বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা নামল ৯.৪ ডিগ্রিতে

  • প্রতিনিধি, পঞ্চগড়    
  • ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৩:৩৫

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা রোকন উদ্দিন জানান, জানুয়ারি মাসের পুরো সময়জুড়ে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে, সেই ক্ষেত্রে তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রির নিচে নেমে আসতে পারে।

আজ পৌষের প্রথম দিন। পঞ্চগড়ের শীতের রাজ্যে মহা দুর্ভোগের দুই মাস পৌষ ও মাঘ।

ঘন কুয়াশার সঙ্গে পাহাড় থেকে বয়ে আসা হিম বাতাস পঞ্চগড়ের মানুষরে স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে দুর্বিষহ করে তোলে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের।

জেলার তেঁতুলিয়ায় শনিবারের তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রির ঘরে বিরাজ করছে। সকাল ৭টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

প্রথম পৌষেই মাঝারি শৈত্য প্রবাহের প্রভাব পড়েছে জনজীবনে। সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত হালকা উষ্ণতা থাকছে। তার পর হিমালয় থেকে বাতাস বইতে শুরু হলে সন্ধ্যা হতেই হাটবাজারসহ রাস্তাঘাট হয়ে পড়ছে জনশূন্য।

এ অঞ্চলের সমতলের চা বাগানের শ্রমিকসহ নদী কেন্দ্রিক পাথর শ্রমিকরা নদীর ঠান্ডা পানিতে নামতে না পেরে তাদের জীবন জীবিকায় টান পড়ছে। জীবিকার তাগিদে নদীর পাড়ে বসে দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করে অবশেষে নদীর ঠান্ডা পানিতে নেমে পাথর সংগ্রহ করছেন।

তারা জানান, এখন শীতবস্ত্রের সঙ্গে শীতার্ত মানুষের মাঝে সরকারি খাদ্য সহায়তা দেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।

পঞ্চগড় স্টেডিয়ামের সামনে শীতের পিঠা বিক্রি করে অসুস্থ স্বামী ও সন্তানদের চালান কমলা বেগম।

তিনি জানান, খোলা আকাশের নিচে মাথায় পলিথিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি তার পিঠার দোকানে প্রতিদিন বিক্রি হয় এক থেকে দেড় হাজার টাকা। প্রথম প্রথম ভালো বিক্রি হলেও শীত বাড়তে থাকায় বেচা-কেনা বর্তমানে কমতে শুরু করেছে।

শহরতলীর হাফিজাবাদ ইউনিয়নের সহরত আলী, মুজিবর রহমান, আহাম্মদ নগর গ্রামের আবু তাহের সুফিয়ান সবাই অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালান, শহরের বিভিন্ন স্থানে কথা হয় তাদের সঙ্গে।

তাদের ভাষ্য, তীব্র শীতে যাত্রী কমে যাওয়ায় আয় কমে গেছে, কোনো কোনো দিন নিজের ঘর থেকে মালিকের জমা প্রদান করতে হয়। প্রতিবছর জানুয়ারি পর্যন্ত এমন অবস্থা থাকে।

ডিসেম্বরের শুরু থেকে এই জেলায় তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি থেকে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। পৌষের প্রথম দিনেই তাপমাত্রা নেমেছে এক অঙ্কের ঘরে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সারা পৌষে এবং মাঘে তাপমাত্রা আরও কমতে শুরু করবে। ৬ ডিগ্রির নিচে গড়িয়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ সৃষ্টি করবে। এবং টানা জানুয়ারি পর্যন্ত তীব্র শীতের প্রকোপ থাকবে।

হিমালয়ের অবস্থান খুব কাছে হওয়ার কারণে সন্ধ্যা হতেই পাহাড়ি হিমেল হাওয়া আছড়ে পড়ছে সীমান্তের এই জনপদে। ফলে জনজীবনে দুর্ভোগ বাড়ছেই।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ জানিয়েছে, টানা তীব্র শীতে গবাদি পশুর নানা রোগ দেখা দিয়েছে। গরু ছাগলের সর্দি, ডায়রিয়াসহ খুরা রোগ দেখা দিয়েছে।

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মেডিসিন ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ মাহবুব আলম জানান, শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বয়স্ক ও শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে নানা শীতজনিত রোগে। প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে অনেক শিশু।

এদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দরিদ্র শীতার্তদের জন্য পঞ্চগড়ের পাঁচটি উপজেলায় কিছু শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। নতুন করে শীতবস্ত্র বরাদ্দের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়ে বার্তা পাঠানো হয়েছে।

পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি এই দুই মাস পঞ্চগড়ের মানুষের জীবনে নেমে আসে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। তীব্র শীতে মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষদের সহায়তার বিষয়টি কঠিন হয়ে পড়ে।

‘আগামী দুমাস এ সব শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে সরকারিভাবে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। অসহায় মানুষদের খাদ্য সহায়তাসহ শীত মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা রোকন উদ্দিন জানান, জানুয়ারি মাসের পুরো সময়জুড়ে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে, সেই ক্ষেত্রে তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রির নিচে নেমে আসতে পারে।

এ বিভাগের আরো খবর