বাংলাদেশ কোনো বিদেশিকে সন্তুষ্ট করার জন্য নির্বাচন করছে না বলে উল্লেখ করেছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। তিনি বলেছেন, একটি বিশেষ দেশ কী ভাবছে বা কোনো বিশেষ দেশ নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেবে কি না তা অপ্রাসঙ্গিক।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশের (ডিক্যাব) সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরিন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘নির্বাচনটা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা, সরকারের ধারাবাহিকতা। জনগণ ভোট দিতে চাইলে ভোট দেবে। আমরা একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটাই আমাদের ফোকাস। কোনো সমস্যা হলে আমরা তা মোকাবিলা করব।
‘বিদেশি বন্ধুরা যেভাবে চায়, আমরাও শান্তি ও স্থিতিশীলতা চাই। আমরা একটি শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে চাই। বাংলাদেশ সবসময় শান্তির পক্ষে।’
বিশ্বে যেকোনো ধরনের যুদ্ধের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘সাধারণ মানুষ, নারী ও শিশুরা সংঘাতের শিকার হওয়ায় বাংলাদেশ সবসময়ই যেকোনো ধরনের যুদ্ধের বিপক্ষে।’
‘অবশ্যই আমরা কোনো যুদ্ধ চাই না, সেটা সত্যিকারের যুদ্ধ হোক বা প্রক্সি যুদ্ধ।’
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশ কাউকে তার ভূমি অন্যের স্বার্থে ব্যবহার করতে বা প্রতিবেশীদের স্বার্থের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে দেবে না। এ অঞ্চলে যেকোনো ধরনের সংঘাত বা যুদ্ধ বাংলাদেশকে তার উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জন থেকে বিচ্যুত করতে পারে।’
ভারত ও মিয়ানমারকে বাংলাদেশের প্রতিবেশী হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ফোকাস আরও উন্নয়নের দিকে রয়েছে। তাই কোনো ধরনের সংঘাত, প্রক্সি বা অন্যথা হলে বাংলাদেশ তার লক্ষ্য অর্জন থেকে বিচ্যুত হবে। এ কারণে আমরা সবসময় সর্বোচ্চ সংযম ব্যবহার করি।
‘২০১৭ সালে যখন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ শুরু হয়েছিল তখন উস্কানিমূলক ঘটনা ঘটেছে।’
বৃহৎ শক্তির প্রতিদ্বন্দ্বিতা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশ সব দেশের সঙ্গে সম্পর্ক ও যোগাযোগ রক্ষা করে এবং এই ভারসাম্যমূলক কাজটি করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছে।
‘আমরা কাউকে প্রতিদ্বন্দ্বী করছি না, সময়মতো সাড়া দিচ্ছি এবং উদ্বেগের উত্তর দিচ্ছি, যদি থাকে। অনেকেই বলছেন আমাদের কাছ থেকে শিখতে চান। তারা খুশি যে বাংলাদেশ কীভাবে এসব প্রতিযোগিতামূলক চাহিদা ও স্বার্থ মোকাবিলা করছে।’
আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘সরকার আশা করছে একটি ভালো নির্বাচন হবে। এই মুহূর্তে আমরা মনে করি না নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না।
‘আশা করি উৎসবমুখর পরিবেশে মানুষ নির্বাচনে ভোট দেবে। আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে আমরা কিভাবে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সহায়তা করতে পারি সেদিকে মনোযোগ দিচ্ছি।’