নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ কল্যাণের সাবেক ১০৬ কর্মীকে মুনাফার অংশ দিতে নির্দেশ দিয়ে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের দেয়া রায় বাতিল করে হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা দিয়েছে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার জজ আদালত রোববার এ আদেশ দেয়।
আদালত আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করে বিষয়টি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দিয়েছে। ওই দিন আপিল বিভাগে এ বিষয়ে শুনানি হবে।
আদালতে ১০৬ শ্রমিকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। আর গ্রামীণ কল্যাণের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ কল্যাণের সাবেক ১০৬ কর্মীকে মুনাফার অংশ দিতে নির্দেশ দিয়ে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের দেয়া রায় বাতিল করে গত বৃহস্পতিবার রায় দেয় বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
রায়ে হাইকোর্ট বলেছে, শ্রম আইনে গ্রামীণ কল্যাণের শ্রমিকরা লাভের অংশ পাবেন কি না, সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার এখতিয়ার কোনো শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের নেই। এ জন্য রায়টি বাতিল করা হলো।
এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন ১০৬ শ্রমিক, যার শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত আজ হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করে।
গ্রামীণ কল্যাণে ২০০৬ সাল থেকে ২০১৩ পর্যন্ত ১০৬ জন শ্রমিক বিভিন্ন পদে চাকরি করেন। তাদের কেউ কেউ অবসরে গেছেন। আবার কেউ কেউ চাকরিচ্যুত হয়েছেন, কিন্তু চাকরির পর প্রতিষ্ঠানটির মুনাফার কোনো অংশ তারা পাননি।
২০২১ সাল থেকে গ্রামীণ কল্যাণের মুনাফার অংশ শ্রমিকদের দেয়া হচ্ছে, যে কারণে এই শ্রমিকরা মুনাফার অংশ চেয়ে শ্রম আইনের ২৩১ ধারায় শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে মামলা (ব্যাখ্যামূলক) করেন।
এ মামলার শুনানি শেষে চলতি বছরের ৩ এপ্রিল রায় দেয় শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। রায়ে ট্রাইব্যুনাল আইন-বিধি অনুসারে ২০০৬ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত সময়ের মুনাফার অংশ দিতে নির্দেশ দেয়।
পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন প্রতিষ্ঠানটির এমডি। হাইকোর্ট আপিল শুনানি নিয়ে রায়টি কেন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে। পরে বিষয়টি আপিল বিভাগ পর্যন্ত গড়ায়।
আপিল বিভাগ দুই মাসের মধ্যে রুল নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টকে নির্দেশ দেয়। সে নির্দেশের আলোকে হাইকোর্ট রুলটি যথাযথ ঘোষণা করে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়টি বাতিল করে দেয়।