গাইবান্ধায় ডিবিসি নিউজের ভিডিও জার্নালিস্ট মোকছেদুর রহমানকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পর রাস্তা অবরোধ করে কর্মসূচি পালন করা হয়।
শহরের এক নম্বর ট্র্যাফিক মোড়ে শনিবার বিকেল ৫টার দিকে এ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন গাইবান্ধার ক্যামেরা জার্নালিস্টদের সংগঠন ‘গাইবান্ধা ফটো অ্যান্ড ভিডিও জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন’।
কর্মসূচিতে তারা অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার শাস্তি দাবি করেন।
ট্র্যাফিক মোড়ে অবস্থান নেয়ার কারণে মোড়ের চারদিকের রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়, পরে জেলার পুলিশ সুপারের পক্ষে গাইবান্ধার গোয়েন্দা শাখার ওসি মোখলেছুর রহমানের অনুরোধে অবস্থান কর্মসূচি তুলে নেয়া হয়।
ওই সময় মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধান করতে আমরা আগামীকাল আলোচনা করব।’
কর্মসূচিতে উপস্থিত সাংবাদিকরা জানান, এর আগে একই দিন বেলা ১১টার দিকে গাইবান্ধার শাহ আব্দুল হামিদ স্টেডিয়ামে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে ছবি তোলার সময় গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন ওই সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করেন।
সাংবাদিক ও গাইবান্ধার স্থানীয় দৈনিক মাধুকরের স্টাফ রিপোর্টার আবু সায়েম বলেন, ‘সকালে গাইবান্ধার শাহ আব্দুল হামিদ স্টেডিয়ামে বিজয় দিবসের ডিসপ্লে প্রদর্শনের সময় অন্যদের মতোই ছবি নিচ্ছিলেন ডিবিসির ভিডিও জার্নালিস্ট মোকছেদুর রহমান।
‘ওই সময় হঠাৎ বি সার্কেলের আব্দুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিক মোকছেদুরের ট্রাইপড সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন এবং অশালীন ভাষায় কথা বলেন। এর প্রতিবাদ করলে তিনি মোকছেদুরকে ধাক্কা দেন ও লাথি মারতে চান। পরে উপস্থিত সাংবাদিকদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।’
মোকছেদুরের অভিযোগ, ‘আমিও সবার মতোই ছবি নিচ্ছিলাম। পেছন থেকে দেখা যাবে না বলে আমি বসে পড়ি। তার পরেও উনি (আব্দুল্লাহ আল মামুন) এসে আমার ট্রাইপড (ক্যামেরার স্ট্যান্ড) ধরে টান দেন এবং অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলেন ও গালিগালাজ করেন।
‘আমার সম্মান চরমভাবে খর্ব হয়েছে। তার সঙ্গে আমার কোনো শত্রুতা নেই বা তার সঙ্গে আমার কখনও কথাও হয়নি। আমি এর সঠিক বিচার চাই।’
এ ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন প্রেসক্লাব গাইবান্ধার সভাপতি খালেদ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক জাভেদ হোসেনসহ জেলা উপজেলার বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা।
প্রেসক্লাব গাইবান্ধার সভাপতি খালেদ হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি চরম অবমাননাকর। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। স্টেডিয়ামে আমাদের জন্য আলাদা কোনো স্পেস করা হয়নি। যেহেতু আমরা দায়িত্বপালন করতে গিয়েছি, কোনো না কোনোভাবে ছবি নিতেই হবে। কিন্তু সেখানে যদি একজন পুলিশ কর্মকর্তার হাতে লাঞ্ছিত হতে হয়, তাহলে সরকারি প্রোগ্রাম আমরা কাভার করব কীভাবে?’
এ বিষয়ে ডিবিসির গাইবান্ধা প্রতিনিধি রিকতু প্রসাদ জানান, যথাযথ প্রতিকার না পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ রকম কিছুই হয়নি। আমি তাকে ধাক্কা দেইনি বা কোনো গালিগালাজ করিনি। কেউ যদি এ রকমভাবে এখন বলে, কী আর করার থাকে!’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘আজকে অনেক লোকই মোবাইল, ক্যামেরা দিয়ে ছবি উঠাচ্ছিল। আমরা সবাইকে সরতে বলছিলাম। তার মধ্যে উনি (মোখছেদুর) স্ট্যান্ডসহ ক্যামেরা নিয়ে মাঝখানে গেছেন। তখন আমি তার স্ট্যান্ডটা ধরে সরতে বলেছি। কিন্তু উনি আমার সঙ্গে যেমন আচরণ করেছেন, কী আর বলব!’
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে গাইবান্ধার এসপি কামাল হোসেনের মোবাইলে কল করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।