অনেক গণমাধ্যম আছে তাদের যেটুকু প্রয়োজন তা রেখে আগে-পরে বাদ দিয়ে তথ্য প্রচার করে, যা মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কমিশনার কাজী হাবিবুল আওয়াল।
বৃহস্পতিবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে মানবাধিকার কমিশনের চেয়াম্যন কামাল উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি মন্তব্য করেন।
কাজী হাবিবুল আওয়াল বলেন, আজ মানবাধিকার কমিশনের চেয়াম্যনের সঙ্গে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। নির্বাচনে গণমাধ্যমের ভূমিকা আরও বস্তুনিষ্ঠ হওয়া উচিত বলে বৈঠকে জানিয়েছেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, অনেক গণমাধ্যম আছে তাদের যেটুকু প্রয়োজন, তার আগে-পরে বাদ দিয়ে সেটি প্রচার করে, যা মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করে। তবে এটা সব সময় না, মাঝেমধ্যে হয়। আমাদের গণমাধ্যমগুলোকে আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত উচিত বলে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান জানিয়েছন।
সিইসি বলেন, নির্বাচনের মাঠে আমরা ঘুরেছি, প্রার্থী-প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি। খুব বেশি অভিযোগ আমরা পাইনি। শাসক দলের সবাই আচরণবিধি ভঙ্গ করছে, এটা আমি স্বীকার করি না। প্রশাসনের ওপর প্রার্থীদের আস্থা আছে বলে আমরা জেনেছি।
তিনি বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে সহিংসতা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও পোস্টার ছেঁড়া হয়েছে। সহিংসতা একেবারেই হয়নি, সেটি বলছি না। আমরা প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি, তারা যেন এটা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করেন এবং ভোটের দিন যেন একটি সহজ-স্বাভাবিক পরিস্থিতি থাকে।
সিইসি বলেন, মানবাধিকার কমিশনের সাথে আমাদের বৈঠক হয়েছে। তাদের চাওয়া হচ্ছে একটা ফেয়ার ইলেকশন। সহিংসতা বাদ দিয়ে অহিংস্রভাবেও যে নির্বাচন করা সম্ভব, এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যারা নির্বাচন করবেন, তারা যেন সহিংসতার পথ বাদ দিয়ে অসহিংসতার পথ বেছে নিয়ে ভোটারদের ভোটাধিকার প্রদানে উৎসাহিত করেন।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দলের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা কম বলে বৈঠকে উল্লেখ করেছেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান। রাজনৈতিক দলের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা থাকা দরকার, যেন সার্বিকভাবে একটা পারস্পরিক আস্থার রাজনীতি তৈরি হয়।
এদিকে বৈঠক শেষে নির্বাচনে ভোটারদের ভোট দিতে বাধা দেয়া ও কাউকে ভোট দিতে বাধ্য করা দুটোই মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ।
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, সাংবিধানিক দায়িত্বের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। প্রত্যেকের অধিকার আছে তাতে অংশ নেয়ার। এখন কেউ যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে, সেক্ষেত্রে তিনি তার অধিকার ক্ষুণ্ন করলেন। কিন্তু এতে নিরপেক্ষতার ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব পড়বে না। তবে তাদের আহ্বান জানানো উচিত। বিএনপিকে আহ্বান জানানোও হয়েছে, কিন্তু নির্বাচনে না এলে আমাদের কিছু করার নেই।
বেলা ১১টার দিকে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আট সদস্যের প্রতিনিধি দল সিইসি ও কমিশনের অন্যান্য কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করে। বৈঠকে সিইসির কাছে নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণায় প্রার্থীদের আচরণবিধি লঙ্ঘনসহ নানান বিষয় তুলে ধরে মানবাধিকার কমিশন।