নওগাঁর দুটি আসনে রোববার রাতে নৌকার ছয়টি ক্যাম্পে আগুন ধরানোর পাশাপাশি ভাঙচুরের ঘটনাটি ঘটেছে।
নওগাঁ-৫ (সদর) আসনে নৌকার প্রার্থী ব্যারিস্টার নিজাম উদ্দিন জলিল জনের পাঁচটি নির্বাচনি ক্যাম্প এবং নওগাঁ-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের একটি ক্যাম্পে এ নাশকতা চালানো হয়।
সদর আসনে বক্তারপুর ইউনিয়নের চকতারতা মোড়, মুক্তারপাড়া মোড়, হাল ঘোষ পাড়া মোড়, তিলকপুর ইউনিয়নের ছিটকীতলা মোড় ও পৌর শহরের কালিতলা এলাকা এবং নওগাঁ-১ আসনে পোরশা উপজেলার নিতপুর ইউনিয়নে এসব ঘটনা ঘটে।
নওগাঁ সদর আসনের নৌকার সমর্থকদের দাবি, আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিলের ছেলে নিজাম উদ্দিনের জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। আসন্ন নির্বাচনে আবারও তিনি বিজয়ী হবেন জেনে নৌকার সমর্থকদের ওপর ভয়ভীতি ও চাপ সৃষ্টি করতে এক রাতে নৌকার পাঁচটি নির্বাচনি ক্যাম্প পুড়িয়ে দেয়া হয়। ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান ছেকার আহমেদ শিষাণের সমর্থকরা এসব ঘটনা ঘটিয়েছেন।
এ বিষয়ে নওগাঁ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুবুল হক কমল বলেন, ‘প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই নৌকার সমর্থকদের উসকে দিতে যা যা করা দরকার করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী শিষাণের সমর্থকরা। বিপরীতে নৌকার প্রার্থী নিজাম উদ্দিন শান্তি বজায় রেখে প্রচার প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। রবিবার নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে মতবিনিময়ে শিষাণের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আমরা তুলে ধরেছি।
‘তাৎক্ষণিক শিষাণকে সাবধান করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। অথচ ওই রাতেই তার সমর্থকরা আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে নৌকার বিভিন্ন ক্যাম্পে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। এসব ঘটনায় স্থানীয় থানা ও নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নওগাঁ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান ছেকার আহমেদ শিষাণ বলেন, ‘নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসায় পরাজয় নিশ্চিত জেনে নোংরা রাজনীতির খেলায় মেতেছে নৌকার প্রার্থী নিজাম উদ্দিনের সমর্থকরা। নিজেরাই নিজেদের নির্বাচনি ক্যাম্পে আগুন ধরিয়ে দিয়ে নাটক সাজাচ্ছে।
‘প্রতিনিয়ত আমার সমর্থকদের হুমকি-ধমকি দেয়া অব্যাহত রেখেছে নৌকার সমর্থকরা। তাদের অভিযোগগুলো মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’
এদিকে পোরশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘রাতের অন্ধকারে কে বা কারা নৌকার ক্যাম্পটিতে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। আগুন দেয়ার সময় কাউকে চিহ্নিত করা যায়নি। এই রকম ঘটনা নওগাঁ-১ আসনের বাকি দুই উপজেলাতেও ঘটেছে।
‘নিতপুরের আগুন দেয়ার ঘটনায় যেহেতু কাউকে চিহ্নিত করা যায়নি, তাই কারও নাম এখানে সন্দেহজনকভাবে বলা যাবে না, তবে এই ঘটনায় থানায় অভিযোগের প্রস্তুতি চলছে।’
নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি জাহিদুল হক বলেন, ‘রাতের আঁধারে নৌকার পাঁচটি নির্বাচনি ক্যাম্পে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এসব ঘটনায় এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’