বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত বলেছেন, ‘বরিশাল সিটি করপোরেশনে প্রশাসনিক কাঠামো একেবারেই নেই, যেটা অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে আপনারা হতাশ ও নিরাশ হবেন না। ইনশাআল্লাহ আপনাদের সকলের সহযোগিতায় এ থেকে উত্তরণ ঘটবে। বরিশালবাসীর ওপরে ৩ শত কোটি টাকার ওপরে দায়-দেনা রয়েছে। আমি শুধুমাত্র বরিশাল সিটি করপোরেশনে ১২ কোটি টাকা পেয়েছি।’
নগর ভবনের সামনে মঙ্গলবার দুপুরে তৈরী অস্থায়ী মঞ্চে অনুষ্ঠিত অভিষেক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন মেয়র।
এ সময় তিনি আবারও বলেন, ‘হতাশ ও নিরাশ হওয়ার কোন কারণ নেই। এটা পুনঃগঠন করার কর্মকান্ড আমাদের অবশ্যই থাকবে। যাতে একটি সঠিক জবাবদিহির মধ্যে বরিশাল সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠা হয়। আমি বিশ্বাস করি বরিশালবাসী সে সহযোগিতা করবে, আর এখানে কোনো বৈষম্যমূলক কিংবা হিংসামূলক কিছু ঘটবে না। আর যারা সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ রয়েছেন, তাদের অনুরোধ করবো- আপনারা নতুনভাবে নিষ্ঠার সাথে কাজ করবেন, মানুষের সেবা প্রদান করবেন এবং আপনাদের দায়িত্বের কোনো অবহেলা করবেন না।’
মেয়র বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চেয়েছিলেন দেশকে সোনার বাংলা বানাতে, আর সেই লক্ষ্যে নিয়ে তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি একটি অনুন্নত দেশকে উন্নয়নশীল দেশে রুপান্তরিত করছে। আমারও ইচ্ছা এই বরিশাল নগরীকে একটি সুন্দর নগরী হিসেবে গড়ে তুলবো। কিন্তু সেটি করতে গেলে প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। খুনী এবং ষড়যন্ত্রকারীদের কবল থেকে দেশকে মুক্ত রাখতে হবে। দেশ থেকে জঙ্গীবাদ মুক্ত করতে হবে, সকল ধর্ম- বর্ণের মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি দুঃখের সঙ্গে উল্লেখ করতে চাই-মানানীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমগ্র বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে সামিল হলেও বরিশাল নগরী পশ্চাৎপদ। তবে বরিশালবাসীর দুঃখ-দুর্দশার কথা অনুধাবন করে আমি দায়িত্ব নেয়ার আগেই নেত্রী ৮শত কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। বরিশালবাসীর পক্ষ থেকে তাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করিছ।’
মেয়র বলেন, ‘বরিশালের মানুষ আমাকে যে ভালোবাসা দিয়েছে, যে দায়িত্ব দিয়েছে তা সঠিকভাবে পালন করবো ইনশাআল্লাহ। আমাকে সকলে সহযোগিতা করবেন। সকলের সহযোগিতায় আমি নতুন বরিশাল গড়তে চাই। আমি প্রতিহিংসায় বিশ্বাস করি না।’
বিভাগীয় কমিশনার শওকত আলীর সভাপতিত্বে অভিষেক অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমা আক্তার। বিশেষ অতিথি ছিলেন পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য শাহে আলম, বরিশাল-৪ আসনের সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথ, সংরক্ষিত সংসদ সদস্য রুবিনা মীরা, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হাফিজ মল্লিক, মেয়রের সহধর্মিনী লুনা আব্দুল্লাহ, বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার ইউনুস, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার সাইফুল ইসলাম, জেলার পুলিশ সুপার ওয়াহিদুল ইসলাম, র্যাব-৮ এর উপ-অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম।
অনুষ্ঠানে বরিশাল নগর ছাড়াও জেলা-উপজেলা থেকে দলীয় নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ, পেশাজীবি সংগঠনের নেতারা, সিটি করপোরেশন নতুন পরিষদের কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন। যাদের অংশগ্রহনে ফজলুল হক এভিনিউ কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়।