ময়মনসিংহ নগরীতে আব্দুর রাজ্জাক রাকিব নামের যুবক হত্যা মামলায় আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
জেলার ত্রিশালের উজানভাটিপাড়া এলাকা থেকে শুক্রবার ভোরে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার দুইজন হলেন নগরীর পুরোহিত পাড়া এলাকার মো. প্রান্ত ও সেহড়া ডিবি রোড এলাকার রাহাত।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে সাভারের আমিনবাজার থেকে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তারা হলেন মামলার প্রধান আসামি ৩৫ বছর বয়সী ইয়াসিন আরাফাত শাওন, তার ভাই ৩৭ বছর বয়সী মাসুদ পারভেজ, ৩৮ বছর বয়সী আনিছুর রহমান ফারুক, ৩২ বছর বয়সী মো. মানিক, ৩০ বছর বয়সী মো. মবিন ও ২০ বছর বয়সী শান্ত।
ময়মনসিংহ র্যাব-১৪ সদর দপ্তরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘রাকিবকে হত্যার পর আসামিরা দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে চলে যায়। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ওই দুইজনের পালিয়ে থাকার অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদেরকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।’
ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি ফারুক হোসেন বলেন, ‘মামলার প্রধান আসামি ইয়াসিন আরাফাত শাওন ও তার ভাইসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছি। শুক্রবার তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে। অন্য আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
তিনি জানান, গত শনিবার সন্ধ্যায় যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইয়াসিন আরাফাত শাওন ও তার কর্মীরা ফুলপুরে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষে হায়েস গাড়ি দিয়ে ময়মনসিংহ শহরের ফিরছিলেন। পথে নগরীর চায়না মোড়ের টুলবক্স এলাকা পর্যন্ত আসতেই একটি ট্রাকের পেছনে আটকা পড়ে হায়েস। ওই ট্রাকটি সাইড না দেয়ায় ওভারটেকের সময় হায়েস ঘষা লাগে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গাড়িতে থাকা ট্রাকচালকের সঙ্গে তর্কে জড়ান শাওন ও তার কর্মীরা। একপর্যায়ে ট্রাকচালককে মারধর শুরু করেন।
ওই সময় স্থানীয় বাসচালকসহ অন্যরা তাদের থামাতে গেলে ক্ষিপ্ত হয়ে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান তারা। এতে আব্দুর রাজ্জাক রাকিব, সাদেক আলী, শহিদ মিয়া নামে তিনজন রক্তাক্ত জখম হন। এ অবস্থায় আশপাশের লোকজন তাদের ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক আব্দুর রাজ্জাক রাকিবকে মৃত বলে জানান।
আহত দুজন হলেন সাদেক আলী ও শহিদ মিয়া। তারা বাসচালক ও হেলপার।
রাকিব হত্যার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে রাতেই স্থানীয়রা চায়না মোড়ে সড়ক অবরোধ করে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। পরে রাত ১১টার দিকে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ঘটনায় পরদিন নিহতের মা হাসি বেগম মহানগর যুবলীগের বহিষ্কৃত সদস্য শাওনসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন।