বিএনপির ডাকা অবরোধের সমর্থনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কার্জন হলের গেইটে তালা লাগাতে এসে ছাত্রলীগের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন ছাত্রদলের দুই নেতা।
বুধবার সকালে শুরু হতে যাওয়া অবরোধের কয়েক ঘণ্টা আগে মঙ্গলবার মধ্যরাতে এই ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার দুজন হলেন ড. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ হল শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইমাম আল নাসের মিশুক ও অমর একুশে হল শাখা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জসিম খান।
এদিকে পিটুনির পর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের হাতে তুলে দিলে প্রক্টরিয়াল টিম ছাত্রদল নেতাদের শাহবাগ থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করে। ওই দুই নেতার একজনের হাঁটু ফেটে রক্ত পড়তে দেখা গেছে।
মারধরের শিকার ছাত্রদলের এক নেতা বলেন, অবরোধের অংশ হিসেবে এখানে আমাদের কর্মসূচি পালন করছিলাম। এ সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আমাদের ধরে মারধর করে। আমাদের একজনের পা, আরেকজনের মুখ থেঁতলে দেয়। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারধর করে। আমাদের কাছ তালা ছাড়া আর কোনো কিছু ছিল না। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আমাদের মোবাইল, মানিব্যাগ কেড়ে নেয়।
মারধরের বিষয়ে অমর একুশে হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জুনায়েদ ইসলাম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি, নাশকতা সৃষ্টি ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের উদ্দেশে তারেক জিয়ার পোস্টার লাগাতে এসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হাতে ছাত্রদলের দুজন নেতা মারধরের শিকার হয়েছেন। সাধারণ শিক্ষার্থীরা স্বতস্ফূর্তভাবে ছাত্রদল নেতাদের এই দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র ও নাশকতাকে প্রতিরোধ করে তাদের থানায় পুলিশের কাছে তুলে দেয়।
মারধরের শিকার অমর একুশে হল শাখা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জসিম খানের ফেসবুক আইডি থেকে একই সময়ে দেয়া একটি স্ট্যাটাস ছড়িয়ে পড়ে। সেই স্ট্যাটাসে লেখা হয়েছে, তারেক রহমান ও বিএনপির হাই কমান্ডের নির্দেশে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গেটে তালা দিয়েছি এবং শহরের বিভিন্ন জায়গায় অগ্নি সংযোগ করেছি। আমি আর জীবদ্দশায় কখনো এ ধরনের কাজ করবো না। নেতা লন্ডনে থেকে আমাদেরকে বিপদের মুখে ফেলছে। এটা আমি দেরিতে হলেও অনুধাবন করেছি।
তবে এই স্ট্যাটাস জসিম খান দেননি দাবি করে ছাত্রদলের নেতারা বলেন, ছাত্রলীগের ছিনতাইকারীরা জসীম ভাইয়ের ফোন ছিনতাই করে তার ফেসবুকে ঢুকে এমন পোস্ট করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের এক সদস্য বলেন, আমাদেরকে সহকারী প্রক্টর পলাশ স্যার (ড. এম এল পলাশ) ফোন দিয়ে কার্জন হলের গেইটে যেতে বলেন। আমরা গিয়ে দেখি এই দুইজন (ছাত্রদল নেতা) সিকিউরিটি বক্সে বসে আছেন। এ সময় তাদেরকে দুটি মোবাইল এবং একটি মোটরসাইকেলসহ শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
মারধরের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাসে সন্ত্রাস করতে এলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেয়।