বরিশাল-৫ অর্থাৎ বরিশাল সদর আসনে নৌকার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ট্রাক মার্কা। বরিশাল সিটির সাবেক মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ নির্বাচন থেকে ছিটকে পড়ায় এখন নৌকা প্রতীকের জাহিদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাহ উদ্দিন। নির্বাচনের আগে একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করছেন তারা। সালাহ উদ্দিন বলছেন, একের পর এক তার কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা চালাচ্ছে নৌকার সমর্থকরা। অপরদিকে জাহিদের দাবি, কালো টাকা ছড়াচ্ছেন ট্রাকের প্রার্থী। এর ফলে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে বরিশাল-৫ আসনের নির্বাচনের মাঠ।
জাহিদ ফারুক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং সালাহ উদ্দিন রিপন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ত্রাণ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য।
মঙ্গলবার জনসভা শেষে ফেরার পথে বরিশালের বুখাইনগর এলাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাহ উদ্দিন রিপন ও তার কর্মী-সমর্থকদের ওপর চড়াও হন নৌকার প্রার্থী জাহিদ ফারুক শামীমের নেতা-কর্মীরা। এক পর্যায়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ২ কর্মী আহত হন।
এ অভিযোগে বুধবার সকালে বরিশাল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাহ উদ্দিন রিপন। এ সময় অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘আমার নির্বাচনি প্রচারে ব্যাপক মানুষের সমাগমে ভীত হয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী। হেরে যাওয়ার শঙ্কায় তাই তার কর্মী-সমর্থকরা আমাদের প্রচারে বাধা দিচ্ছেন।’
ট্রাক প্রতীক নিয়ে গণসংযোগে ব্যস্ত স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাহ উদ্দিন রিপন। ছবি: নিউজবাংলা
তিনি আরও বলেন, ‘এ নিয়ে আমাদের ওপর ৬ বার হামলা চালানো হয়েছে। একাধিকবার মাইক ভাঙচুর করা হয়েছে। জাহিদ ফারুকের লোকজন চায় না যে আমি নির্বাচনে থাকি। কারণ তারা জানে, আমি নির্বাচনে থাকলে তাদের পরাজয় নিশ্চিত। আর একমাত্র মৃত্যু ছাড়া আমাকে নির্বাচন থেকে কেউ সরাতে পারবে না। নৌকার প্রার্থী আমার ট্রাক প্রতীককে ভয় পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তাদের টেনশন এখন ট্রাক।’
তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে নৌকার প্রার্থীর দাবি, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এবং নবাগত প্রার্থী মিডিয়া কাভারেজ পেতে এমন কৌশল অবলম্বন করছেন। কালো টাকা ছড়িয়ে ভোট নেয়ার চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এ বিষয়ে জাহিদ ফারুক শামীম বলেন, ‘আমি কী ধরনের মানুষ তা বরিশালবাসী জানে। ৫ বছর এমপি থাকা অবস্থায় আমার ছেলেপেলে কাউকে ফুলের টোকাও দেয়নি। আমি সন্ত্রাসের রাজনীতি করি না। হয়ত যারা নির্বাচন থেকে ডিসকোয়ালিফাই (প্রার্থিতা হারিয়েছে) হয়েছে, তারাই এমনটা করছেন, আর আমার নাম দিচ্ছেন।
‘কালো টাকা ছড়াচ্ছেন সালাহ উদ্দিন রিপন নামের ওই প্রার্থী। নির্বাচনের মাঠে তো তাকে যন্ত্র দিয়েও খুঁজে পাওয়া যায় না।’
নির্বাচনি প্রচারকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী জাহিদ ফারুক। ছবি: নিউজবাংলা
বরিশালের রিটার্নিং কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, নির্বাচনের সুষ্ঠ পরিবেশ কেউ নষ্ট করতে চাইলে, সে যেই হোক, ছাড় দেয়া হবে না।
বরিশাল-৫ আসনে কাগজে-কলমে ৬ জন প্রার্থী থাকলেও মাঠে আছে মাত্র ২ জন। জাতীয় পার্টির হেভিওয়েট প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপসসহ বাকি ৪ প্রার্থীকে এখনও নির্বাচনি প্রচারে দেখা যায়নি।
উল্লেখ্য, বরিশাল-৫ আসনে ভোটকেন্দ্র আছে ১৭৬টি। এ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৬৮ হাজার ৫৬৩ জন।