শরিক এবং মিত্রদের জন্য ছেড়ে দেয়া আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী প্রত্যাহার করবে বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
রোববার আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় পার্টির সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে। কোনো অশোভন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। প্রার্থিতার বিষয়ে রোববার বিকেল চারটার মধ্যে সবকিছু চূড়ান্ত হবে।
তিনি বলেন, আজ প্রার্থী প্রত্যাহার করার শেষ দিন। আওয়ামী লীগ যতটা চাইবে ততোটা প্রত্যাহার করে নেব। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা চিঠির মধ্যে প্রার্থী করবেন। এটা জানার জন্য বিকেল ৪টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা আছে। আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে নিদিষ্ট সংখ্যক আসন ছাড় দেবে।
মন্ত্রী জানান, জাতীয় পার্টির নিজস্ব চাওয়া আছে, তাদেরকে নির্দিষ্ট সংখ্যক আসন ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। সেসব আসনে নৌকার প্রার্থী থাকবে না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের সাথে (জাতীয় পার্টি) আমাদের সমঝোতা আছে। কোনো প্রকার অশোভন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। শুধু ভাগাভাগির বিষয় না আমরা নির্বাচনসহ সামগ্রিক রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। বিএনপি নির্বাচন প্রতিরোধের ডাক দিয়েছে, সেখানে যেসব রাজনৈতিক দল নির্বাচন করছে তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকার বিষয়টিও আলোচনা স্থান পেয়েছে।
তিনি বলেন, আমি যতটুকু জানি আমাদের দলের পক্ষ থেকে একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক আসনে মীমাংসা বা সমঝোতায় হয়েছে, তেমন ধারণা জাতীয় পার্টিকে দেয়া হয়েছে। তাদেরও একটা চাওয়া আমাদের কাছে আছে। তাদের চাওয়া থাকতেই পারে। আমাদেরও দলেরও একটা সামর্থের ব্যাপার আছে, সেটা আমাদের নিজেদের সিদ্ধান্তের বিষয়।
জাতীয় পার্টি নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের জানান, এখন পর্যন্ত জাতীয় পার্টির নির্বাচনের থেকে সরে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা তারা দেখছেন না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপিসহ কয়েকটি দল নির্বাচনকে ভাগাভাগি বলছে। যে নির্বাচনে ২৮টি রাজনৈতিক দল ও প্রায় ২২ শ প্রার্থী আছে সে নির্বাচন কীভাবে ভাগাভাগির নির্বাচন হয়?
তিনি বলেন, নির্বাচনে সামনে রেখে কোনো কমিটির বিলুপ্ত করা হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। এই মুহূর্তে কোনো কমিটি বিলুপ্ত করার নির্দেশনা নেই। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমতি ছাড়া কেউ কমিটি বিলুপ্ত করলে তা বাতিল হবে না, গ্রহণযোগ্য হবে না। আমরা কাউকে কমিটি বিলুপ্ত করতে অনুমতি দেইনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন এগিয়ে চলছে। বিএনপি বলছে এই নির্বাচন ভাগাভাগির নির্বাচন। বিএনপি না আসলেও ২৮ টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। এটা কেন ভাগাভাগির নির্বাচন হবে। বিএনপি বলে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। কেন পদত্যাগ করতে হবে। পৃথিবীরর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে নির্বাচন হচ্ছে। পৃথিবীর কোনো দেশে সরকার পদত্যাগ করে নির্বাচন করার নজির নেই।
মন্ত্রী বলেন, বিএনপি ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে উদযাপন করতে গিয়ে পরাজয়ের দিবস বলে উপহাস করছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের দোষ আওয়ামী লীগ নির্বাচনে যাচ্ছে বিএনপি যাচ্ছে না। আওয়ামী লীগ সংবিধান মানছে, বিএনপি মানছে না। বিএনপি- জামায়াতে দেশে মধ্যে ষড়যন্ত্র করছে। আমরা নির্ভিকচিত্তে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। কেউ নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, কার্যনির্বাহী সদস্য শাহাবুদ্দিন ফরাজিসহ প্রমুখ।