রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে মৌমিতা পরিবহনের একটি বাসে আগুনের ঘটনায় যুবদলের চার নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওয়ারী বিভাগ।
রোববার সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় ওই বাসে আগুন দেয়া হলে পাঁচ মিনিটের মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ২০ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সেক্রেটারি মো. দুলু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য মো. জয়নাল আবেদীন, মো. আব্বাস আলী ও মো. আব্দুল লতিফ বিপ্লব।
সোমবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, রোববার সন্ধ্যায় বিএনপি জামাতের ডাকা অবরোধে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় মৌমিতা পরিবহনের একটি বাসে আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটে। আগুন দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় যুবদলের চারজন নেতাকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে ডিবি।
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তার সবাই যুবদলের নেতা এটা তারা স্বীকার করেছেন। তাদের পদ পদবীও আছে। আবার তারা যে আগুনটা লাগিয়েছেন, তারা তাদের নেতা রবিউল ইসলাম নয়ন এবং অন্যান্য নেতাদের কাছে তার ছবি পাঠিয়েছেন।
ডিবিপ্রধান বলেন, কর্মীদের প্রতি বিএনপি নেতাদের নির্দেশ হলো, বাসে আগুন লাগাতে হবে এবং সেটা তাদের বড় ভাইদের পাঠাতে হবে। সেই নেতারা আবার তাদের বড় ভাইদের কাছে পাঠান। যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন তারা আরও কোথায় কোথায় আগুন লাগিয়েছেন, তা আমরা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করব। তাদের সঙ্গে আরও কে কে জড়িত তা জেনে সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
এত কিছুর পরও কেন বাসে আগুন দেয়া আটকানো যাচ্ছে না এই বিষয়ে তিনি বলেন, ঢাকা শহরের বিচ্ছিন্ন একটি জায়গায় ককটেল নিক্ষেপ করা বা একটা গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়া বিষয়টা জনমনে তেমন প্রভাব পড়ে না। সাময়িকভাবে হয়তো একটা প্রভাব পড়ে। এই কারণেই দেখা যাচ্ছে অবরোধেও ঢাকা শহরে যানজট। অবরোধ যে আছে সেটা বোঝাই যাচ্ছে না। বিচ্ছিনভাবে এসব ককটেল বিস্ফোরণ এবং বাসে আগুন দেয়ার ঘটনায় অনেককেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিএনপিকে বিস্ফোরক দ্রব্য কারা দিচ্ছে এ বিষয় নিয়ে ডিবিপ্রধান বলেন, কয়েকদিন আগে যুবদলের নেতা আবু সাইদ মিন্টুকে গ্রেপ্তার করার পর আমাদের কাছে এবং আদালতেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন যে, যুবদলের নেতারাই এসব ককটেলগুলো বানাচ্ছেন। কুমিল্লা থেকে এবং সীতাকুণ্ড থেকে তারা এসব ককটেলের উপাদান নিয়ে আসেন।
তিনি বলেন, আর এসবের জন্য টাকা দেন যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি- সাধারণ সম্পাদক। আর যুবদলের দুই কেন্দ্রীয় নেতা এসব ককটেল বানান। এরপর তারা ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় এগুলো সরবরাহ করেন। এসবের সঙ্গে জড়িত অনেকের নাম আমরা পেয়েছি। তাদের সবাইকেই গ্রেপ্তার করা হবে।