সেলফি পরিবহনের বাসের চাপায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক শিক্ষার্থী রুবেল পারভেজ নিহতের ঘটনায় তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে আট লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরও ৫ লাখ টাকা দেয়া হবে এই পরিবারকে।
সোমবার রাতে সেলফি পরিবহনের পক্ষে আট লাখ দেয়া হয়। বাকি পাঁচ লাখ টাকা দেবে সরকার। তবে সরকারের পক্ষে এই টাকা কবে দেয়া হবে, তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সেলফি পরিবহন কর্তৃপক্ষ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হেল কাফিসহ কয়েকজন সোমবার ক্ষতিপূরণ নিয়ে আলোচনায় বসেন। পরে দীর্ঘ আলোচনা শেষে বাস কর্তৃপক্ষ থেকে ৮ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হয়।
এদিকে, গত পাঁচদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে ক্ষতিপূরণের দাবিতে সেলফি পরিবহনের ১৫টি বাস আটকে রেখেছিলেন শিক্ষার্থীরা। ৮ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ নিয়ে সোমবার রাতে বাসগুলো ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
রুবেল পারভেজ নিহতের ঘটনায় ক্ষতিপূরণ কী হবে এবং এ নিয়ে ব্যবস্থা কী নেয়া হবে সে বিষয়ের দায়িত্ব জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হেল কাফিকে।
তিনি বলেন, ‘সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) উপস্থিতিতে মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ৮ লাখ টাকা নগদ ক্ষতিপূরণ নিয়ে বিষয়টি সমাধান হয়েছে। আর সরকারি ফান্ড থেকে ৫ লাখ টাকা দেয়া হবে। ৮ লাখ টাকা নিহত রুবেলের ভাই এবং শ্যালকের কাছে দেয়া হয়েছে।’
সেলফি পরিবহনের ব্যবস্থাপক পরিচালক (এমডি) জালালউদ্দিন বলেন, ‘আমরা আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করেছি। নিহত রুবেলের বাচ্চার ভরণপোষণের দায়িত্বও নিয়েছি।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী রুবেল পারভেজ ৪১তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। গত বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ধামরাই থানা বাসস্ট্যান্ডে সেলফি পরিবহনের দুই বাসের রেষারেষিতে অপেক্ষারত বাস যাত্রীদের চাপা দেয়। এতে রুবেলসহ দুজন নিহত হন।
খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের একটি দল ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলাচলকারী সেলফি পরিবহনের অন্তত ২০টি বাস আটকে রাখেন। পরদিন শুক্রবার সকালে আরও পাঁচটিসহ মোট ২৫টি বাস আটক রাখা হয়। পরবর্তীতে ১০টি বাস ছেড়ে দেয়া হয়, ১৫টি বাস আটকে রাখা হয়। পরে ক্ষতিপূরণের দাবি নিয়ে সেলফি পরিবহন কর্তৃপক্ষ, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কয়েক দফা আলোচনায় বসে। শেষ পর্যন্ত আলোচনা শেষে ৮ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের বিনিময়ে বাসগুলো ছেড়ে দেয়া হয়।