আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একটি আন্তর্জাতিক মহল ‘অযাচিত হস্তক্ষেপ’ করছে অভিযোগ করে সে বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের পাঁচ শতাধিক শিক্ষক।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল নির্বাচন ভবনে বুধবার সন্ধ্যায় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার এক দিন পর বৃহস্পতিবার জাবির শিক্ষকরা এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
এর আগে নিঃশর্ত সংলাপ চেয়ে দেশের তিন রাজনৈতিক দলকে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর দেয়া চিঠিকে শিষ্টাচারবহির্ভূত এবং অযাচিত হস্তক্ষেপ দাবি করে এ ঘটনায় বুধবার উদ্বেগ জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ৮২৫ শিক্ষক। তারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্রের নামে আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইরাক, লিবিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে। এবার অর্থনৈতিকভাবে ক্রমাগ্রসরমান বাংলাদেশ রাষ্ট্রের উন্নয়নের ধারাকে পশ্চাৎমুখী করার মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির অপতৎপরতায় রসদ জোগাচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ জাবির সদস্য সচিব অধ্যাপক বশির আহমেদ স্বাক্ষরিত বার্তায় বলা হয়, “নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। আগামী ৭ জানুয়ারি, ২০২৪ তারিখে ৩০০ আসনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তফসিল ঘোষণায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক করার সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ এবং সকল উদ্বেগ, উৎকণ্টা ও অস্বস্তি পরাভূত করে নির্ভয়ে আনন্দমুখর পরিবেশে ভোটকেন্দ্রে এসে অবাধে মূল্যবান ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে অনুরোধ করেছেন। আমরা ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’, জাহাঙ্গীর, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনি তফসিলকে স্বাগত জানাই, কিন্তু আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি চলমান অবস্থায় তফসিল ঘোষণার প্রাক্কালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত সব ধরনের শিষ্টাচার লঙ্ঘন করে সে দেশের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বাংলাদেশের তিনটি রাজনৈতিক দলকে নিঃশর্ত সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে চিঠি বিতরণ করেছে বলে জাতীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।
“ইতোমধ্যে আসন্ন নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক করার সব ধরনের উদ্যোগ নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে, সেই সময়ে এই ধরনের চিঠি বিতরণ এবং হস্তক্ষেপ শিষ্টাচার-বহির্ভূত।”
জাবি শিক্ষকরা আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ মনে করে একটি সার্বভৌম দেশের নাগরিক হিসেবে এ দেশের জনগণের নিজস্ব স্বাধীনতা, গণতন্ত্র এবং স্বাধীনভাবে নিজের ভোট দেয়ার অধিকার রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের এ ধরনের পদক্ষেপ এ দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি এবং দেশের মান-মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করেছে বলে আমরা মনে করি।
‘উক্ত ঘটনায় আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। সেই সাথে স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্রের প্রতি সম্মান জানিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন ও সরকারের প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নিতে সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি।’