রেলে যারা আগুন দিয়ে মানুষ খুন করেছে, তাদের ক্ষমা নেই বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার বিকেলে বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে আওয়ামী লীগের আয়োজিত বিজয় শোভাযাত্রার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
এদিন বক্তব্যের মাধ্যমে বিজয় শোভাযাত্রা উদ্বোধন করেন ওবায়দুল কাদের। তার আগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু বিজয় র্যালির আনুষ্ঠানিকতা। দুপুর পৌনে দুইটায় বিজয় র্যালির মঞ্চে শুরু হয় দেশাত্মবোধক গান।
রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন থেকে বিজয় শোভাযাত্রাটি শুরু হয়। এ সময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তরসহ সহযোগী সংগঠনের নেতারা অংশ নেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অগ্নিসংযোগে চারটি তাজা প্রাণ ঝরে গেল। ইসরায়েল ফিলিস্তিনে যেভাবে মানুষ হত্যা করে সেই রকম দৃশ্য দেখতে পেলাম। তাদের ক্ষমা নেই।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি হচ্ছে স্বার্থের রক্ষক। যারা ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদ করে না, তারা ভোট নিয়ে ধর্মের কথা বলে। ২৮ অক্টোবর বিএনপি লাল কার্ড খেয়ে বিদায় নিয়েছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি ভুয়া! তাদের নেতা নেই, নির্বাচন ও আন্দোলন করবেন কাকে দিয়ে?’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা ভোটে বাধা দেবে, ভোটকেন্দ্রে আসতে বাধা দেবে, যারা নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করবে, তাদের প্রতিহত করে, পরাজিত করে বাংলাদেশের জনগণ ভোটের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে পঞ্চমবারের মতো বিজয়ের বন্দরে পৌঁছে দেবে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আজ মেয়েরা সুপ্রিম কোর্টের জাস্টিস, সচিবালয়ের সচিব। মেয়েরা যেখানেই যায় হয় ওসি, না হয় ইউএনও। সারা দেশের যেখানেই যান, সেখানেই হয় ডিসি না হয় এসপি। নারীদের এ সম্মান কে দিয়েছে? শেখ হাসিনা। তাই বাংলার পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও জেগেছে। তাই যারা বলেন- ৭ তারিখ ভোটার আসবে না, তাদের বলে দিলাম- সেদিন নারীদের চেয়ে পুরুষের উপস্থিতি বেশি হবে। ৭০ শতাংশ মানুষ শেখ হাসিনাকে ভোট দেবে। ১৮৯৬ জন ফাইনাল খেলায় অংশ নিচ্ছে।’
আওয়ামী লীগের এ বিজয় শোভাযাত্রায় অংশ নিতে দুপুর থেকেই নেতা-কর্মী জড়ো হতে থাকেন। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীর শাহবাগ থেকে শুরু করে মৎস্য ভবনকেও ছাড়িয়ে যায় নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি। ঢাকার বিভিন্ন আসনের নৌকার প্রার্থীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে শোভাযাত্রা অংশ নেন।
দুপুর আড়াইটায় বিজয় র্যালি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দুপুর একটার পরই বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানা থেকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আসতে শুরু করে।
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে আওয়ামী লীগের এ বিজয় শোভাযাত্রা শুরু হয়ে শাহবাগ ও সাইন্সল্যাব হয়ে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
সোমবার ১৯টি শর্তে মহানগর আওয়ামী লীগকে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ‘বিজয় শোভাযাত্রা’ করার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) অনুমতি দেয়।
গত ১৩ ডিসেম্বর ডিএমপিতে অনুমতি চেয়ে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ চিঠি দিয়েছিল। তবে কুয়েতের আমির শেখ নওয়াফ আল আহমদ আল জাবের আল সাবাহর মৃত্যুতে সোমবার দেশব্যাপী রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হয়। ফলে বিজয় শোভাযাত্রাটি একদিন পিছিয়ে তা সোমবারের পরিবর্তে মঙ্গলবার করার সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ।