বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মামলার দাবিতে লাশ নিয়ে থানায় পরিবার, পুলিশের অসদাচরণ

  • প্রতিনিধি, সাভার (ঢাকা)   
  • ২১ নভেম্বর, ২০২৩ ২২:৪০

রেগে গিয়ে এসআই নূর খান বলেন, ‘চারতলা ভবনের ছাদ থেকে ওই মেয়েটা পড়ে মারা গেছে। আমি তদন্ত করছি; সিসিটিভি ফুটেজ নিয়া আসছি। সাংবাদিকরা ১৪ বছরেও পারব এটা কালেক্ট করতে? আমি সাংবাদিকতায় পিএইচডি করছি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থাইকা। আমি সাংবাদিকগো তথ্য দেই না।’

সাভারের আশুলিয়ায় কলেজপড়ুয়া এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মামলার দাবিতে থানায় লাশ নিয়ে হাজির হয়ে পুলিশের অসদাচরণের শিকার হয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার। তাদের অভিযোগ, পুলিশ মামলা না নিয়ে নানা গড়িমসি করছে। এমনকি তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার সামনে তাদের অনেকের সঙ্গেই অসদাচরণ করেছেন।

অভিযোগ পেয়ে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করতে গিয়ে পুলিশের রোষানলে পড়তে হয়েছে নিউজবাংলা প্রতিনিধিরও।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাভারের আশুলিয়া থানার সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত রিয়া আক্তার আশুলিয়ার গাজীরচট এলাকার মনির হোসেনের মেয়ে। ২০ বছর বয়সী রিয়া সাভার লিজেন্ড কলেজের থেকে আসন্ন এইচএসসি পরিক্ষার্থী ছিলেন।

নিহতের বোন কেয়া আক্তার বলেন, ‘গতকাল (সোমবার) আমার বোনকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায় কাউছার নামের একটা ছেলে। কাউছার আমার বোনের সঙ্গেই লিজেন্ড কলেজে পড়াশোনা করে। সম্ভবত ওই ছেলের সঙ্গে আমার বোনের রিলেশন (প্রেমের সম্পর্ক) ছিল। পরে রিয়াকে এনামে (এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল) ভর্তি করা হয়েছে বলে আমাদের ফোন করে জানায় কাউছারের সঙ্গীরা।’

তিনি বলেন, ‘ওরা আমার বোনকে হাসপাতালের মেঝেতে ফেলে রেখেই পালিয়ে যায়। পরে চিকিৎসক গতকাল বিকেলে রিয়া মারা গেছে বলে আমাদের জানায়।’

এ ঘটনার পর থেকেই তারা আশুলিয়া থানার এসআই নূর খানের সঙ্গে মামলা করার জন্য যোগাযোগ করে চলেছেন বলে জানান কেয়া আক্তার। তবে পুলিশের এ কর্মকর্তা মামলা না নিয়ে গতকাল থেকে তাদের ঘোরাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন কেয়া। বলেন, ‘সিসিটিভি ফুটেজ কালেক্ট করব, তদন্ত করছি- এসব বলে মামলা নিতে গড়িমসি করছেন এসআই নূর। উপায় না পেয়ে আজ লাশ নিয়েই থানায় এসেছি।’

লাশ বহনকারী মাইক্রোবাসের চালক মাহফুজ হাসান বলেন, ‘আমি থানার সামনে লাশের গাড়ি নিয়ে দাঁড়ায় ছিলাম। হঠাৎ এসআই নূর খান এসে আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। এ সময় তিনি আমাকে হুমকি দিয়ে লাশ নিয়ে দ্রুত চলে যেতে বলেন।’

‘একজন পুলিশের কাছে এরকম আচরণ আশা করিনি। আমি তো লাশ নিয়ে এসেছি। এখানে আমার কী দোষ?’, বলেন মাহফুজ।

থানায় উপস্থিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিহতের এক স্বজন অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা থানায় লাশ নিয়ে আসছি শুনে এসআই নূর খান সন্ধ্যায় এখানে আসেন। এরপর আমাদের অ্যাম্বুলেন্সের চালকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে লাশ নিয়ে যেতে বলেন। আমাদের সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেন তিনি। লাশ নিয়ে থানায় আসার বুদ্ধি আমাদের কে দিয়েছে- সে বিষয়েও রাগান্বিতভাবে জানতে চান। পরে ‘মামলা হবে’ বলে আমাদের রাইটারের কাছে নিয়ে যান। এখনও আমরা সেখানেই আছি।’

এদিকে থানার সামনে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সের চালকের সঙ্গে এসআই নূর মোহাম্মদ খানের অসদাচরণের ভিডিও নিউজবাংলার হাতে এসেছে। ওই সময় নিহতের স্বজনদের সঙ্গেও তার খারাপ আচরণের ঘটনা ভিডিওতে প্রতীয়মান।

এসআই নূরের কাছে নিউজবাংলা ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে এ প্রতিবেদকের সঙ্গেও অসদাচরণ করেন এসআই নূর খান।

রেগে গিয়ে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘চারতলা ভবনের ছাদ থেকে ওই মেয়েটা পড়ে মারা গেছে। আমি তদন্ত করছি; সিসিটিভি ফুটেজ নিয়া আসছি। সাংবাদিকরা ১৪ বছরেও পারব এটা কালেক্ট করতে? আমি সাংবাদিকতায় পিএইচডি করছি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থাইকা। আমি সাংবাদিকগো তথ্য দেই না। মামলা হবে গতকালই সিদ্ধান্ত হইছে।’

আশুলিয়া থানার ওসি এসএম কামরুজ্জামান বলেন, ‘এ ঘটনায় তো মামলা হচ্ছে! আপনাদের (সাংবাদিকদের) সঙ্গে অসদাচরণের বিষয়টা আমি দেখছি।’

এ বিভাগের আরো খবর