বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অবরোধে সিরাজগঞ্জে ৬ গাড়ি, আ. লীগের দুই কার্যালয়ে আগুন

  • প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জ   
  • ৮ ডিসেম্বর, ২০২৩ ২০:৩১

দুর্বৃত্তের আগুনে ৭ হাজার ৫০টি মুরগির বাচ্চা, গম বোঝাই ট্রাক এবং আওয়ামীলীগ কার্যালয়ের বিভিন্ন আসবাবপত্র পুড়ে গেছে। তবে মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানা যায়নি।

সরকারের পদত্যাগ, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল বাতিলের দাবিতে বিএনপি-জামায়াত ও সমমনা দলগুলো গত ২৮ অক্টোবর থেকে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪১ দিনে হরতাল ও অবরোধ চলাকালে সিরাজগঞ্জে ৬টি পণ্যবাহী ট্রাক, দুটি আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

দুর্বৃত্তের আগুনে ৭ হাজার ৫০টি মুরগির বাচ্চা, গম বোঝাই ট্রাক এবং আওয়ামীলীগ কার্যালয়ের বিভিন্ন আসবাবপত্র পুড়ে গেছে। তবে মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানা যায়নি।

শুক্রবার সিরাজগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল মান্নান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জেলা ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, গত ৩১ অক্টোবর জেলার রায়গঞ্জের চান্দাইকোনায় দাঁড়িয়ে থাকা গম বোঝাই একটি ট্রাকে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এ ছাড়া ৫ নভেম্বর শাহজাদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিসের পাশে পণ্যবাহী ট্রাক, ২০ নভেম্বর কামারখন্দ উপজেলার কোনাবাড়ী এলাকায় আরও একটি গম বোঝাই ট্রাক, ২৯ নভেম্বর নলকা এলাকায় সবজি বোঝাই পিকআপ ও ৩ ডিসেম্বর উল্লাপাড়ার নবগ্রাম এলাকায় করতোয়া কুরিয়ার সার্ভিসের পার্সেলবাহী একটি কাভার্ডভ্যানে আগুন দেয়া হয়। গত ২৮ অক্টোবর রাতে চৌহালীর এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের পর ৫ নভেম্বর ভোরে শাহজাদপুর উপজেলার হাবিবুল্লাহনগর ইউনিয়ের বাদলবাড়ীতে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আগুন দেয়া হয়। সবশেষ গত ৬ ডিসেম্বর রাতে শাহজাদপুরের টেটিয়ারকান্দা এলাকায় মুরগির বাচ্চাবাহী একটি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়।

৬টি পণ্যবাহী ট্রাক ও দুটি আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আগুনের ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে বেশি ক্ষতি হয়েছে মুরগির গাড়ি, গম বোঝাই ট্রাক ও কুরিয়ার সার্ভিসের পরিবহনে।

ক্ষতিগ্রস্ত ট্রাকের ড্রাইভার ও হেলপাররা বলেন, ‘হরতাল ও অবরোধের মধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি বের করি। যদিও মালিক নিষেধ করে, তার পরও বাহির হয়েছিলাম। বাড়িতে বউ বাচ্চা আছে, সংসার চালাতে হয়। ঘরে বসে থাকলে তো আর পেট ভরে না। শুধু পেটের দায়ে আমরা গাড়ি বের করার কারণে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধকারীরা আমাদের গাড়ি থেকে বের করে দিয়ে ট্রাকে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। ট্রাকের ক্ষতির পাশাপাশি আমাদেরও মারপিট করছে তারা। গাড়িতে আগুন দেয়ায় মালিকদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। এ সকল অন্যায়ের হাত থেকে কবে মুক্তি পাব আমরা!’

ট্রাকে কীভাবে আগুন দেয়া হয়েছে- জানতে চাইলে চালক আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘কুড়িগ্রাম থেকে সবজি বোঝাই করে মিনি ট্রাক নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার পথে নলকা এলাকায় পৌঁছালে বেশ কয়েকজন গাড়ির গতিরোধ করে। পরে আমি গাড়ি থেকে নেমে পড়ি। এ সময় আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় তারা।

‘খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু তারা আসার আগেই আগুনে ট্রাকটির কেবিন পুড়ে যায়। আগুনে পিকআপে থাকা সবজি নষ্ট হয়েছে। এ ঘটনায় আমি বাদী হয়ে মামলা করেছি।’

মুরগির গাড়িতে আগুন দেয়ার বিষয়ে চালক মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘ওইদিন রাতে গাজীপুর থেকে মুরগির বাচ্চাবাহী পিকআপ ভ্যানটি নিয়ে পাবনার দিকে যাওয়ার সময় উপজেলার দুর্গাদহ গ্যাস ফিলিং স্টেশন এলাকায় পৌঁছলে গাড়ি থামিয়ে আমাকে মারপিট করা হয়। এরপর গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় অবরোধকারীরা। এতে পিকআপ ভ্যানে থাকা সাত হাজার ৫০টি মুরগির বাচ্চা পুড়ে মারা গেছে। পরে আমি বাদী হয়ে মামলা করেছি।’

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুর মান্নান বলেন, ‘গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। গত ৪১ দিনে এ জেলায় ৬টি পণ্যবাহী গাড়ি ও দুটি আওয়ামী লীগ অফিসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ট্রাকে থাকা বিভিন্ন পণ্য। আগুন নির্বাপন করতে জেলার ৯টি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের জনবল কাজ করেছে।’

সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতার কারণে রাস্তাঘাটে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি বেড়েছে। প্রায় সবকিছুই স্বাভাবিক। যারা চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর সঙ্গে জড়িতদের অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আগামীতেও আইন-শৃঙ্খলা-সংক্রান্ত যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।’

এ বিভাগের আরো খবর