বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিরোধীদের হরতাল শুরু আজ, রাতে ঢাকায় ৩ বাসে আগুন

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ১৯ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০১

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে রোববার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত দেশব্যাপী এই হরতালের ডাক দিয়েছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলগুলো।

পাঁচ দফা অবরোধের পর বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলগুলোর ডাকা দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার হরতাল শুরু হচ্ছে রোববার সকাল ৬টায়। মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত তারা এই কর্মসূচি পালন করবে।

এদিকে হরতালের আগের রাতে রাজধানীতে তিনটি বাসে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তিনিট ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে।

গত সপ্তাহে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে হরতালের ডাক দিয়েছে বিরোধীরা।

নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ গ্রেপ্তার সব নেতা-কর্মীর মুক্তির দাবিতে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

শনিবার এক ভাচুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলের বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সর্বস্তরের জনগণ ও বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের হরতাল সফল করার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘জনগণের হারানো সব অধিকার পুনরুদ্ধার এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এই হরতাল। সরকারের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর জন্যও এই হরতাল।’

হরতাল কার্যকর করতে বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের সাহসের সঙ্গে রাজপথে নামার আহ্বান জানান রিজভী।

তিনি একটি বিশ্বাসযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে সরকারের পদত্যাগ এবং নির্বাচনের তফসিল বাতিলের আহ্বান জানান।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি

এর আগে আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য চাপ দিতে বুধবার সকাল ৬টা থেকে ৪৮ ঘণ্টার সড়ক-রেল-নৌপথ অবরোধ করে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলগুলো। এটি ছিল বিরোধী দলগুলোর অবরোধ কর্মসূচির পঞ্চম পর্যায়।

নয়াপল্টনে বিএনপি আয়োজিত মহাসমাবেশে হামলার প্রতিবাদে ২৯ অক্টোবর দেশব্যাপী সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হরতাল পালন করে বিরোধীরা।

২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির বহুল আলোচিত মহাসমাবেশ শুরুর দেড় ঘণ্টা পর কাকরাইলে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী ও পুলিশের সংঘর্ষ হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই নয়াপল্টনে সহিংস সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে সমাবেশ মাঝপথে পণ্ড হয়ে যায়।

তফসিলের প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোট (এলডিএ) সকাল ৬টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত অর্ধদিবস হরতাল এবং গণতন্ত্র মঞ্চ সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হরতাল পালন করে। ইসলামী দলগুলোর একটি উদীয়মান জোটও ইসির তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছে।

রাজধানীতে ৩ বাসে আগুন

রাজধানী কাফরুলের তালতলা, গুলিস্তান ও যাত্রাবাড়ীতে তিনটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপির নেতৃত্বে বিরোধী দলগুলোর ডাকা ৪৮ ঘণ্টার হরতালের আগের দিন শনিবার এ তিনটি ঘটনা ঘটেছে।

সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে কাফরুলে বিহঙ্গ পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। অপর ঘটনায় রাত ৭টা ৪০ মিনিটে গুলিস্তানে কমল পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয়া হয়।

ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার এরশাদ হোসেন বলেন, ‘সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে তালতলায় বিহঙ্গ পরিবহনের একটি বাসে আগুন লাগার খবর পাই আমরা। তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই আগুন নিভে যায়।’

অন্যদিকে গুলিস্তানে বাসে আগুনের বিষয়টি নিশ্চিত করে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম বলেন, ‘আজ (শনিবার) রাত ৭টা ৪০ মিনিটে আগুনের সংবাদ আসে ফায়ার সার্ভিসের কাছে। খবর পেয়ে দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।’

এছাড়া রাত ৮টার দিকে যাত্রাবাড়ী মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে আরেকটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

এদিকে কাফরুল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাসানুর রহমান জানান, আগারগাঁওয়ে বাসে আগুন দেয়ার সময় হাতেনাতে এক কিশোরকে আটক করা হয়েছে। বাসের কোনো যাত্রী ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে বাসে আগুন দেয়ার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

ঢাবি ক্যাম্পাসে ককটেল আতঙ্ক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায় ফের ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কাউকে আটক বা কারও পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বর এলাকায় পরপর তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে নয়টার দিকে মোটরসাইকেলযোগে একদল যুবক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বর মোড় এলাকায় এসে পরপর তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। বিস্ফোরণের জোরালো শব্দে এ সময় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

এ ঘটনার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন হল থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হতে দেখা যায়। পরে বিভিন্ন হল থেকে মিছিল নিয়ে সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা বিস্ফোরণস্থলে এসে মহড়া দিতে থাকেন। এরপর সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এসে উপস্থিত হন।

এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ওসি নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘জড়িতদের ধরতে অভিযান শুরু হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে খুব দ্রুতই অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারব বলে আশা করছি।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ক্যম্পাসে এ ধরনের ঘটনা বেশ কয়েকবার ঘটেছে। এখন থেকে ক্যাম্পাস এলাকায় সব মোটরসাইকেলকে নিরাপত্তা তল্লাশির আওতায় নিয়ে আসার চিন্তা-ভাবনা চলছে।’

গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসি এলাকায়ও তিনটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়েছিল। সে ঘটনায় ঢাবি ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা সন্দেহভাজন তিন ব্যাক্তিকে মারধরের পর পুলিশে দেন।

এ বিভাগের আরো খবর