দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনের জন্য ২৯৮টি আসনে রোববার দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। কুষ্টিয়া-২ ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেনি দলটি।
ঘোষিত আসনে একাদশ জাতীয় সংসদের এমপিদের বাদ দিয়ে নতুন প্রার্থীদের মনোনয়ন, জোটের শরিকদের আসনে নিজেদের প্রার্থী মনোনয়নসহ শতাধিক আসনে পরিবর্তন এসেছে।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে রোববার বিকেলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
দলীয় মনোনয়নে পরিবর্তন এসেছে যেসব আসনে
পঞ্চগড়-১ আসনে প্রথমবারের মতো মনোনয়ন পেয়েছেন মো. নাঈমুজ্জামান ভূঁইয়া মুক্তা। ঠাকুরগাঁও-২ আসনে মাজহারুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে ইমদাদুল হক, নীলফামারী-৩ আসনে মো. গোলাম মোস্তফা, নীলফামারী-৪ আসনে জাকির হোসেন বাবুল ও লালমনিরহাট-৩ আসনে মতিয়ার রহমান আগের প্রার্থীদের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন।
রংপুর-১ আসনে প্রথমবারের মতো মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাজু। রংপুর-৩ এ তুষার কান্তি মণ্ডল মনোনয়ন পেয়েছেন, যিনি রংপুর মহানগর আওয়ামী লগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। রংপুর-৫ এ এবারই প্রথম রাশেক রহমান মনোনয়ন পেয়েছেন।
কুড়িগ্রাম-২ আসন মো. জাফর আলী ফিরে পেলেও কুড়িগ্রাম-৩ এ সোমেন্দ্র প্রসাদ পান্ডে, কুড়িগ্রাম-৪ এ বিপ্লব হাসান নতুন মনোনয়ন পেয়েছেন। বিপ্লব ছাত্রলীগের সাবেক আইনবিষয়ক সম্পাদক। আর সৌমেন্দ্র পাণ্ডে সাবেক এক মন্ত্রীর জামাতা।
গাইবান্ধা-১ আসনে আফরুজা বারী, গাইবান্দা-৪ আসনে আবুল কালাম আজাদ ফিরে এসেছেন। বগুড়া-২ আসনে তৌহিদুর রহমান মানিক, বগুড়া-৩ আসনে সিরাজুল ইসলাম খান রাজু, বগুড়া-৪ আসনে হেলাল উদ্দিন কবিরাজ নতুন মনোনয়ন পেয়েছেন।
বগুড়া-৫ আসনে মজিবুর রহমান (মজনু) ফিরেছেন। বগুড়া-৭ আসনে মোস্তফা আলম, নওগাঁ-৩ আসনে সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্ত্তী, নওগাঁ-৪ আসনে নাহিদ মোর্শেদ, রাজশাহী-২ আসনে মোহাম্মদ আলী, রাজশাহী-৩ আসনে আসাদুজ্জামান আসাদ, রাজশাহী-৪ আসনে আবুল কালাম আজাদ, রাজশাহী-৫-এ আবদুল ওয়াদুদ, সিরাজগঞ্জ-২ আসনে জান্নাত আরা হেনরী, সিরাজগঞ্জ-৪ আসনে শফিকুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে চয়ন ইসলাম, পাবনা-৪-এ গালিবুর রহমান শরীফ, মেহেরপুর-২ আসনে আবু সালেহ মোহাম্মদ নাজমুল হক, ঝিনাইদহ-৩ আসনে সালাহ উদ্দিন মিয়াজী মনোনয়ন পেয়েছেন।
যশোর-২ আসনে মো. তৌহিদুজ্জামান নতুন মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদের জামাতা। যশোর-৪ আসনে এনামুল হক বাবুল, মাগুরা-১ আসনে সাকিব আল হাসান, বাগেরহাট-৪ আসনে এইচ. এম বদিউজ্জামান সোহাগ প্রথমবার মনোনয়ন পেয়েছেন।
খুলনা-১ আসনে ননী গোপাল মন্ডল ফিরেছেন। আর খুলনা-৩ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন এস এম কামাল হোসেন।
