতের বড় ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি অনেক ক্ষুদ্র‍ ব্যবসায়ী কাটাচ্ছেন অলস সময়; ভুগছেন হতাশায়।

অবকাশে কাপড় ব্যবসা করা রহমত বলেন, ‘পর্যটনে তো লোক নাই, বেচাবিক্রি নাই। ডিসেম্বর যাইতেছে। এই সময় ব্যবসার সময়, লাভবানের সময়।

‘আমরা অলসতার মধ্যে পড়ে গেছি। পর্যটকরা আসতাছে না। লোকজন একদমই কম।’

আরেক ব্যবসায়ী হারুন বলেন, ‘আমগোরে দিনই চলতাছে না। ধারদেনা কইরে মালটাল তুলছি। বেচাকেনাই নাই। আমরা কেমনে চলমু?’

ইজারাদার ছানোয়ার হোসেন বলেন, ‘ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে। এই সময় স্পটে অনেক দর্শনার্থী আসে। হরতাল-অবরোধের কারণে দর্শনার্থী নাই বললেই চলে। তাই এবার আমরা ইজারার টাকা তুলতে পারব না।’

অবকাশের গেটের ইজারাদার রানা বলেন, ‘৬০ লাখ টাকায় গেট ইজারা নিছি। এ টাকা মনে হয় এবার লস যাবে।

‘হরতাল-অবরোধ কেটে গেলে আসল তুলতে পারতাম। হরতাল-অবরোধের কারণে লোকজন আসছে না।’

নিষ্প্রাণ পর্যটন কেন্দ্রগুলো

দর্শনার্থী না থাকায় প্রাণের উচ্ছ্বাস বিলীন হয়ে গেছে পর্যটন কেন্দ্রে। এ নিয়ে জামালপুর থেকে আসা দর্শনার্থী সাদিয়া বলেন, ‘গারো পাহাড়ের পাদদেশের এ গজনী অঞ্চলটা আসলেই খুবই সুন্দর, চমৎকার একটা পরিবেশ। দেখতে চমৎকার।

‘এর আগে আসছিলাম; অনেক লোকজন ছিল। এবার লোকজন নাই। এ জন্য একটু খারাপ লাগছে।’

শেরপুর শহর থেকে আসা জিহাদ বলেন, ‘আমি পাঁচ-ছয় বছর আগে আসছিলাম আরকি। তখন এইখানে অনেক লোকজন ছিল। তখন খুব ভালো লেগেছে, কিন্তু এ বছর এসেছি; লোকজন নাই। তাই ভালো লাগতাছে না। আসলে পিকনিকে অনেক লোকজন ছাড়া মজা লাগে না।’

জামালপুরের বকশীগঞ্জ থেকে আসা শিহাব বলেন, ‘এই জায়গাটা আসলেও খুবই সুন্দর। এই জায়গাটা আমার খুব ভালো লেগেছে, কিন্তু লোকজন না থাকায় আনন্দ কম হয়েছে।’

আশায় ব্যবসায়ীরা

পর্যটকখরার মধ্যেও আশায় বুক বেঁধে আছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী নেতারা। তাদের একজন গজনী পর্যটন ব্যবসায়ী সমিতির উপদেষ্টা ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘এ সময়ে অনেক পর্যটক আসার কথা, কিন্তু এবার হরতাল-অবরোধের কারণে এখনও পর্যটকের সাড়া পাচ্ছি না, তবে আমরা আশা করছি হয়তো জাতীয় নির্বাচনের পরে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে; দর্শনার্থীদের আগমনে জমজমাট হবে পর্যটন কেন্দ্রগুলো।

‘এতে অনেকটা লোকসানের পরিমাণ কমে আসবে। আমরা চাই যেকোনো উপায়ে রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান হোক।’

এ বিভাগের আরো খবর