অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় তিন বছর কারাদণ্ড প্রাপ্ত রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদকে হাইকোর্টের দেয়া ছয় মাসের জামিন বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বোরহান উদ্দিনসহ পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে হাইকোর্টে থাকা মামলাটি তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আদালতে সাহেদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহ মনজুরুল হক আর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
এর আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের হাইকোর্টের একক বেঞ্চ তাকে জামিন দেন। পরে এ জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ আজ এ আদেশ দেন।
বিচারিক আদালতের তিন বছর কারাদণ্ডেরর বিরুদ্ধে আপিল শুনানির জন্য গত ৪ সেপ্টেম্বর গ্রহণ করে অর্থদণ্ড স্থগিত করে হাইকোর্ট। এবং জামিন আবেদনের শুনানির জন্য মুলতবি রাখে। ১৪ সেপ্টেম্বর তাকে জামিন দেয়া হয়।
গত ২১ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭-এর বিচারক প্রদীপ কুমার ওই রায় দেন। রায়ে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ৬০ কর্মদিবসের মধ্যে জরিমানার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
সাহেদের বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগ গঠন করা হলে ২০০৪ সালের দুদক আইনের ২৬(২) ধারায় এ দণ্ড দেয়া হয়। তবে ২৭(১) ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দেয়া হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন সাহেদ।
২০২০ সালের ১৫ জুলাই সাহেদকে সাতক্ষীরা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এর পর তার নামে প্রতারণা, অনিয়মের নানা অভিযোগ সামনে আসতে থাকে। পরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাহেদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা হয়।
কারাগারে থাকাকালে ২০২০ সালের ৫ নভেম্বর সম্পদের হিসাব চেয়ে সাহেদকে নোটিশ পাঠায় দুদক। নোটিশে ২১ কার্যদিবসের মধ্যে তাকে সম্পদের বিবরণী জমা দিতে বলা হয়। বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে তিনি সম্পদ বিবরণী জমা না দেয়ায় অতিরিক্ত আরও ১৫ কার্যদিবস সময় দেয়া হয়। সাহেদ তা জমা দেননি।
এর পর সম্পদের হিসাব না দেয়া ও অবৈধভাবে এক কোটি ৬৯ লাখ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০২১ সালের ১ মার্চ দুদকের উপপরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী বাদী হয়ে দুদকের ঢাকা জেলা সমন্বিত কার্যালয়-১ এ মামলা করেন।
গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি দুদক আদালতে চার্জশিট জমা দেয়। এরপর ১৭ জুলাই সাহেদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
এ মামলা ছাড়াও তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনের একটি মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা ভোগ করছেন।