আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘যারা প্রকাশ্যে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে কর্মসূচি দিচ্ছে তাদের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমারা এবং দেশের তথাকথিত সুশীল সমাজ নীরব কেন?’
রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে বুধবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সূত্র: বাসস
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচনে বাধা দিতে হরতাল, অবরোধ, নাশকতা চালানোর পর তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে কেউ কথা বলছে না। তারা যা করছে এটা কী আন্দোলন? এটা তো নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করা।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনকে যারা বাধাগ্রস্ত করছে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আসার কথা। এসব যে চলছে, এ ব্যাপারে কারও কোনো কথা নেই। সভ্য গণতান্ত্রিক দেশ অনেক বিষয়ে কথা বলে। কিন্তু এখানে নীরব কেন?
‘যারা মানবাধিকারের কথা বলে, বাংলাদেশের সুশাসনের কথা বলে, যারা ফ্রি ফেয়ার নির্বাচনের কথা বড়গলায় বলে, তারা আজকে একটা পক্ষের এসব অপকর্ম, গণতন্ত্র ও সংবিধান বিরোধী কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে কেন নীরব। এটা নিয়ে তো কেউ কিছু বলছে না। তাদের ব্যাপারে তারা কেন নীরব? আমাদের দেশে যারা সুশীল সমাজ, যারা মানবাধিকারের কথা বলেন, তাদের কাছে আমার প্রশ্ন।’
বিএনপি কার বিরুদ্ধে অবরোধ করছে- এমন প্রশ্ন তুলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তারা হরতাল ডাকছে কার বিরুদ্ধে? এটা তো নির্বাচনের বিরুদ্ধে। নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে তারা এসব কর্মকাণ্ড করছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা শুনেছিলাম আন্তর্জাতিকভাবে, নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হবে এমন কোনো কর্মকাণ্ড হলে সেটা নির্বাচনবিরোধী কর্মকাণ্ড বলে বিবেচিত হওয়ার কথা। এখন তো সবাই নীরব। এখন কেউ কিছু বলে না। ইউরোপও কিছু বলে না, আমেরিকাও কিছু বলে না।’
প্রশ্ন তুলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘হরতাল-অবরোধকে কি কোনোভাবে ঢেকে রাখা যায়? পুলিশ হত্যাকে কি কোনোভাবে ঢেকে রাখা যায়?
‘প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা, গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করছে। এগুলো কী অন্ধকারে ঢেকে রাখা যাবে? এগুলো তো প্রকাশ্যে হচ্ছে।’
আওয়ামী লীগের এই দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা বলেন, ‘আজকের বিশ্বে এখানকার খবর সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে যেতে কতক্ষণ লাগে? এখানকার কোনো খবর ল্যাটিন আমেরিকার কোনো দেশ বা দক্ষিণ আফ্রিকার কোনো দেশে পৌঁছতে কি দেরি হচ্ছে? ওয়াশিংটনে পৌঁছতে কি দেরি হচ্ছে? এসব নিয়ে তো কোনো কথা আমরা শুনছি না।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যারা অপকর্ম ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা তো হবেই। আপনি প্রকাশ্যে পুলিশকে খুন করেছেন, সেটার সঙ্গে যে বা যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে না? তাদেরকে জেলে পাঠানো হবে না? এটা কোন সভ্য দেশে আছে?’
তিনি বলেন, একটি পক্ষ নিজেরাই নির্বাচনের বাইরে আছে। কেউ তাদেরকে বাইরে রাখেনি। আমরা বার বার বলে যাচ্ছি, আমরা চাই না কেউ নির্বাচনের বাইরে থাকুক।
‘নির্বাচন নিয়ে সংবিধানে একটি সময়সীমা আছে। সেই সময়সীমা অতিক্রম করে তফসিল পরিবর্তন আমরা কখনও সমর্থন করব না। সময়সীমাকে অতিক্রম করবে এমন কোনো পদক্ষেপ, এমন কোনো পরিবর্তন আমরা সমর্থন করব না।’
১৪ দলের শরিকদের আসন ছেড়ে দেয়ার ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘শরিক হলেই তাকে নমিনেশন দেয়া হবে না। নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার যোগ্য প্রার্থী না হলে শুধু শরিক বলেই কাউকে মনোনয়ন দেবে না আওয়ামী লীগ।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস এবং উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান উপস্থিত ছিলেন।