বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মেডিক্যালে ভর্তির প্রশ্ন ফাঁসে এবার ইউপি চেয়ারম্যান

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১৯:৪৯

সিআইডির মুখপাত্র বলেন, গ্রেপ্তার সাজ্জাদ হোসেন দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ৩ নম্বর সিংড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। ২০১০ সাল থেকে তিনি প্রশ্নফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত। চক্রটির মাস্টার মাইন্ড জসীমের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী। সাজ্জাদ ২০১৭ সালের মেডিক্যাল প্রশ্নফাঁসের অন্য আরেকটি মামলারও এজাহারনামীয় আসামি।

মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় দিনাজপুরের এক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ও পাঁচ চিকিৎসকসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

দিনাজপুর, নীলফামারী ও ঢাকায় ১১ থেকে ১৩ ডিসেম্বর অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার প্রত্যেকেই মেডিক্যাল প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা জানিয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাজ্জাদ হোসেন, নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বিটস কোচিংয়ের পরিচালক মো. আবদুল হাফিজ ওরফে হাপ্পু, ডা. ফয়সাল আহমেদ রাসেল, মো. রায়হানুল ইসলাম সোহান, বকুল রায় শ্রাবণ, ডা. মো. সোহানুর রহমান সোহান, ড. তৌফকিুল হাসান রকি, ডা. ফয়সাল আলম বাদশা ও ডা. ইবরার আলম।

তাদের কাছ থেকে ৯টি মোবাইল ফোন, দুটি ল্যাপটপ, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক ও চেকবই, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড জব্দ করা হয়।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিআইডির মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান ঢাকায় গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছে থেকে চক্রের অন্য সদস্য ও অসাধু উপায়ে বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হওয়া অসংখ্যা শিক্ষার্থীর নাম পাওয়া গেছে। এর আগে এ চক্রের মাস্টারমাইন্ড জসীম উদ্দিন ভূইয়া মুন্নুর কাছে থেকে উদ্ধার হওয়া গোপন ডায়েরিথেকে সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা চক্রের সদস্যদের সন্ধান পায় সিআইডি। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকা, দিনাজপুর ও নীলফামারির বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে এই ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।

সিআইডির মুখপাত্র বলেন, গ্রেপ্তার সাজ্জাদ হোসেন দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ৩ নম্বর সিংড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। ২০১০ সাল থেকে তিনি প্রশ্নফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত। চক্রটির মাস্টার মাইন্ড জসীমের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী। সাজ্জাদ ২০১৭ সালের মেডিক্যাল প্রশ্নফাঁসের অন্য আরেকটি মামলারও এজাহারনামীয় আসামি।

তিনি বলেন, সাজ্জাদ উত্তরবঙ্গের অসংখ্য শিক্ষার্থীকে অনৈতিক উপায়ে মেডিক্যালে ভর্তি করিয়ে কোটি টাকার উপরে আয় করেছেন। আগে গ্রেপ্তার একাধিক আসামি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে সাজ্জাদের নাম বলেছেন এবং জসীমের গোপন ডায়রিতেও তার নাম ও ফোন নম্বর পাওয়া গেছে।

গ্রেপ্তার আবদুল হাফিজ ওরফে হাপ্পু নীলফামারির সৈয়দপুর উপজেলার বিটস নামের একটি কোচিং সেন্টারের পরিচালক। এ ছাড়াও তিনি একটি বেসরকারি হাসপাতালের মালিক। আগে গ্রেপ্তার ডা. জিল্লুর হাসান রনির মাধ্যমে প্রশ্ন পেয়ে দীর্ঘদিন ধরে তিনি তার কোচিংয়ের শিক্ষার্থীদের অনৈতিক উপায়ে মেডিক্যালে ভর্তি করিয়েছেন। ইতোমধ্যে তাদের বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে সনাক্ত করেছে সিআইডি।

গ্রেপ্তার ডা. সোহানুর রহমান সোহান বিট'স কোচিং সেন্টারের পরিচালক আবদুল হাফিজের কাছ থেকে ২০১৩ সালে প্রশ্ন পেয়ে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যালে ভর্তি হন। পরবর্তীতে বিসিএস স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হিসেবে পার্বতীপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগ দেন।

গ্রেপ্তার ডা. ফয়সাল আহমেদ রাসেল চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেনের মাধ্যমে ২০১০ সালে মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন পেয়ে জাতীয় মেধায় ১১তম স্থান লাভ করেন এবং ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন। এরপর যক্ষা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে দিনাজপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ে সার্ভেইলান্স মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে যোগ দেন। ডা. ফয়সাল পরবর্তীতে প্রশ্নফাঁস কারবারের সঙ্গেও জড়িয়ে পড়েন।

গ্রেপ্তার ডা. তৌফিকুল ইসলাম রকি আগে প্রেপ্তার ডা. জিল্লুর হাসান রনির গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী ছিলেন। তারা দুজনই রংপুর মেডিক্যাল থেকে পাশ করেছেন। সেই সুবাদে প্রশ্নফাঁসের কারবারে জড়িয়ে পড়েন। রকি বিট'স কোচিংয়েও ক্লাস নিতেন। রকি, হাপ্পু ও রনি মিলে বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে দেশের বিভিন্ন মেডিক্যালে ভর্তি করিয়েছেন। ডা. রনি তার ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ডা. রকির কথা বলেছেন।

সিআইডি আরও জানিয়েছে, রংপুর মেডিক্যাল কলেজ থেকে পাশ করা গ্রেপ্তার ডা. ইবরার আলমও ডা. জিল্লুর হাসান রনির সহযোগী ছিলেন। তার কথাও ডা. রনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছেন। ইবরার ২০১৩ ও ২০১৫ সালের ভর্তি পরীক্ষার আগের রাতে ডা. রনির মাধ্যমে প্রশ্ন পেয়ে বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে অর্থের বিনিময়ে তা সরবরাহ করেছিলেন। এদের অনেকেই বিভিন্ন মেডিক্যালে চান্স পেয়েছে।

গ্রেপ্তার রায়হানুল ইসলাম সোহান ও বকুল রায় শ্রাবণ দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার বাসিন্দা। দুজনই একই স্কুলে পড়ার সুবাদে ঘনিষ্ঠ ছিলেন। রায়হানুল ২০১৫ সালে তার এক মামার মাধ্যমে মেডিক্যালের ফাঁস হওয়া প্রশ্ন পায় এবং বকুলকে তা সরবরাহ করেন। বকুল তার ৪ ভর্তিচ্ছু ছোট ভাইয়ের কাছে সেই প্রশ্ন বিক্রি করেন। ৪ জনই দেশের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে চান্স পেয়েছেন।

পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তার ডা. সাইফুল আলম বাদশা ২০১০ সালে সাজ্জাদ হোসেনের মাধ্যমে প্রশ্ন পেয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন। এরপর প্রশ্নফাঁস ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। ২০১৩ এবং ২০১৫ সালে তিনি একাধিক শিক্ষার্থীকে প্রশ্নফাঁসের মাধ্যমে মেডিক্যালে ভর্তি করিয়েছেন।

এ বিভাগের আরো খবর