হবিগঞ্জের মাধবপুরে শিক্ষকের ছোড়া বেতের আঘাতে মেহেদী হাসান নামের এক শিক্ষার্থীর চোখ নষ্ট করার ঘটনায় শিশুটির পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে চোখ নষ্টের ঘটনায় ক্ষতিপূরণ নির্ণয়ের জন্য একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এ সংক্রান্ত এক আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ফারুক আলমগীর চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুজ্জামান।
আইনজীবী ফারুক আলমগীর চৌধুরী বলেন, ‘বেতের আঘাতে চোখ হারানোকে শিশুটিকে প্রত্যাশিত বা পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে এ ঘটনায় ক্ষতিপূরণ নির্ণয়ের জন্য একটি কমিটি গঠন করতে বিবাদীদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।’
শিক্ষিকার বেতের আঘাতে শিশুর নষ্ট হওয়ার ঘটনায় তিন কোটি ক্ষতিপূরণ চেয়ে গত ১২ নভেম্বর হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন শিশুটির বাবা মোতালেব।
রিটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ ৯ জনকে বিবাদী করা হয়। ‘বেতের আঘাতে চোখ নষ্ট নিয়ে জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন রিটে প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, হবিগঞ্জের মাধবপুরে শিক্ষিকার ছোড়া বেতের আঘাতে মেহেদী হাসান নামের এক শিশুশিক্ষার্থীর এক চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। অন্য চোখটিও নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ চোখটি নষ্ট হলে পুরোপরি অন্ধ হয়ে যাবে মেহেদী।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত ও তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে। ঘটনার পর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককেও স্থায়ীভাবে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে।
গত ১৬ আগস্ট উপজেলার বানিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোর্শেদা আক্তার প্রাক-প্রাথমিকের ছাত্র মেহেদী হাসানের দিকে একটি বেত ছুড়ে মারেন। এতে চার বছর বয়সী ওই শিশুর ডান চোখ আঘাতপ্রাপ্ত হয়। তাকে দ্রুত ঢাকার আগারগাঁও জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয় হয়।
পরদিন তার চোখে অপারেশন করেন চিকিৎসকরা, কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। চোখটি একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। এখন অন্য চোখটিও নষ্ট হওয়ার উপক্রম।