বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দুদকের চোখে ‘অযোগ্য’ ব্যক্তি বসলেন প্রধান প্রকৌশলীর চেয়ারে

  • প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়   
  • ২৩ নভেম্বর, ২০২৩ ২০:০৫

২০২১ সালে চবির দ্বিতীয় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের দরপত্র মূল্যায়ন অনুসন্ধানে অযোগ্যতা ও অদক্ষতার প্রমাণ পাওয়ায় মোল্যা খালেদ হোসেনসহ আরও দুই জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্তৃক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তবে আড়াই বছরেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করে উলটো তাকে নতুন করে বসানো হয়েছে প্রধান প্রকৌশলীর চেয়ারে।

বিতর্কিত ব্যক্তিকে প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্ব দেয়ায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শুরু হয়েছে সমালোচনা। প্রকৌশলী ছৈয়দ জাহাঙ্গীর ফজলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে প্রকৌশলী মোল্যা খালেদ হোসেনকে নতুন করে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

তবে নতুন প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মোল্যা খালেদ হোসেনকে নিয়ে রয়েছে বিতর্ক। ২০২১ সালে চবির দ্বিতীয় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের দরপত্র মূল্যায়ন অনুসন্ধানে অযোগ্যতা ও অদক্ষতার প্রমাণ পাওয়ায় মোল্যা খালেদ হোসেনসহ আরও দুই জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্তৃক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তবে আড়াই বছরেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করে উলটো তাকে নতুন করে বসানো হয়েছে প্রধান প্রকৌশলীর চেয়ারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, প্রকৌশল দপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ছৈয়দ জাহাঙ্গীর ফজলকে ২০২১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর থেকে সাময়িকভাবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্ব দেয়া হয়। গত ২০ নভেম্বর তাকে ওই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে প্রকৌশল দপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোল্যা খালেদ হোসেনকে দায়িত্ব দেয়া হয়।

দুদকের নথি ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, দ্বিতীয় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ ভবনের নির্মাণ প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে দুদক। দুদকের অনুসন্ধানে বর্ণিত প্রকল্পের কার্যাদেশ প্রাপ্তিতে প্রস্তাবনা, জালিয়াতি ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়।

এ ছাড়া অভিযোগ-সংশ্লিষ্ট জিকেবি অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম কিবরীয়া শামীম, দি বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুল করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (চট্টগ্রাম-২) মামলা করে।

এর সঙ্গে দরপত্র মূল্যায়ন অনুসন্ধানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আবু সাঈদ হোসেন, প্রকৌশল দপ্তরের সহকারী রেজিস্ট্রার মাহবুব আলম এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোল্যা খালেদ হোসেনের অযোগ্যতা ও অদক্ষতার প্রমাণ পায় দুদক। ফলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন।

এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিবকে চিঠি দেয় দুদক। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চিঠির একটি অনুলিপি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছেও পাঠানো হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এদিকে ছৈয়দ জাহাঙ্গীর ফজলকে আপাতদৃষ্টিতে কোনো কারণ ছাড়াই প্রধান প্রকৌশলীর পদ থেকে অপসারণ করলেও ৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সোলার প্যানেল প্রকল্পের টেন্ডার এর নেপথ্যে রয়েছে বলে প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা গেছে।

চবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল হক বলেন, ‘জাহাঙ্গীর ফজল সাহেবকে সৎ ও সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে জানি। হয়তো উনাকে দিয়ে প্রশাসনের খেয়াল-খুশিমতো কাজ আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই নিজেদের মতো কাজ করিয়ে নিতে অযোগ্যতা ও অদক্ষতার অভিযোগে অভিযুক্ত লোককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নুর আহমদ বলেন, ‘আমি তখন দায়িত্বে ছিলাম না। তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। তবে উনাকে (মোল্যা খালেদ) সাময়িকভাবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি দিয়েই আমরা স্থায়ীভাবে প্রধান প্রকৌশলী নিয়োগ দেব।’

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সে সময়ে দায়িত্বে থাকা ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মনিরুল হাসান বলেন, ‘দুদকের চিঠির কপি আমরা পেয়েছিলাম। আমি দায়িত্বে থাকাকালে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি মেন্ডেটরি ছিল না।’

এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারকে কল দিয়েও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।

এ বিভাগের আরো খবর