জনগণের অসহযোগ বিএনপির প্রতি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘জনগণ বিএনপির অসহযোগের ডাকে সাড়া দেয়নি। যার প্রমাণ হাটবাজার অফিস-আদালত সবকিছুই স্বাভাবিক চলছে। এর মাধ্যমে আসলে জনগণ বিএনপির প্রতিই অসহযোগ করছে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আন্দোলনের মাঠ থেকে পালিয়ে থাকা দলের ডাকে জনগণ অসহযোগ করবে না, এটাই স্বাভাবিক। যারা আন্দোলন থেকে পালিয়ে গেছে তারা এখন অসহযোগের ডাক দিয়েছে। জনগণ বিএনপির ডাকে অসহযোগ করবে না। জনগণ বিএনপির বিরুদ্ধে অসহযোগ শুরু করেছে।’
সরকারের পদত্যাগের দাবিতে দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে অবরোধ ও হরতালের মতো কর্মসূচি দিয়ে আসা বিএনপি বুধবার সরকারের বিরুদ্ধে ‘সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনে’র ডাক দেয়।
এই আন্দোলনে অংশ নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্বাচনি দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকতে বলেছে দলটি। সরকারকে কর, খাজনা এবং বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানির বিল পরিশোধ বন্ধ করে দেয়া এবং ব্যাংকে আমানত না রাখার আহ্বানও জানানো হয়েছে। মামলার আসামি দলীয় নেতা-কর্মীদের আদালতে হাজিরা না দেয়ার কথাও বলা হয়েছে। বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে এসব আহ্বান জানান।
বিএনপির এমন কর্মসূচি ঘোষণার সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যে দল আন্দোলনের মাঠ থেকে পালিয়ে গেছে সেই দল অসহযোগ আন্দোলন ডাকে। জনগণ বিএনপির ডাকে অসহযোগ করবে না। তারা ইতোমধ্যে বিএনপির বিরুদ্ধে অসহযোগ শুরু করেছে। তার প্রমাণ হচ্ছে হাট-বাজার সব খোলা। জীবনযাত্রা স্বাভাবিক।’
সংবাদ সম্মেলনে তারেক রহমানকে দেশে আসার আহ্বান জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণ রিমোট কন্ট্রোল মানে না। তারেক রহমান টেমস নদীর ওপার থেকে হুমকি ধামকি দিচ্ছে। দেশে এসে মানুষকে মোকাবিলা করে জেলে যাওয়ার সাহস অর্জন করুক। রিমোট কন্ট্রোল নেতা দিয়ে রাজনীতি হয়না।’
বিএনপি একটা ডামি দল মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদের প্রথম কিংস পার্টি হচ্ছে বিএনপি। জন্মগতভাবে বিএনপি গণতন্ত্র হত্যাকারী নির্বাচন বিরোধী দল। কিন্তু জনগণ নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। জনগণ নির্বাচন চায়। নির্বাচন পণ্ড করতে দেয়া হবে না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ হিমালয়ের মতো অবিচল। গুপ্ত হামলা বন্ধ না করলে জনগণ ধরে ধরে প্রতিহত করে গণশাস্তি দেবে।’
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির শীর্ষ নেতাদের জেলে রাখা হয়েছে ২৮ তারিখের হত্যাকাণ্ড ঘটানোর কারণে। শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে হামলার দায় এড়াতে পারে না। সরকার তাদের রাখেনি। ফৌজদারি অপরাধের দায়ে জেলে। চিরদিন তারা কারাগারে থাকবে না।’
নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের কোনো লুকোচুরি নেই উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘যারা স্বতন্ত্র নির্বাচন করবে তাদের বাধা দেয়া হবে না। জোর করে বাধা দিলে তা নির্বাচনে আচরণবিধির লঙ্ঘন।
কাদের বলেন, ‘ট্যাক্স, বিল যাদের বাকি, ঋণ নিয়ে যারা পালিয়েছে তাদের তালিকা করে আদায় করা হবে। কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান করি, বকেয়া সব আদায় করতে।’
সিলেটের আওয়ামী লীগের জনসভা নিয়ে কাদের বলেন, ‘গতকালের সমাবেশ জনসমুদ্রে রূপান্তরিত হয়েছে। এই জনসমুদ্র প্রমাণ করে ৭ জানুয়ারি জনতার বিজয় হবে।’
নির্বাচনে আচরণবিধি মেনে চলায় প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সাধারণ যাত্রীর মতো বিমানের টিকিট কেটে গেছেন। সার্কিট হাউজের ভাড়া দিয়েছেন। জাতীয় পতাকা ব্যবহার করেননি।’