বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রধানমন্ত্রীকে লেখা টার্কের চিঠির তথ্য যাচাইকৃত নয়: বাংলাদেশ

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ১৪ নভেম্বর, ২০২৩ ২০:৪৪

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এক চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধানের চিঠিটি পূর্ণাঙ্গ তথ্য ও তথ্য প্রকাশের অপেক্ষা না করে তাড়াহুড়ো করে এবং প্রতিফলনের জন্য পর্যাপ্ত সময় না দিয়ে লেখা হয়েছে।’

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টার্কের পক্ষ থেকে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা চিঠি ও প্রেস নোটের বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।

এ বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দেয়া জবাবে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে উল্লেখ করা তথ্য ‘যাচাইকৃত নয়’। একইসঙ্গে জাতিসংঘের মানবাধিকার ব্যবস্থা গুজব, অযাচাইকৃত তথ্য দ্বারা প্রভাবিত হওয়া এড়াবে বলে প্রত্যাশা করা হয়েছে।

ভলকার টার্কের কাছে ১০ নভেম্বর পাঠানো বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়, ‘আমরা আশা করি, গুজব ও যাচাই না করা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রভাবিত হওয়ার ঝুঁকি এড়াতে মানবাধিকার ব্যবস্থা সম্পূর্ণ তথ্য ছাড়াই সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর আগে নিজেদের পর্যাপ্ত সময় দেবে।’

বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়, জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধানকে লেখা বাংলাদেশের চিঠির কপি তাদের হাতে এসেছে।

চিঠিতে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধানের চিঠিটি পূর্ণাঙ্গ তথ্য ও তথ্য প্রকাশের অপেক্ষা না করে তাড়াহুড়ো করে এবং প্রতিফলনের জন্য পর্যাপ্ত সময় না দিয়ে লেখা হয়েছে।

‘বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা না করে এবং নিরপেক্ষ উৎস থেকে নেয়া ভয়াবহ ছবি ও ভিডিও ফুটেজসহ দেশের দেয়া তথ্য-উপাত্ত বিবেচনা না করে একই ইস্যুতে টার্কের কার্যালয় থেকে তড়িঘড়ি করে একটি প্রেস নোট প্রকাশ করা হয়েছে।’

বাংলাদেশ পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘সংবিধান থেকে উদ্ভূত বাধ্যবাধকতার আলোকে সরকার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সহ সব রাজনৈতিক দলকে সমাবেশ, বিক্ষোভ, মিছিল ইত্যাদি আয়োজনের অনুমতি ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করছে।

‘এই চেতনায় সরকার ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর ঢাকার রাজপথে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ডাকা গণসমাবেশের অনুমতি দেয়, যদিও একটি প্রধান বিরোধী দল বিএনপির ঘোষিত উদ্দেশ্য ছিল অরাজকতা সৃষ্টি করা এবং ঢাকাকে বাংলাদেশের অন্যান্য অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করা।’

বাংলাদেশের জবাবে বলা হয়, ‘গত ২৮-২৯ অক্টোবর সমাবেশ ও হরতাল চলাকালে বিএনপির উচ্ছৃঙ্খল নেতাকর্মীরা অরাজনৈতিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, থানা, সিসিটিভি ক্যামেরা, বিচার বিভাগ, গণমাধ্যমকর্মী, নিরীহ বেসামরিক নাগরিক, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ও সরকারি সম্পত্তিতে নির্বিচারে সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ এবং অন্যান্য ধরনের সহিংস কর্মকাণ্ডের আশ্রয় নেয়।’

এতে বলা হয়, ‘পুলিশের এক সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শতাধিক পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। একজন বাস কর্মীকে জীবন্ত পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্টের অন্যান্য বিচারপতির বাসভবনে হামলা চালানো হয়েছে।’

চিঠিতে বলা হয়, ‘পরদিন বিএনপি যখন সারা বাংলাদেশে অগ্নিসংযোগ ও সন্ত্রাসের প্রচার চালায় তখন আরও কয়েকজন নিহত হয়।’

জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধানকে দেয়া বাংলাদেশের জবাবে আরও বলা হয়, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, বিএনপি দায়িত্বরত গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। টিভি ক্যামেরা কেড়ে নেয়া হয় এবং কমপক্ষে ২৫ জন সাংবাদিকের ওপর হামলা চালানো হয়, যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) বিএনপি কর্মীদের এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।

‘গণমাধ্যমের ওপর বিএনপির হামলার নিরপেক্ষ মূল্যায়ন করা উচিত, যা মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করছে।’

চিঠিতে বাংলাদেশ বলেছে, ‘আমি আপনাকে আশ্বস্ত করতে চাই যে আমাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো (এলইএ) ন্যূনতম এবং সর্বোত্তম শক্তি প্রয়োগের জন্য ভালভাবে প্রশিক্ষিত। কারণ তারা সম্পত্তি বা জীবন ধ্বংস রোধ করতে চায়। পুলিশের একজন সদস্যকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা সত্ত্বেও যুক্তিসঙ্গত ও সংযত থাকার জন্য আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রশংসার দাবিদার।

‘গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার হিসেবে বর্তমান সরকার আইনের শাসন সমুন্নত রাখতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

চিঠিতে বলা হয়, ‘২৮ অক্টোবরের ঘটনার পর প্রতিটি গ্রেপ্তার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে করা হয়েছিল। নির্বিচারে কোনো গ্রেপ্তার বা আটক করা হয়নি এবং আমরা তাদের অভ্যন্তরীণ আইন অনুযায়ী সম্পূর্ণ আইনি আশ্রয়ের নিশ্চয়তা দিচ্ছি।’

টার্কের চিঠির জবাবে বাংলাদেশ আরও বলেছে, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দুর্নীতির অভিযোগে দুটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন এবং আরও কয়েকটি মামলা চলমান- যার সবই ২০০৭-০৮ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দায়ের করা হয়েছিল।

‘তার শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে পরিবারের সদস্যদের আবেদনের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আইনগত বিধান অনুযায়ী তার সাজা স্থগিত করেন।’

জবাবে আরও বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে চিকিৎসা নেয়া এবং দেশত্যাগ না করার শর্তে খালেদা জিয়াকে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেয়া হয়েছে। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ যে শর্তে তাকে মুক্তি দেয়া হয়েছিল তা তিনি মেনে নিয়েছিলেন এবং তার মুক্তির মেয়াদ বেশ কয়েকবার বাড়ানো হয়েছে।’

‘তিনি তার পছন্দ অনুযায়ী বাংলাদেশের অন্যতম সেরা হাসপাতাল এভারকেয়ার হাসপাতালে সর্বোচ্চ মানের চিকিৎসা নিচ্ছেন।

‘সম্প্রতি তার চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আনার জন্য সরকারের কাছে অনুমতি চেয়েছিলেন তার পরিবারের সদস্য ও বিএনপি নেতারা। সরকার অনুমতি দিয়েছে।’

জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধানকে লেখা চিঠিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষায় জাতিসংঘের প্রক্রিয়ার সঙ্গে গঠনমূলক ও ধারাবাহিকভাবে সম্পৃক্ত। তাই আমরা আশা করি আমাদের অবিচল অঙ্গীকার সহযোগিতা ও আনুপাতিকতার চেতনায় প্রতিফলিত হবে।’

চিঠিতে সাম্প্রতিক ঘটনাবলী নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে টার্কের অফিসের সম্পৃক্ততার প্রশংসাও করা হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর