বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অর্থের বিনিময়ে শেরপুর ছাত্রদলের কমিটি গঠনের অভিযোগ

  • প্রতিনিধি, শেরপুর   
  • ৫ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০৯

কোনো রকম আগাম ঘোষণা ছাড়াই জেলা ছাত্রদলের বর্তমান কমিটি বাদ দিয়ে নতুন কমিটি গঠন ঘিরে ক্ষোভে ফুঁসছে ছাত্রদলের একাংশের নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সোমবার সন্ধ্যা ছয়টায় সদ্য সাবেক কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ শওকত হোসেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

অর্থের বিনিময়ে শেরপুর জেলা ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠন করার অভিযোগ উঠেছে। আর এ অভিযোগ করেছেন খোদ জেলা বিএনপি সভাপতি মাহমুদুল হক রুবেল।

রোববার (৩ ডিসেম্বর) রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম সাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ৮ সদস্য বিশিষ্ট শেরপুর জেলা ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়।

কোনো রকম আগাম ঘোষণা ছাড়াই জেলা ছাত্রদলের বর্তমান কমিটি বাদ দিয়ে নতুন কমিটি গঠন ঘিরে ক্ষোভে ফুঁসছে ছাত্রদলের একাংশের নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সোমবার সন্ধ্যা ছয়টায় সদ্য সাবেক কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ শওকত হোসেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

জেলা ছাত্রদলের একটি সূত্র জানিয়েছে, ৩ ডিসেম্বর রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম সাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ৮ সদস্য বিশিষ্ট শেরপুর জেলা ছাত্রদলের একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে জেলা ছাত্রদলের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মো. নিয়ামুল হাসান আনন্দকে সভাপতি, মো. হাশেম আহম্মেদ সিদ্দিকীকে সিনিয়র সহ-সভাপতি, মো. জাহিদ হাসান টিটুকে সহ-সভাপতি, মো. নাঈম হাসান উজ্জলকে সাধারণ সম্পাদক, মির্জা ইমরুল কায়েস রিয়াদকে সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, মো. সাকিবুল হাসান তারা ও মো. মনির হোসেন শান্তকে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং মো. জাকির হোসেনকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়।

কমিটি প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই ফেসবুকে এর পক্ষে-বিপক্ষে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। পরে ওই কমিটি গঠনের প্রতিবাদে সন্ধ্যায় ফেসবুকে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন এবং গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠান সদ্য সাবেক কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ শওকত হোসেন।

বিজ্ঞপ্তিতে শওকত বলেন, ‘২০১৮ সালের ১২ জুলাই জেলা ছাত্রদলের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ২৭৯ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গঠনের পর থেকে সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে সাংগঠনিক দায়িত্ব ও কেন্দ্রঘোষিত সকল কর্মসূচি পালন করে আসছি। কমিটির দায়িত্ব পাওয়ার পর সকল থানা, শহর, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও কলেজ পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কলেজের সঙ্গে সঙ্গে ক্লাস কমিটিও করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশে নেতা-কর্মী নিয়ে অংশগ্রহণ করেছি, আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছি, আহত হয়েছি, মামলাও খেয়েছি। ঢাকায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে মিথ্যা দুটি মামলা দেয়া হয়েছে আমার নামে। ওইসব মামলার হুলিয়া মাথায় নিয়ে আত্মগোপনে থেকেও হরতাল-অবরোধ সফল করতে সশরীরে এবং নেতা-কর্মীদের দিয়ে প্রতিনিয়ত মিছিল, মশাল মিছিলে অংশগ্রহণ করছি। এরপরও শেরপুর জেলা ছাত্রদলের মতো একটি শক্তিশালী ইউনিটকে সুপরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দেয়ার জন্যই কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক স্বাক্ষরিত ৮ সদস্যবিশিষ্ট জেলা ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নতুন কমিটি গঠন সম্পর্কে জেলা বিএনপির সভাপতি মো. মাহমুদুল হক রুবেলসহ আমাকে বিন্দুমাত্র অবগত করা হয়নি। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হযরত আলীর একক সিদ্ধান্তে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা বিএনপির সভাপতির নেতৃত্বে আমরা যখন আন্দোলনে ব্যস্ত, তখন সাধারণ সম্পাদক হযরত আলীকে একদিনও প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। সকল পক্ষের নেতাদেরকে নিয়ে পদপ্রত্যাশী নেতা-কর্মীদের জীবনবৃত্তান্ত আহ্বান করে ছাত্রদলের কমিটি গঠন করলে এত মতবিরোধ থাকত না।’

দলের স্বার্থে জেলা বিএনপি ও স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মতামত নিয়ে ত্যাগী, পরিশ্রমী ও দক্ষ নেতৃত্ব দিয়ে জেলা ছাত্রদলের কমিটি গঠনে ওই বিজ্ঞপ্তিতে অনুরোধ জানান তিনি।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা বিএনপির একাধিক নেতা জানান, নতুন কমিটি গঠন করে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরির সময় এখন নয়। বরং সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনে মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। কমিটি গঠন করতে হলে আন্দোলনের পর নিয়মতান্ত্রিকভাবে গঠন করা যেত।

এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মো. মাহমুদুল হক রুবেল বলেন, ‘এই কমিটি সম্পর্কে আমি অবগত নই। আন্দোলনের সময়ে কমিটি দেয়াটা একেবারেই অনুচিত হয়েছে।

‘কমিটির সভাপতি শওকত শতভাগ অ্যাকটিভ একটা ছেলে। সব আন্দোলনেই তার সক্রিয় ভূমিকা থাকে। কোনো কারণ ছাড়াই কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। নতুন কমিটির সভাপতি ছাড়া আর কারোরই ছাত্রদলের কোনো অভিজ্ঞতা নেই। বিশেষ করে সাধারণ সম্পাদক যে হয়েছে, তাকে কেউই ভালো করে চেনে না। আমার মনে হয়, কমিটি সেন্ট্রাল থেকে টাকা দিয়ে করা হয়েছে। এই কমিটি থাকলে শেরপুরের আন্দোলন ব্যাহত হবে। সুতরাং এই কমিটি অবিলম্বে আমরা স্থগিত করা প্রয়োজন।’

আত্মগোপনে থাকায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. হযরত আলীর বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

এছাড়া নতুন কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।

এ বিভাগের আরো খবর