আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে এরই মধ্যে আসন ভাগাভাগি হয়ে গেছে অভিযোগ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, এটার নাম গণতন্ত্র হতে পারে না।
শনিবার সকাল ১০টার দিকে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান বিজয় দিবসে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন তিনি।
মঈন খান বলেন, আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ এই সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এই সরকারের নৈতিক পরাজয় ইতোমধ্যে হয়েছে। তারা একটি নির্বাচনের তফসিল দিয়েছে। কোন নির্বাচন? যে নির্বাচনে তারা প্রকাশ্যে লজ্জা ভুলে গিয়ে দর কষাকষি করে সিট ভাগাভাগি করছে। এটার নাম তো গণতন্ত্র হতে পারে না। যদি সিট ভাগাভাগি করে এমপি নির্ধারিত হয় তাহলে তো এই নির্বাচন ইতোমধ্যেই ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, এই নির্বাচনি ফলাফল কাগজে কলমে ঢাকায় লিখে ফেলেছে আওয়ামী লীগ। আগামী ৭ তারিখে শুধু সেই ফলাফল ঘোষণা দেবে তারা। কাজেই এটা কোনো নির্বাচন নয়। এই নির্বাচন দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে ধোঁকা দেয়া যাবে না।
মঈন খান বলেন, আজকে আমরা কেন বিজয় উদযাপন করতে আসছি তা বর্তমান সরকারকে তুলে ধরতে হবে। এটা কিসের বিজয়, এটা কি এক দলীয় শাসনের বিজয়, নাকি এক নায়কতন্ত্র শাসনের বিজয়? এখানে এমন একটি সরকার চলছে যারা মানুষকে কথা বলতে দেয় না, যারা মানুষকে ভোট দিতে দেয় না, যারা অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে।
তিনি বলেন, আজকে আওয়ামী লীগ এই দেশের কোটি কোটি মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে গণতন্ত্রের অপমৃত্যু ঘটিয়েছে। তারা চরম দূর্নীতির মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধংস করেছে।
মঈন খান বলেন, আজ ৫২ বছর পরে এসে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে এই প্রশ্ন করতে হবে যে, আওমী লীগ যদি দাবি করে তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি তাহলে আওয়ামী লীগকে জবাবদিহি করতে হবে কেন তারা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে জলাঞ্জলি দিয়ে বাংলাদেশের একদলীয় স্বৈরাচারী সরকার কায়েম করেছে।
তিনি বলেন, আমি আরও বলতে চাই, আমরা বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছি। বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষকে সম্পৃক্ত করেছি। আমরা শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাসী। বিএনপি লগি-বৈঠার রাজনীতি করে না। শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় এই দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো সেই কারণে রাজপথে আছি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, মিথ্যা মামলা, হামলা এবং ভুয়া গায়েবি মামলা দিয়ে তারা বিগত ৬ সপ্তাহে আমাদের ২৩ হাজার লোককে কারারুদ্ধ করেছে। এ সব ভুয়া মামলা দিয়ে আমাদের গণতন্ত্রকামী নেতা-কর্মীদের কারারুদ্ধ করে এই দেশে তারা থাকতে পারবে না।
তিনি বলেন, আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তারা রাজনৈতিক মামলা দিয়ে তারা কারারুদ্ধ করে রেখেছে। আমাদের মহাসচিব মির্জিা ফকরুল ইসলাম আলমগীরকে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে তারা এক এগারোর ভুয়া মামলা দিয়ে বিদেশে আটকে রেখেছে। তিনি দেশে ফিরতে পারছেন না৷
মঈন খান বলেন, আজকে বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে, তারা জানে যে, এই দেশে কোনো রকমের ধোঁকাবাজি করে কেউ সরকারে থাকতে পারবে না। আগামীতে ইনশাআল্লাহ আমরা শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে অপসারিত করে বাংলাদেশের গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার ফিরিয়ে আনবো।
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায়সহ নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।