নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করে হেলিকপ্টারে চড়ে নির্বাচনি সভায় গিয়ে জরিমানা গুণতে হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) প্রার্থী জামাল রানাকে।
বুধবার তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার কোড্ডায় এক সভায় যান। এ সময় আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে তাৎক্ষণিক ওই প্রার্থীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
নির্বাচনি আচরণবিধির ৮ (গ) ধারায় বলা হয়েছে, নির্বাচনি প্রচার কাজে হেলিকপ্টার বা অন্য কোনো আকাশযান ব্যবহার করা যাবে না। তবে দলীয় প্রধান যাতায়াতের জন্য হেলিকপ্টার ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু যাতায়াতের সময় হেলিকপ্টার থেকে লিফলেট, ব্যানার বা অন্য কোনো প্রচারসামগ্রী প্রদর্শন বা বিতরণ করতে পারবেন না।
জামাল রানা সদর উপজেলার কোড্ডা এলাকার বাসিন্দা। তিনি কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির যুব সংহতির সহ-সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে বিএনএম থেকে এই আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি। বিএনএমের নির্বাচনি প্রতীক নোঙর।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেলা ১টার দিকে জালাল রানা হেলিকপ্টারে চড়ে সদর উপজেলার কোড্ডা মিতালী ফুটবল মাঠে নামেন। এ সময় তার কর্মী-সমর্থকরা জড়ো হয়ে তাকে অভ্যর্থনা জানান এবং গলায় ফুলের মালা পরান। পরে তিনি কোড্ডা রেললাইন এলাকায় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন।
বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, আমি কখনও লাঙ্গলকে ছাড়ি নাই, অথচ লাঙ্গল আমাকে ছেড়ে দিল। আপনারা কেউ ভাববেন না, ব্যক্তিগত ভালোর জন্য লাঙ্গল ছেড়ে নোঙরে এসেছি। আমি ৩৫ বছর ধরে লাঙ্গল করেছি। কিন্তু বারবার লাঙ্গলকে নিয়ে এই এলাকায় ধোঁকা দেয়া হয়েছে। এই জন্য নোঙর নিয়ে আমি আপনাদের মাঝে এসেছি।’
পরে তিনি কোড্ডা এলাকায় ভূঁইয়া বাড়িতে বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এলাকার লোকজনের সঙ্গে সভা করেন। সভায় এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার ভাই গত মঙ্গলবার ইতালি থেকে দেশে আসে। তাকে নিয়ে হেলিকপ্টারে এলাকায় আসি। হেলিকপ্টার আমাদের নামিয়ে ঢাকায় চলে যায়। আমার ভাই ইতালি থেকে হেলিকপ্টার ভাড়া করেছে। আমি তার সঙ্গে সহযোগী হিসেবে এলাকায় এসেছি। …. আপনি আচরণবিধি নিয়ে বলবেন, আমি জানি। আমি এলাকায় এলেই লোকজন জড়ো হয়।’
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সেলিম শেখ বলেন, ‘সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোশাররফ হোসেনকে আচরণবিধি দেখতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। বুধবার স্থানীয় একজন জামাল রানার আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে অভিযোগ করেন। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিকেল চারটার দিকে কোড্ডা এলাকায় পৌঁছে ওই প্রার্থীকে আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। এ ছাড়া তিনি আর আচরণবিধি লঙ্ঘন করবেন না বলে অঙ্গীকারনামা দিয়েছেন।’