বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শ্বশুরবাড়িতে আঞ্চলিক ভাষায় নৌকায় ভোট চাইলেন শেখ হাসিনা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৩ ২০:২৬

রংপুরের পীরগঞ্জে নির্বাচনি জনসভায় নৌকায় ভোট চাইতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘কি বাহে, মুই কি একটা ভোট পাবার নও? হামাক একটা ভোট দিবান নন? হামাক ভোট দেন বাহে।’

রংপুরের আঞ্চলিক ভাষায় শ্বশুর বাড়ি এলাকার মানুষের কাছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার জন্য ভোট চেয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘মুই একটা ভোট কি পাবার নও বেহে?’

মঙ্গলবার বিকেলে রংপুরের পীরগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নির্বাচনি জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এভাবেই নৌকায় ভোট চান প্রধানমন্ত্রী। পীরগঞ্জ তার শ্বশুরবাড়ি এলাকা।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কি বাহে, মুই কি একটা ভোট পাবার নও? হামাক একটা ভোট দিবান নন? হামাক ভোট দেন বাহে।’

আঞ্চলিক ভাষায় পীরগঞ্জবাসীর কাছে ভোট চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই যে আমার মেয়ে শিরীন শারমিন চৌধুরীকে দিয়ে গেলাম। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করা মানে আমাকে ভোট দেয়া, জয়কে ভোট দেয়া। সে জয়ের বোন, পুতুলের বোন।’

এ সময় শিরীন শারমিন চৌধুরীর হাত তুলে উপস্থিত জনতাকে দেখান প্রধানমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘নৌকাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন। নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। হাত তুলে দেখান। নৌকা জয়ী হলে আবারও রংপুরে আসব।’

এ সময় উপস্থিত জনতা হাত তুলে নৌকা প্রতীকে ভোট দেয়ার ওয়াদা করেন।

পীরগঞ্জবাসীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৭ জানুয়ারি নির্বাচন, এজন্য আপনাদের কাছে এসেছি। আপনারা ২০০৮-এর নির্বাচন, ২০১৪ ও ২০১৮-এর নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন। আপনারা এমন একজনকে ভোট দিয়েছেন যিনি আমার কন্যার মতো। তাকে আমি এনেছি এখানে।

‘অত্যন্ত মেধাবী, সেসঙ্গে পার্লামেন্টের স্পিকার। মহামান্য রাষ্ট্রপতির পরই যার অবস্থান। আমি পার্লামেন্টের সংসদ নেতা। পার্লামেন্ট পরিচালনা করেন স্পিকার। আমি গোপালগঞ্জ থেকে প্রধানমন্ত্রী, আর এখান থেকে জাতীয় সংসদের স্পিকার।’

পীরগঞ্জের পুত্রবধূ শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত গর্বিত। আমি মনে করি পীরগঞ্জবাসীর জন্য অত্যন্ত গৌরবের। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে স্পিকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদ। রাষ্ট্রপতির অবর্তমানে স্পিকার অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। আপনারা কি বুঝতে পারেন, এই শিরীন শারমিন চৌধুরীকে নির্বাচিত করে পীরগঞ্জবাসী কত উঁচু আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন? এজন্য আমি পীরগঞ্জবাসীকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমি যে প্রার্থী দিয়েছি, উপহার দিচ্ছি- এই যে শিরীন শারমিন চৌধুরী জীবনে কোনোদিন ফার্স্ট ছাড়া সেকেন্ড হয়নি। বিদেশ থেকেও ডিগ্রি নিয়ে এসেছে। অত্যন্ত মেধাবী। আমরা চাই সবাই শিক্ষা-দীক্ষায় এগিয়ে যাক।

