ভোট বর্জনের লিফলেট বিলি করতে গিয়ে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের হামলার শিকার হয়েছে বাসদের নেতা-কর্মীরা। এ সময় তাদের অন্তত পাঁচজনকে ধরে পুলিশে দিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটির নেতা-কর্মীরা।
চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানহাট মোড়ে মঙ্গলবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
হামলায় বাম গণতান্ত্রিক জোটের চট্টগ্রাম জেলার সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) চট্টগ্রাম নগর ইনচার্জ আল কাদেরী জয়, শ্রমিক নেতা হেলাল উদ্দিন, বাসদ নেতা মোহাম্মদ জসিম, নাজিম উদ্দীন বাপ্পী ও ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর সভাপতি মিরাজ উদ্দিন আহত হন। পরে পুলিশ এসে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে অবশ্য তাদের ছেড়ে দেয় ডবলমুরিং থানা পুলিশ।
এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি কমরেড অশোক সাহা, সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, বাসদ চট্টগ্রাম নগরের সদস্য আকরাম হোসেন, রায়হান উদ্দীন ও বাসদ (মার্কসবাদী) চট্টগ্রাম জেলার আহবায়ক শফি উদ্দিন কবির আবিদ।
তবে বাম গণতান্ত্রিক জোটের পক্ষ থেকে নিন্দা জানিয়ে পাঠানো এক বিবৃতিতে ওই ৫ নেতার ওপর হামলার দাবি করা হয়েছে।
এক বিবৃতিতে বাম জোটের নেতারা বলেন, ‘স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে হওয়া নির্বাচন বর্জন করতে ও ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের না যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে সারা দেশে বাম গণতান্ত্রিক জোট প্রচারপত্র বিলি করছে। সে উদ্দেশ্যে বাসদ তাদের লিফলেট বিলির সময় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। পরে তাদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। এ স্বৈরাচারী সরকার সামান্য লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিকেও সহ্য করতে পারছে না।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “আওয়ামী লীগ ও তার সঙ্গীরা ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো আরেকটি প্রহসনমূলক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় থাকার দিবাস্বপ্নে বিভোর। বর্তমান সরকার দেশে স্বৈরশাসন কায়েম করেছে, ৭ জানুয়ারির নির্বাচন তারই প্রমাণ। তারা সংবিধান রক্ষার দোহাই দিয়ে সংবিধান ও গণতন্ত্রের টুটি চেপে ধরেছে। তারা জনগণের ন্যূনতম ভোটাধিকার নিশ্চিত করার পরিবর্তে প্রহসনের নির্বাচন করতে চাইছে। তাদের এই ‘গণতন্ত্র হত্যা অভিযান’ দেশের মানুষই প্রতিরোধ করবে।’
বিবৃতিতে অবিলম্বে বাসদের আটক পাঁচ নেতাকে মুক্তি ও হামলাকারী ‘আওয়ামী সন্ত্রাসীদের’ চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে ডবলমুরিং থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিব হায়দার বলেন, ‘ওরা নির্বাচনবিরোধী লিফলেট বিতরণ করছিল। খবর পেয়ে আমাদের কয়েকজন নেতা-কর্মী তাদের আটক করে পুলিশে দেয়। মারধরের বিষয়টি মিথ্যা, এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
তবে ওই ৫ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে জানিয়ে ডবলমুরিং থানার ওসি ফজলুল কাদের পাটোয়ারী বলেন, ‘তারা নির্বাচনে আসেননি। ওই এলাকায় লিফলেট বিলি করছিলেন। তাদের ধরে আমাদের হাতে দেয়া হলেও পরে যাচাই-বাছাই করে আমরা ছেড়ে দিয়েছি।’