আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন একজন সরকারি কর্মচারী। চাকরির তথ্য গোপন করেই তিনি প্রার্থী হয়েছেন, যা সরকারি বিধির লঙ্ঘন।
চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নেয়া মোহাম্মদ সালাউদ্দিন সীতাকুণ্ড উপজেলা জেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে কর্মরত। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তর একাধিকবার তাকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) চিঠি দিলেও কোনো তোয়াক্কা করেননি তিনি।
যদিও এক শতাংশ ভোটারের তথ্যে গরমিল থাকায় তার মনোনয়ন প্রথমে বাতিল হয়। পরে নির্বাচন কমিশনে আপিল করলে সেখান থেকেও প্রার্থিতা ফেরাতে পারেননি তিনি। এর পর আদালতের রায়ে প্রার্থিতা ফিরে পান ওই প্রার্থী। বর্তমানে রকেট প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন তিনি।
সরকারি বিধি অনুযায়ী, সরকারি চাকরিজীবীদের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)-১৯৭২-এর ১২ (১) (চ) ধারায় বলা হয়, প্রজাতন্ত্রের বা সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের বা প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগের চাকরি থেকে পদত্যাগ করেছেন বা অবসরে গেছেন এবং ওই পদত্যাগ বা অবসর যাওয়ার পর তিন বছর অতিবাহিত না হলে তিনি জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। এছাড়া সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা ১৯৭৯-এর বিধি ২৫ অনুযায়ী সরকারি কোনো কর্মচারীর নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ নেই।
গত ১৮ ডিসেম্বর সিভিল সার্জনের কার্যালয়ও শোকজ করে। সেখানেও তিনি নোটিশের জবাব দেননি। চাকরিতেও বর্তমানে তিনি অনুপস্থিত।
সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে বিষয়টি রোববার লিখিতভাবে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলামকে জানানো হয়।
এ বিষয়ে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নুর উদ্দিন বলেন, ‘তিনি বিধি লঙ্ঘন করে প্রার্থী হয়েছেন। তাকে বারবার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হলেও তিনি জবাব দেননি, যা সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালার পরিপন্থি। বিষয়টি সিভিল সার্জন এবং নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। উনারা নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবেন।’
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জেনেছি। সত্যতাও পেয়েছি। বিষয়টি কমিশনকে অবহিত করা হয়েছে। কমিশন যে ব্যবস্থা নেন আমরা সেটি বাস্তবায়ন করব।’
জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, ‘তিনি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করেছেন। তিনি তথ্য গোপন করেছেন। বিষয়টি কমিশনার বরাবর জানানো হয়েছে। তিনি বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেবেন।’