এক যুগ পর নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে দেখা গেলে সিটি কর্পোরেশনে। একই সঙ্গে মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর পাশাপাশি চেয়ারও বসেছেন। এমন দৃশ্য অনুষ্ঠানে থাকা প্রায় সবারই নজর কেড়েছে তবে এবারও তাদের সরাসরি কথা বলতে দেখা যায়নি অনুষ্ঠানের সময়।
মঙ্গলবার সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) ১০টি উন্নয়ন প্রকল্পসহ বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের ২২টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এ উপলক্ষ্যে নাসিকের নগর ভবনের অডিটরিয়ামে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের অয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে অতিথিদের চেয়ারের প্রথম সাড়িতে দেখা যায় সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে।
এছাড়া অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকাসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
নাসিকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন। এর আগে ছিল নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা। পরে ২০১১ সালের মে মাসে সিদ্ধিরগঞ্জ ও কদমরসুল পৌরসভাকে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার সঙ্গে অর্ন্তভুক্ত করে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন গঠন করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় এক যুগ হলেও নাসিকের নগর ভবনে আসেনি শামীম ওসমান এমপি। দীর্ঘ এই সময়ের মধ্যে এক মুহুর্তের জন্যও নগর ভবনে পা রাখেনি। মেয়র আইভীর সঙ্গে তার মতবিরোধ থাকার কারণেই তিনি এতো বছর নগর ভবনের আনেনি বলে মনে করেন অনেকেই।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠান উদ্ধোধন করবেন। তাই এখানে তাদের আসাটা সমোচিন। তবে বিগত সময় বহু অনুষ্ঠান হয়েছে কিন্তু শামীম ওসমান সেখানে আসেনি। এটাও হতে পারে সামনে নির্বাচন তাই এসেছেন তিনি।’
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ নিয়ে কোনো কথা বলেননি শামীম ওসমান এমপি। এমনকি এ নিয়ে কথা মেয়র আইভীও কোনো মন্তব্য করেননি।
এদিকে সিটি করপোরেশনের নগর ভবন, শেখ রাসেল পার্ক, পাইকপাড়া মিউচুয়াল ক্লাব, বাবুরাইল খাল, সিদ্ধিরগঞ্জ খাল, পাক পাঞ্জাতন সিটি জামে মসজিদ, আলী আহাম্মদ চুনকা সিটি পাঠাগার ও মিলনায়তন, কলরব কিন্ডারগার্টেন স্কুল, সিটি ওয়েলফেয়ার মাঠ ও শিশু পার্ক এবং সোনাকান্দা খেলার মাঠ উদ্ধোধন করায় আনন্দিত স্থানীয়রা। কয়েক বছর ধরে এ প্রকল্পগুলো উদ্ধোধনের অপেক্ষায় ছিলেন তারা।
এছাড়া ওই সময় নারায়ণগঞ্জের বন্দরের কর্নফুলী শিপ বিল্ডার্স লিমিটেডে নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়ের কার্যাদেশে ১৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে নব নিমির্ত ৬টি ফেরির উদ্ধোধন করা হয়। নদীবহুল বাংলাদেশের নদী দ্বারা বিচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় যাত্রী পারাপার ও অভ্যন্তরীন পরিবহন খাতসহ দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় ফেরীগুলো ভূমিকা রাখবে বলে জানান বিআইডাব্লিউটিসির চেয়ারম্যান এস এম ফেরদৌস আলম।
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ফেরিতে ২২২ যাত্রীসহ পরিবহন পারাপারের জন্য ৭০০ স্কয়ার মিটার যায়গা থাকবে যাতে ১৪টি ট্রাক একসঙ্গে নদীপথ পারি দিতে পারবে।’