কুমিল্লার বরুড়ায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে শহীদ উল্ল্যাহ নামে এক ফার্নিচার ব্যবসায়ীকে হত্যার মামলায় চারজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক রোজিনা খান সোমবার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি হলেন কুমিল্লা বরুড়া উপজেলার পরানপুর গ্রামের ইউছুফ, বনি আমীন, ইউছুফের ভাতিজা সোলায়মান, ইউছুফের শ্যালক আবদুল হক। আর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ইউছুফের বড় বোন রজ্জবী বিবি।
মামলার বিবরণে জানা যায়, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ১৯৯৮ সালের ২১ মে দিনের বেলায় ফার্নিচার ব্যবসায়ী মো. শহীদ উল্ল্যাহর সঙ্গে আসামিদের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। ওই ঘটনার জেরে ওইদিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে আসামিরা ব্যবসায়ী শহীদ উল্ল্যাহকে পরানপুর বাজারের পশ্চিম পাশে ডেকে নিয়ে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। পরে স্বজনরা আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লায় হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই ও বরুড়া বিজরা মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মো. আমান উল্ল্যাহ বাদী হয়ে ১৯৯৮ সালের ২২ মে একই গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে মো. ইউছুফসহ ১৫ জনকে আসামি করে বরুড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পুলিশ আসামি মো. ইউছুফসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ১৯৯৯ সালের ৮ এপ্রিল একটি এবং ২০০৪ সালর ৩০ অক্টোবর আরেকটি সম্পূরক অভিযোগপত্র আদালতে জমা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আইনজীবী (এপিপি) মো. নূরুল ইসলাম এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘আশা করছি হাইকোর্ট এ রায় বহাল রেখে দ্রুত রায় বাস্তবায়ন করবেন।’
আসামিপক্ষের অ্যাডভোকেট আ. মমিন ফেরদৌস বলেন, ‘এ রায়ের কপি হাতে পেলে আসামিপক্ষ উচ্চ আদালতে আপিল করবে।’
এ ছাড়াও রাষ্ট্রপক্ষ নিযুক্ত কৌঁসুলির পাশাপাশি মামলার ব্যক্তিগত আইনজীবী ছিলেন কুমিল্লা বারের সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. মাসুদ সালাউদ্দিন ও অ্যাডভোকেট মো. আবু নাসের।
মামলায় ১৫ জন আসামির মধ্যে রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চারজন ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত একজন আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বাকিরা মামলার দায় থেকে অব্যাহতি পান। এরমধ্যে তিনজন আসামি মামলা চলাকালীন সময়ে মারা যান।