বরগুনা-২ আসনে সুলতানা নাদিরা, বরিশাল-৪ আসনে শাম্মী আহমেদ, পিরোজপুর-৩ আসনে আশরাফুর রহমান, টাঙ্গাইল-৩ আসনে কামরুল হাসান খান এবং টাঙ্গাইল-৫ আসনে মামুন-অর-রশিদ প্রথমবারের মতো দলের মনোনয়ন পেয়েছেন।
জামালপুর-১ আসনে নুর মোহাম্মদ, জামালপুর-৪ আসনে মাহবুবুর রহমান, জামালপুর-৫ আসনে আবুল কালাম আজাদ পেয়েছেন নতুন মনোনয়ন।
ময়মনসিংহ-৩ আসনে নিলুফার আনজুম, ময়মনসিংহ-৪ আসনে মোহাম্মদ মোহিত উর রহমান, নেত্রকোনা-৫ আসনে আহমদ হোসেন, কিশোরগঞ্জ-২ আসনে আবদুল কাহার আকন্দ, মানিকগঞ্জ-১ আসনে আবদুস সালাম দল থেকে প্রথমবারের মতো টিকেট পেয়েছেন।
শেরপুর-৩ আসনে এডিএম শহিদুল ইসলাম, ময়মনসিংহ-৫ আসনে আবদুল হাই আকন্দ, ময়মনসিংহ-৮ আসনে আবদুছ ছাত্তার, ময়মনসিংহ-৯ আসনে আবদুস সালাম, নেত্রকোনা-১ আসনে মোশতাক আহমেদ রুহী, কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে নাসিরুল ইসলাম খান, মুন্সিগঞ্জ-১ আসনে মহিউদ্দিন আহমেদ মনোনয়ন ফিরে পেয়েছেন।
ঢাকা-৫ আসনে হারুনর রশীদ মুন্না, ঢাকা-৬ আসনে সাঈদ খোকন, ঢাকা-৭ আসনে সোলায়মান সেলিম, ঢাকা-১০ আসনে চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ, ঢাকা-১১ আসনে ওয়াকিল উদ্দিন, ঢাকা-১৪ আসনে মাইনুল হোসেন খান নিখিল, গাজীপুর-৩ আসনে রুমানা আলী, নরসিংদী-৩ আসনে ফজলে রাব্বি খান, ফরিদপুর-৩ আসনে শামীম হক, সুনামগঞ্জ-২ আসনে চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, সুনামগঞ্জ-৪ আসনে মোহাম্মদ সাদিক, মৌলভীবাজার-২ আসনে শফিউল আলম চৌধুরী সবাই নির্বাচনের রাজনীতিতে নতুন মুখ।
ঢাকা-১৩ আসনে জাহাঙ্গীর কবির নানক, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে আব্দুল্লাহ আল কায়সার, ফরিদপুর-১ আসনে আবদুর রহমান, সুনামগঞ্জ-১ আসনে রনজিত চন্দ্র সরকার, সিলেট-২ আসনে শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট-৫ আসনে মাসুক উদ্দিন আহমদ, মৌলভীবাজার-৩ আসনে জিল্লুর রহমান, হবিগঞ্জ-১ আসনে মুশফিক হুসেন চৌধুরী, হবিগঞ্জ-২ আসনে ময়েজ উদ্দিন শরীফ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনে ফয়জুর রহমান আগের আসনে মনোনয়ন ফিরে পেয়েছেন।
কুমিল্লা-১ আসনে আবদুস সবুর, কুমিল্লা-৮ আসনে আবু জাফর মোহাম্মদ শফি উদ্দিন, চাঁদুপর-১ আসনে সেলিম মাহমুদ, ফেনী-১ আসনে আলাউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী, লক্ষীপুর-৪ আসনে ফরিদুন্নাহার লাইলী, চট্টগ্রাম-১ আসনে মাহাবুব উর রহমান, চট্টগ্রাম-২ আসনে খাদিজাতুল আনোয়ার এবং কক্সবাজার-১ আসনে সালাহ উদ্দীন আহমদ নতুন প্রার্থী।
গত ২৩ নভেম্বর থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে দলটির সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় আসন্ন নির্বাচনের দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেতে ৩০০ আসনের বিপরীতে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপত্র কেনেন তিন হাজার ৩৬৯ জন। প্রতি আসনে গড়ে ১১ জন মনোনয়নপত্র কেনেন।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৭ জানুায়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। এ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ আগামী ৩০ নভেম্বর।