মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেবিকা ও ওয়ার্ডবয়দের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে এক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানের লোকজনের বিরুদ্ধে।
সোমবার সকাল সাড়ে দশটার দিকের এ ঘটনায় বেশ কিছু আসবাবপত্রও ভাঙচুরের করা হয়েছে।
জানা গেছে, হাসপাতালে ভর্তি সদর উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিউর রহমানের আত্মীয় একই ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের আলী হোসেনের স্বজনদের ওয়ার্ড ভিজিটের সময় বাইরে অপেক্ষা করতে বললে আলী হোসেন ক্ষুব্ধ হয়ে কয়েকজনকে ফোন দেন। ওই সময় শ্যামপুর ইউপি চেয়ারম্যান মতির ছোট ভাইসহ বহিরাগত আট থেকে দশজন এসে ওয়ার্ডবয়, নার্স ও ডাক্তারদের ওপর চড়াও হয়। হামলায় আহত হন ওয়ার্ডবয় হিমেল, ওয়ার্ড মাস্টার সেলিমসহ কয়েকজন।
পরে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জামির মো. হাসিবুর সাত্তার ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন এবং সংক্ষুব্ধদের তার কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে কথা বলার ফাঁকে বহিরাগত আরও কয়েকজন সেখান থেকে বের হয়ে পাশে হাসপাতালের হিসাবরক্ষককের রুমে ভাঙচুর চালান। ওই সময় সিনিয়র স্টাফ নার্স বিউটি খাতুনসহ কয়েকজন সেবিকা ও ওয়ার্ডবয় লাঞ্ছিত হন। ঘটনার পর শ্যামপুর ইউপি চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করেন।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, ‘হাসপাতালে ওয়ার্ড ভিজিটের সময় এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা একটি নিয়মিত ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। এর বেশি আমি আর কিছু বলতে পারব না।’
শ্যামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি বলেন, ‘ঘটনার কথা শুনে আমি হাসপাতালে গেছিলাম। হাসপাতাল সুপারের সাথে কথা হয়েছে। ছোট একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল, সমঝোতার প্রক্রিয়া চলছে।’
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জামির মো. হাসিবুর সাত্তার বলেন, ‘মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে এ ধরনের ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটছে। তবে একজন জনপ্রতিনিধির আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ কাম্য নয়। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা আজকে যে তাণ্ডব চালিয়েছে এতে হাসপাতালের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। হাসপাতালের সব স্টাফ কর্ম বিরতিতে যেতে চাচ্ছে।
‘আমরা হাসপাতালের সব স্টাফ মিটিংয়ে বসে একটি সিদ্ধান্ত নেব। আগের ঘটনাগুলোতে পুলিশে অভিযোগ করে কোনো ফল পাওয়া যায়নি, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবার আদালতে মামলা করব।’
মেহেরপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ কনি মিয়া বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো অভিযোগ করেনি। আমি বাইরে থেকে ঘটনা শুনে ইন্সপেক্টরকে তদন্ত করতে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’