খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ফুলতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আকরাম হোসেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দর কর্মী-সর্মথকদের গুলি করার হুমকি দিয়েছেন।
ডুমুরিয়ার মিকশিমিল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে মঙ্গলবার রাতে তিনি পথসভায় বক্তব্য দেয়ার সময় এ হুমকি দেন। তার এই বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, বক্তব্যের এক পর্যায়ে আকরাম হোসেন নৌকার প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দর কর্মী-সর্মথকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমাকে চিনিস না। তোদেরকে এমন কাজ করব নারান বাবু কেন, তোদের বাপও ঠেকাতে পারবে না। দুটি গুলি করলেই যথেষ্ট।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খুলনার রির্টানিং অফিসার ও খুলনা জেলা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। ওই ভিডিও ফুটেজটি নির্বাচন কমিশন কর্তৃক গঠিত ইলেক্ট্ররাল কমিটিতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাঠানো হয়েছে।’
তবে ওই বক্তব্যের ব্যাপারে শেখ আকরাম হোসেন বলেন, ‘আমি বলেছি, ৭১ সালের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রনাঙ্গনে আমি যুদ্ধ করেছি। যুদ্ধক্ষেত্রে হাজার হাজার অস্ত্র গোলাবারুদ নিয়ে জীবনকে বাজি রেখে, এই যুদ্ধ পরিচালনা করেছি। এটাও বলেছি, আপনাদের মধ্যে অনেকেই আছে, যারা ৭১ এর যুদ্ধক্ষেত্রের দাবি করে, তারা সেদিন কোথায় ছিলেন। যদি দুটি গুলি ফুটতো, তাহলে আপনাদের কাউকে খুঁজে পাওয়া যেত না। আমার ওই কথাকে বিকৃত করে নানাভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী আকরাম হোসেন ফুলতলা উপজেলার আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি ওই উপজেলার চেয়ারম্যান ছিলেন। উপজেলা চেয়ারম্যান পদ হতে পদত্যাগ করে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে খুলনা-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন।
ঋণখেলাপির দায়ে রিটার্নিং অফিসার তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেছিলেন। নির্বাচন কমিশন ও উচ্চ আদালতও তার মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে।পরে চেম্বার জজ তাকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ দিয়েছে।
এই আসনে নির্বাচনে লড়ছেন ৪ জন প্রার্থী। তবে মূল প্রতিযোগিতা হচ্ছে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের নারায়ণ চন্দ্র চন্দের সঙ্গে একই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ আকরাম হোসেনের।
নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ২০০০ সালের ২০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে প্রথম সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। তবে ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীর নিকট পরাজিত হন।
এরপর ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচন থেকে ২০১৯ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত টানা তিনি জয়লাভ করেন। ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন সময়ে মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও মন্ত্রী দায়িত্ব পালন করেছেন।