বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগ

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ১৫ নভেম্বর, ২০২৩ ১৭:৩৪

জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘ন্যায্য মজুরির দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভে দমন-পীড়ন চালানো হয়েছে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে রাজনৈতিক কর্মীদের আন্দোলনেও চলছে দমন-পীড়ন। একইসঙ্গে সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী ও নাগরিক সমাজের নেতাদের বিচারিক হয়রানি করা হচ্ছে। এমনকি বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দমনকারী আইন সংস্কারে ব্যর্থতা গুরুতর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি ঘটছে উল্লেখ করে এ ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল (এইচআরসি)। সংস্থাটির মেয়াদি পর্যালোচনায় এই উদ্বেগের বিষয়টি উঠে এসেছে। এ ছাড়া পরিস্থিতি মোকাবিলায় মানবাধিকার কাউন্সিলের পর্যালোচনাকে গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন সংস্থাটির বিশেষজ্ঞরা।

মঙ্গলবার বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে এইচআরসির ওয়েবসাইটে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।

তাতে বলা হয়েছে, ন্যায্য মজুরির দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভে দমন-পীড়ন চালানো হয়েছে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে রাজনৈতিক কর্মীদের আন্দোলনেও চলছে দমন-পীড়ন। একইসঙ্গে সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী ও নাগরিক সমাজের নেতাদের বিচারিক হয়রানি করা হচ্ছে। এমনকি বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দমনকারী আইন সংস্কারে ব্যর্থতা গুরুতর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ যখন ২০২৪ সালের শুরুতে জাতীয় নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন রাজনৈতিক সহিংসতার তীব্র বৃদ্ধি, বিরোধী দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের গ্রেপ্তার, হাজার হাজার রাজনৈতিক কর্মীকে নির্বিচারে আটক করার মতো ঘটনার কারণে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

‘এ ছাড়া বিক্ষোভ-আন্দোলন দমাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শক্তি প্রয়োগ, ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেয়া, রাজনৈতিক কর্মীর পরিবারের সদস্যদের হয়রানি, ভয় দেখানো এবং বেআইনিভাবে আটক রাখার অভিযোগ সামনে এসেছে। এসব নিয়ে মানবাধিকার বিশেষজ্ঞদের যথেষ্ট উদ্বেগ রয়েছে।’

বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হুমকিতে পড়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যম ও সংবাদকর্মীদের ওপর হামলা, নজরদারি, ভয় দেখানো এবং বিচারিক হয়রানির কারণে এ খাতে ব্যাপক সেল্ফ সেন্সরশিপ ছড়িয়ে পড়েছে।

সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী ও নাগরিক সমাজের নেতাদের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে দাবি করে উদ্বেগ জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের দৃষ্টিতে, এমন ঘটনা বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে খর্ব করে। সেসঙ্গে মৌলিক মানবাধিকারকে ক্ষুণ্ন করে।

দেশে বিচারিক হয়রানির উদাহরণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা অনুসন্ধানী সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মামলার কথা তুলে ধরেছেন বিজ্ঞপিতে। দুই বছর ধরে তদন্ত পরিচালনা, বারবার শুনানি এবং দেশের বাইরে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় তার কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরপরও কৌঁসুলিরা রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেননি।

এ ছাড়া নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস, মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের আদিলুর রহমান খান, অধিকারের পরিচালক নাসিরউদ্দিন এলানসহ বিভিন্ন ব্যক্তি হয়রানির শিকার হয়েছেন। তাদের বারবার আদালতে যেতে হয়েছে; সাজা হয়েছে। এখনও আইনি লড়াই চালিয়ে যেতে হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যখন নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মতো নাগরিক সমাজের নেতা বা আদিলুর রহমান খান বা নাসিরুদ্দিন এলানের মতো মানবাধিকারকর্মীদের অভিযুক্ত বা দোষী সাব্যস্ত করা হয়, তখন এটি সকল সাংবাদিক এবং মানবাধিকার কর্মীদের কাছে একটি বার্তা পাঠায়। আর তা হচ্ছে- ব্যক্তি যতই বিশিষ্ট হোক না কেন, ভিন্নমত বা সমালোচনার কারণে শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে।

মতপ্রকাশের অধিকার খর্ব করার সঙ্গে সম্পৃক্ত পাঁচ হাজার ৬০০টির বেশি মামলা এখনও চলমান। এটা সরকারের হিসাব। আলোচিত-সমালোচিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা এসব মামলায় প্রখ্যাত অনেক সাংবাদিক-সম্পাদককে আসামি করা হয়েছে। নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়েও উদ্বেগ রয়ে গেছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সরকার এসব আইনের তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সেই উদ্যোগকে স্বাগত জানানো হয়েছিল। তবে নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইনে সামান্যই সংস্কার হয়েছে।

মানবাধিকার পরিস্থিতির ক্রমাবনতি-সংক্রান্ত এসব উদ্বেগের বিষয়ে তারা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে এইচআরসি।

এ বিভাগের আরো খবর