বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সিলেট-১ আসনে এবার মোমেনের প্রতিদ্বন্দ্বী কে

  •    
  • ১৭ নভেম্বর, ২০২৩ ১১:০২

বিভিন্ন দল থেকে এবার কারা হচ্ছেন সিলেট-১ আসনের প্রার্থী? এ নিয়ে শুরু হয়েছে বিভিন্ন জল্পনা-কল্পনা। অনেকদিন ধরেই রাজনৈতিক মাঠে এমন আলোচনা থাকলেও বুধকার তফসিল ঘোষণার পর থেকে তা আরও জোরালো হয়েছে।

রাজনীতির প্রাঙ্গণে একটি কথা প্রচলিত রয়েছে, সিলেট-১ আসনে যে দল জয়লাভ তারাই সরকার গঠন করে। স্বাধীনতার পর থেকেই ঘটে আসছে এমনটি। ফলে ‘সিলেট-১ যার, সরকার তার’- এটি আর কথার কথা থাকেনি। রীতিমত কিংবদন্তিতে পরিণত হয়েছে। ধর্মীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা আর সিলেট থেকেই সব রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রচার শুরুর রেওয়াজ এই কিংবদন্তিতে আরও রসদ জুগিয়েছে।

তাই সিলেট-১ আসনে জয়ের আলাদা লক্ষ্য থাকে সব দলের। এই আসনে হেভিওয়েট নেতাদের মনোনয়ন প্রদান করে সবগুলো দল। নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে এখানকার সংসদ সদস্যরা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও পালন করেন। এবার তার ব্যতিক্রম না হওয়ারই কথা।

সিলেট-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে আবুল মোমেন। গত নির্বাচনে প্রথমবারের মতো প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত হন তিনি। এর আগে এই আসনে টানা দুইবারের সংসদ সদস্য ছিলেন মোমেনের অগ্রজ, সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত আবুল মাল আবদুল মুহিত। বিএনপি সরকারের অর্থমন্ত্রী এম. সাইফুর রহমান আর আওয়ামী লীগদলীয় সাবেক স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীও সিলেট-১ এর সংসদ সদস্য ছিলেন।

এবার কারা হচ্ছেন সিলেট-১ আসনের প্রার্থী? এ নিয়ে শুরু হয়েছে বিভিন্ন জল্পনা-কল্পনা। অনেকদিন ধরেই রাজনৈতিক মাঠে এমন আলোচনা থাকলেও বুধকার তফসিল ঘোষণার পর থেকে তা আরও জোরালো হয়েছে।

আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, এবারও এই আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ড. একে আবদুল মোমেনের মনোনয়ন পাওয়া অনেকটা নিশ্চিত। তবে ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুরের কথাও বলছেন কেউ কেউ।

আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মনসুর ১/১১ এর পর দলে অবস্থান হারান। এরপর ২০১৮ সালে ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে প্রার্থী হয়ে নির্বাচিতও হন মনসুর। তবে ২ সেপ্টেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পাশে সুলতান মনসুরের উপস্থিতির পর থেকে সিলেটে তার প্রার্থিতা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তবে আবুল মোমেন ছাড়া এ আসনে এখন পর্যন্ত আর কারো তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি। নগরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে নিজের মেয়াদকালের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরে বিলমোর্ড টানিয়েছেন মোমেন।

এ প্রসঙ্গে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘কোথায় কে প্রার্থী হবেন তা দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাই চূড়ান্ত করবেন। দল যাকে মনোনয়ন দেবে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে তাকে বিজয়ী করে আনবো।’

তিনি বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আবুল মোমেন গত পাঁচ বছরে সিলেটের ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। তার ব্যাপারে সিলেট আওয়ামী লীগের সবাই ঐক্যবদ্ধ। তাই আমরা আশা করছি এবারও তিনি দলীয় মনোনয়ন পাবেন।

বুধবার নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল প্রত্যাখান করেছে বিএনপি। এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ না নেয়ারও ঘোষণা দিয়েছে দলটি। তবে শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে আসলে তাদের প্রার্থী কে হবেন এ নিয়ে চলছে আলোচনা।

নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী এম. সাইফুর রহমান। তবে দশম সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি। আর ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে এ আসনে বিএনপির প্রার্থী হন দলটির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির।

বিএনপি নির্বাচনে এলে এবারও এই আসনে খন্দকার আবদুল মুক্তাদির প্রার্থী হতে পারেন বলে আলোচনা রয়েছে। গত পাঁচ বছরে সিলেট বিএনপিতে অনেকটা একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছেন মুক্তাদির। এছাড়া সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীও এ আসনে প্রার্থী হতে পারেন বলে দলীয় ফোরামে আলোচনা চলছে। দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে গত সিটি নির্বাচনে প্রার্থী হননি আরিফুল হক চৌধুরী। এই ‘ত্যাগের’ জন্য সিটি নির্বাচনের পরপরই তাকে কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য পদ থেকে পদন্নোতি দিয়ে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা করা হয়। এছাড়া নগরে তার জনপ্রিয়তাও রয়েছে।

তবে বিএনপি এখন নির্বাচনের বিষয়ে ভাবছে জানিয়ে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির বলেন, ‘দেশে এখন নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। ফলে নির্বাচন সংক্রান্ত চিন্তা কোনোভাবনাই এখন আমাদের নেই। আমাদের এখন একটাই লক্ষ্য জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়া আনা। সেজন্য এই সরকারকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে। আমরা সে লক্ষ্যেই আন্দোলন করছি। এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না।’

একই ধরণের মন্তব্য করেছেন সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘কে কোথায় প্রার্থী হবেন সেটা পরের আলোচনা। আগে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। তত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। এরপর নির্বাচন নিয়ে আলাপ হবে।’

গত নির্বাচনে এ আসনে প্রার্থী হয়েছিলেন বাসদের জেলা সমন্বয়ক উজ্জ্বল রায়। তবে বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেয়া হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই সরকারের আমলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে অন্তবর্তকালীন সরকার গঠন করতে হবে।’

এছাড়া নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন হারানো জামায়াত ইসলামী এ আসনে আলাদা প্রার্থী দিতে পারে। এক্ষেত্রে নাগরিক কমিটির ব্যানারে প্রার্থী হতে পারেন সিলেট মহানগরের আমীর এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।

সিলেট মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘সিলেটের ছয়টি আসনের মধ্যে চারটিতে জামায়াতের প্রার্থী তালিকা করা হয়েছে। নির্বাচনী বাধা কাটিয়ে উঠতে পারলে দলীয় প্রার্থী দেয়া হবে।’

ফখরুল বলেন, ‘২০১৮ সালে সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা এহসানুল মাহবুব জুবায়ের সিলেট-১ আসনে প্রার্থী হবেন। দলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আলোকে প্রার্থি অদলবদল হতে পারে।’

সিলেট মহানগর ও সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-১ আসনে ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী একে আবদুল মোমেন ২ লাখ ৯৮ হাজার ৬৯৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। আর তার নিকটতম বিএনপির আবদুল মুক্তাদির পান ১ লাখ ২৩ হাজার ৮৫১ ভোট। এর আগে ২০১৩ সালে বিএনপিবিহীন নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন আবুল মাল আবদুল মুহিত।

এ বিভাগের আরো খবর