বিএনপিকে নিষিদ্ধ করে পাকিস্তানে বিতাড়িত করার দাবি জানিয়েছেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। তিনি বলেন, ‘সবারই নির্বাচন করার অধিকার থাকলেও বিএনপির ব্যাপারে আমাদের কোনো ছাড় নেই। যুদ্ধাপরাধীদের দোসরদের বাংলাদেশে নির্বাচন করার অধিকার নেই। যারা বাংলাদেশের অস্তিত্বকেই বিশ্বাস করে না তাদের কী দরকার বাংলাদেশে নির্বাচন করা। তারা পাকিস্তানে গিয়ে নির্বাচন করুক।’
সোমবার বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর জুরাইন বিক্রমপুর প্লাজার সামনে ঢাকা-৪ আসনে নৌকার প্রার্থী অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম ও বিকেল ৫টার দিকে ডেমরার আব্দুল মান্নান হাই স্কুল মাঠে ঢাকা-৫ আসনের নৌকার প্রার্থী হারুনর রশিদ মুন্নার পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা ও সঞ্চালনা করেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা।
এ সময় পরশ বলেন, ‘নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে দুটি কথা বলতে চাই। আমাদের দরকার একটা অংশগ্রহণমূলক এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। এই দুটি বিষয় একে অপরের পরিপূরক। কোনো বিশেষ দল নির্বাচনে আসলো বা না আসলো- তাতে আমাদের কিছু আসে যায় না; আমাদের বিবেচনার বিষয়ও না। কিন্তু আপনাদেরই নির্ধারণ করতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য আমরা কী কী করতে পারি। সকলেরই নির্বাচনে অংশ নেয়ার অধিকার আছে। আমরা কাউকে বাধা দিবো না। আপনাদের সহনশীল হতে হবে এবং সকলকে ভোটকেন্দ্রে আসতে উৎসাহ দিতে হবে। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন মানে অন্যের ভোট দেয়ার পরিবেশ রক্ষা করা। বিশৃঙ্খলা এবং হট্টোগোল সম্পূর্ণরূপে পরিহার করতে হবে। নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারলেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির মতো দেশবিরোধী সংগঠনকে আমরা এদেশে নিষিদ্ধ করে পাকিস্তানে বিতাড়িত করতে চাই। বিএনপি নির্বাচনে আসে নাই তাদের নিজেদের কারণে। দুটি কারণ-প্রথমত,তাদের নিজস্ব দুর্বলতা। দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব। নেতৃত্ব কে দেবে? দ্বিতীয়ত, তারা ভোটে যেতে সাহস পায় না। কারণ তারা যে অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, মানুষকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে এখনও মারছে। এ কারণে তাদের নির্বাচনে আসার কোনো আগ্রহ নেই এবং এদেশের জনগণ তাদেরকে বর্জন করেছে। তারা তা ভালোই বুঝতে পারছে।’
যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ‘গণমানুষের সম্পদ, গণপরিবহন পুড়িয়ে জনগণের সমর্থন পাওয়া যায় না। তাদের রাজনৈতিক কৌশল আমাদের মতো মানুষের বোধগম্য নয়। কারণ তারেক জিয়ার মতো সন্ত্রাসী এবং দুর্বৃত্তের মাথা থেকেই এমন উদ্ভট ও নাশকতার মতো রাজনৈতিক কৌশল আসতে পারে। লন্ডন থেকে হুকুম দেয় আর এখানে তাদের সন্ত্রাসী বাহিনীরা গাড়িতে আগুন দিচ্ছে, মানুষকে পুড়িয়ে মারছে। আপনারা দেখেছেন, কীভাবে ট্রেনে আগুন দিয়ে মা ও ছেলেকে নির্মমভাবে পুড়িয়ে পুড়িয়ে মেরেছে বিএনপির সন্ত্রাসীরা।
‘অপরদিকে জনগণের ভোট এবং ভাতের অধিকার আদায়ের আন্দোলন-সংগ্রাম করে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা হয়েছে। আজকের নির্বাচনি সংস্কারও আওয়ামী লীগ করেছে। ভোটার আইডি হালনাগাদ করে ১ কোটি ভুয়া ভোটার বাদ দেয়া, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ইভিএম, ভোটার আইডি- এই সব কিছু আওয়ামী লীগের অবদান। এখন জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে কাকে তারা নির্বাচিত করবে। বাংলাদেশের মানুষ তাদের ভাল-মন্দ বোঝে এবং কাদেরকে ভোট দিলে তাদের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কোনো অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী দল না। আওয়ামী লীগ এ দেশের মাটি ও মানুষের সংগঠন। মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করেই এই সংগঠন গড়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগকে এভাবে অগ্নিসন্ত্রাসী আন্দোলনের মাধ্যমে কোনো দিনই উৎখাত করা সম্ভব না। আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ; শিক্ষা-দীক্ষা এবং প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সেই এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশকে ধরে রাখতে ঢাকা-৪ ও ঢাকা-৫ আসনের জনগণ ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে বলে বিশ্বাস করি।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন- যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. হেলাল উদ্দিন, মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, আবু মনির মো. শহিদুল হক চৌধুরী রাসেল, দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক মো. শামছুল আলম অনিক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মুস্তাফিজ, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মো. হারিছ মিয়া শেখ সাগর, উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকতসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতারা।