বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপিকে এ দেশের রাজনীতিতে ‘বিষফোড়া’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘এই বিষফোড়া দেশের রাজনীতি থেকে মুছে ফেলতে হবে।’
শনিবার বিকেলে নিজ নির্বাচনি এলাকা নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি স্বাধীনতার শত্রু, গণতন্ত্রের শত্রু। এদেরকে প্রতিহত করার একটা সুযোগ এসেছে। আগামী ৭ জানুয়ারি দলে দলে ভোট দিয়ে সবাই এ সুযোগকে কাজে লাগান।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের, আমাদের স্বাধীনতা সার্বোভৌমত্ব যদি বাঁচিয়ে রাখতে চান তাহলে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতার মঞ্চে আনতে হবে। গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হলে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় বসতে হবে। বাংলাদেশের উন্নয়নকে বাঁচাতে হলে ক্ষমতার মঞ্চে শেখ হাসিনার বিকল্প নাই। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে বাঁচতে হলে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই।’
তিনি বলেন, ‘এ লড়াই বাংলাদেশের অস্তিত্বের লড়াই। এ লড়াই মুক্তিযুদ্ধকে বাঁচিয়ে রাখার লড়াই। এ লড়াই বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ও সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার লড়াই। এ লড়াইয়ে শেখ হাসিনাকে জেতাতে হবে। এ লড়াইয়ে শেখ হাসিনাকে বাঁচাতে হবে, নৌকাকে বা়ঁচাতে হবে।’
বিএনপির সমালোচনা করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘ইসরাইল যেভাবে ফিলিস্তিনিতে মানুষ হত্যা করে, ঠিক সেইভাবে আন্দোলনের নামে তারা মায়ের বুকে শিশুকে পুড়িয়ে মারে। বিএনপি হচ্ছে ভুয়া দল। বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি হচ্ছে পরগাছা। এ পরগাছাকে রাজনীতি থেকে অস্তিত্বহীন করতে হবে। এরা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ মানে না, এরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা মানে না। এরা বহু মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেছে; মোস্তাক আর জিয়া জেলখানায় হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। আগষ্টের ২১ তারিখে শেখ হাসিনাকে হত্যা করার জন্য গ্রেনেড হামলা করিয়েছে। বিএনপি ২৮ তারিখে পল্টনে একজন পুলিশকে পিটিয়ে পিটিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এরা প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা করেছে। বিএনপি হত্যাকারীর দল।’
তিনি বলেন, ‘এরা তারা, যারা ১৫ ফেব্রুয়ারিতে প্রহসনের নির্বাচন করেছে। এরাই তারা, যারা ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার করেছিল ২০০৬ সালের প্রহসনের নির্বাচনকে ঘিরে। মাগুরায় প্রহসনের নির্বাচন, ঢাকা-১০ এ জালিয়াতির নির্বাচন- এরা নাকি গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেবে! বিএপির মুখে গণতন্ত্রের কথা শুনলে ঘোড়াও হাসে।’
বিএনপি লাল কার্ড খেয়ে রাজনীতির খেলা থেকে বাদ পড়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘তারা বাদ পড়েছে ফাউল করে। তাদের আর রাজনীতির মাঠে খেলার সুযোগ নেই।’
এই সময় তিনি আরও বলেন, ‘তারেক রহমান দণ্ডিত আসামি; ২০০৭ সালে পালিয়ে গিয়ে লন্ডনে বসে রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে আন্দোলন চলাতে চায়। তারা অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। সাধারণ মানুষ তাদেরকে অসহযোগিতার মাধ্যমে বিতাড়িত করবে। যারা নেত্রীকে হটাতে চায়, আমরা ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে তাদেরকে হটিয়ে দেব।’
নিজ এলাকার উন্নয়নের বিষয় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এই কবিরহাট এক সময় অবহেলিত ছিল। এখানে গত ১৫ বছরে রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ, কালভার্ট, স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। আগামী দিনে শেখ হাসিনার উন্নয়নকে রক্ষা করতে, হলে মুক্তিযুদ্ধকে বাঁচাতে হলে ৭ তারিখ ফাইনাল খেলায় জিততে হবে।’
কবিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র জহিরুল হক রায়হানের সঞ্চালনায় পথসভায় উপস্থিত ছিলেন- ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী, সংসদ সদস্য মোরশেদ আলম, কবিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী ইব্রাহিমসহ উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
এর আগে, ওবায়দুল কাদের সকাল থেকে কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট, শান্তিরহাট, রংমালা বাজার, বাংলা বাজার এবং পরে পেশকারহাট, নতুন বাজার ও টেকেরবাজারসহ আশপাশের এলাকায় গণসংযোগ করেন।
পরে বিকেলে নিজের নির্বাচনি এলাকার আরেক উপজেলা কবিরহাটে পথ সভায় বক্তব্য রাখেন তিনি।
তার আগে, শুক্রবার বিকেলে বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত করে গণসংযোগ শুরু করেন ওবায়দুল কাদের।