একটি শক্তি লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, জনগণকে হত্যা করে তাদের লাশের ওপর পা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার চিন্তা যারা করে তাদের মতো অমানবিক আমি আর কোথাও দেখি না।
সশস্ত্র বাহিনী দিবসে মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে কেন মারে সেটাই আমার কাছে প্রশ্ন। আর এই যে সাধারণ মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে মারা, বাসে আগুন দেয়া, রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করা- এটা কী কারণে তা আমার কাছে এখনও বোধগম্য নয়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা একটার পর একটা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছি। যেমন, কোভিড-১৯ মোকাবিলা করলাম। এছাড়া অগ্নিসন্ত্রাস থেকে শুরু করে নানা ধরনের ঝামেলা মাঝে মাঝে শুরু হয়।
‘বাংলাদেশ শান্তির দেশ। মানুষ যখন একটু শান্তিতে ছিল, স্বস্তিতে ছিল, একটা আশার আলো দেখছিল, সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক সেই সময়ে অগ্নিসন্ত্রাস, হরতাল, অবরোধ মানুষের জীবনটাকে আবার ব্যাহত করছে; একটা শঙ্কার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে কষ্টের বিষয়।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘এটাই চাই- যারা এগুলো করছে তাদের অন্তত একটু আক্কেল-ঠিকানা আসুক। এভাবে ধ্বংসাত্মক কাজ না করে গণতান্ত্রিক ধারায় যোগ দিক, জনগণের ওপর আস্থা রাখুক, বিশ্বাস রাখুক।’
তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই। শুধু দেশের অভ্যন্তরে নয়, আমরা আঞ্চলিক এবং সারা বিশ্বে শান্তি চাই। আমাদের পররাষ্ট্রনীতি অত্যন্ত সুস্পষ্ট- সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়।’
দেশকে আরও এগিয়ে নিতে চান জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘বাবা-মা, ভাই সব হারিয়েছি। আমার হারাবারও কিছু নেই, পাওয়ারও কিছু নেই। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের জন্য যেহেতু আমার বাবা সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন এই বাংলাদেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘পরিকল্পনা মোতাবেক কাজ করে আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের যাত্রা শুরু হবে ২০২৬ সালে। এই যাত্রা যেন ভালোভাবে করতে পারি। ইতোমধ্যে আমরা পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছি। বাংলাদেশের এই অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা কেউ যেন বন্ধ করতে না পারে সেটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য।’
সশস্ত্র বাহিনীকে সব সময় প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ চাই না। আমরা শান্তিতে বাস করতে চাই। কিন্তু আমার দেশকে বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য যেন যথাযথ প্রস্তুতি আমাদের থাকে সেটা সবসময় মনে রাখতে হবে।
‘দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী কাজ করবে।’
সশস্ত্র বাহিনীকে শক্তিশালী করতে আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শান্তিতে সমরে সব জায়গায় আমাদের সশস্ত্র বাহিনী সদা সচেষ্ট এবং শক্তিশালী। সেভাবেই শক্তিশালী হিসেবে আমরা গড়ে তুলছি।’
সশস্ত্র বাহিনীর প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘প্রাকৃতিক বা যেকোনো দুর্যোগ দেখা দিলে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর মানুষের পাশে দাঁড়ায়।’