নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দর করতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রচার শুরুর পর থেকে ভোটের আগে পর্যন্ত রাজনৈতিক কর্মসূচির অনুমতি না দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে বলে মনে করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
বুধবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিন এ কথা জানান।
নির্বাচনের প্রচার শুরুর পর থেকে ভোটগ্রহণ পর্যন্ত যে কোনো দলের সভা, সমাবেশ ও রাজনৈতিক কর্মসূচির অনুমতি না দিতে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা সংবিধান পরিপন্থি কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনে যাতে ব্যাঘাত না হয়, সেজন্য নির্বাচন কমিশন তার অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে এটাই আমরা বুঝি। অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি (প্রধান নির্বাচন কমিশনার) যেটা মনে করেছেন, আমি মনে করি সেটা যথার্থই করেছেন। সুষ্ঠু, সুন্দর ও স্বাভাবিকভাবে যাতে নির্বাচন হয় আমার মনে হয় এজন্যই নির্দেশনাটা দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘এটা তো অতি সাধারণ বিষয়। একটা বিশেষ সময়, একটা নির্বাচন হতে যাচ্ছে। প্রতিটি দল যার যার প্রার্থী নিয়ে তাদের প্রচার চালাবে। সে সময় এই দল সেই দল মুখোমুখি হতেই পারে যাতায়াতের পথে। সেখানে যদি আবার আরেকটা নতুন দল নির্বাচন ছাড়া অন্য কথা বলে, সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন যেটা বলেছে ব্যাঘাত হতেই পারে।
‘সঠিক, সুন্দর ও নিরপেক্ষভাবে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানে উনি (সিইসি) যা যা বলছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী সেগুলো করবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এ নির্দেশনাকে সংবিধান পরিপন্থি মনে করেন কি না- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন তো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। তারা যখন একটি নির্দেশনা দিয়েছে, তারা সংবিধান দেখেই দিয়েছে। এখানে সংবিধান লঙ্ঘন হওয়ার কিছু নেই। আপনারা এ বিষয়ে আইনমন্ত্রীর কাছ থেকে আরও ভালো ব্যাখ্যা নিতে পারেন।’
নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলার অনেক বেশি অবনতি হতে পারে বলে মনে করছেন কি না- এ প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মোটেই অবনতি হবে না। অবনতির জন্য প্রচেষ্টা চলছে সেটাও আপনারা দেখছেন। জায়গায় জায়গায় বাস পুড়িয়ে দিচ্ছে, রেললাইন উঠিয়ে দিচ্ছে। সেখানে এগুলোকে স্বাভাবিক করার জন্য নির্বাচন কমিশন তাদের দৃষ্টিতে যেটা মনে হয়েছে সেটা ঘোষণা দিয়েছে।’
বিএনপি যাতে ১৮ ডিসেম্বরের পর সভা-সমাবেশ না করতে পারে সেজন্য এ সিদ্ধান্ত কী না- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা নির্বাচন কমিশনকে জিজ্ঞাসা করবেন। নির্বাচন কমিশন তো স্পষ্টই বুঝতে পারছে, তারা (বিএনপি) নির্বাচনে না এসে ধ্বংসের খেলায় নেমেছে।’
প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশন মঙ্গলবার রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বিধিনিষেধ দিয়ে এ সংক্রান্ত চিঠি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে পাঠিয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, ১৮ ডিসেম্বর থেকে ভোটগ্রহণ সমাপ্ত হওয়ার পূর্ববর্তী সময় পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ব্যতীত নির্বাচনী কাজে বাধা হতে পারে বা ভোটাররা ভোটদানে নিরুৎসাহিত হতে পারে এরূপ কোনো সভা-সমাবেশ বা অন্য কোনো প্রকার রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা থেকে সবাইকে বিরত রাখা বাঞ্ছনীয়।