‘এই পীরগঞ্জে কোনো কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাই ছিল না। আমরা শিরীন শারমিনের নেতৃত্বে মেরিন একাডেমি করে দিয়েছি। অনেকগুলো ট্রেনিং একাডেমি করে দিয়েছি। এখানকার রাস্তাঘাট পাকা করে দিয়েছি। প্রাথমিক বিদ্যায়লগুলো ঠিক করে দিয়েছি। জরাজীর্ণ ভবন নতুন করে দিয়েছি। জয়িতা ফাউন্ডেশন এই শিরীন শারমিন মন্ত্রী থাকাকালীন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘পীরগঞ্জ অত্যন্ত অবহেলিত একটা জায়গা ছিল। আজ সবাই পীরগঞ্জকে চেনে। পীরগঞ্জের সার্বিক উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। আমি বলব, ১৫ বছর আগের কথা চিন্তা করবেন। এই পীরগঞ্জ কেমন ছিল আর এখন কেমন হয়েছে। গোটা রংপুর বিভাগকে দারিদ্র্য বিমোচন একাডেমি করে দিচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবচেয়ে অবহেলিত ছিল রংপুর। আমি ক্ষমতায় আসার পর বিভাগ হিসেবে চালু করি। রাস্তা-ঘাট, কালভার্ট, ব্রিজসহ সার্বিকভাবে রংপুরের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। নদী ভাঙন থেকে রক্ষা করা, যার সুফল আপনারা পাচ্ছেন।

‘আমরা পীরগঞ্জের সঙ্গে দিনাজপুরের সংযোগে ওয়াজেদ মিঞা সেতু নির্মাণ করে দিয়েছি, যাতে পীরগঞ্জের মানুষ সহজেই দিনাজপুরে যেতে পারে। রংপুর বিভাগের প্রতিটি উপজেলা ভূমিহীনমুক্ত হয়েছে। আমি এভাবে সারা বাংলাদেশ ভূমিহীনমুক্ত করতে কাজ করছি। সবচেয়ে বেশি মঙ্গাপীড়িত রংপুরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আর মঙ্গা হয়নি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আপনাদের কাছে এসেছি, সামনে নির্বাচন। আপনারা জানেন ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে নির্বাচনে জিতেছি। এটাই বাংলাদেশে প্রথম ধারাবাহিক গণতন্ত্র। যদিও অনেকে এই ধারাবাহিক গণতন্ত্র চায় না। স্থিতিশীলতা চায় না। যারা অবৈধভাবে পকেট থেকে ক্ষমতা দখল করতে এসেছে, তারা অগ্নি-সন্ত্রাস করছে।

‘তারা মানুষের শান্তি দেখতে পারে না। বাদ যায়নি রংপুরও। বাস-ট্রেনে আগুন লাগাচ্ছে। ট্রেনের ফ্লিসপ্লেট তুলে ফেলছে। এতে ট্রেন পড়ে যাবে। বিএনপি-জামায়াত মানুষ মারার ফাঁদ তৈরি করছে। এর থেকে ঘৃণার আর কী হতে পারে বলেন!’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘শুধু তাই নয়, ট্রেনে আগুন দিয়েছে। মা আর শিশু…, মা তো সন্তান ফেলতে পারে না। মা সন্তানকে বুকে নিয়ে আগুনে পুড়ে মারা গেছে। এই দৃশ্য সহ্য করা যায় না। ওই বিএনপি-জামায়াত মিলে অগ্নি-সন্ত্রাস যারা করে, তারা মানুষ মেরে আন্দোলন করে। আমরা মানুষের জন্য রাজনীতি করি।

‘মানুষকে হত্যা করে, মানুষকে খুন করে কিসের আন্দোলন? আমাদের প্রত্যেককে সজাগ থাকতে হবে। যারা এসব ঘটাতে আসবে তাদের ধরে উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে। পুলিশে দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা মানুষের কল্যাণে কাজ করি। দিন-রাত পরিশ্রম করে মানুষের ভাগ্য বদলাতে কাজ করছি। আর তারা আসে ধ্বংস করতে। দরকার হলে আমাদের আশপাশে রেললাইন পাহারা দিতে হবে। আমি সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’

এ বিভাগের আরো খবর